ছিপ-বড়শির খেলা
মিল্লাত হোসেন সৈয়দ আব্দুল হাদী। তাঁর কণ্ঠের জাদুতে মুগ্ধ হয় না, এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। কিন্তু ছিপ-বড়শি হাতেও যে তিনি জাদু দেখান, সে কথা জানে কজনা। অবসর পেলেই শৌখিন মৎস্যশিকারি সৈয়দ আব্দুল হাদী ছুটে বেড়ান ঢাকা কিংবা আশপাশের কোনো জলাশয়ে।
জলাশয়ে ছিপ-বড়শি ফেলাতেই শৌখিন মৎস্যশিকারিদের যত আনন্দ। টোপ আর মাছের এই খেলা মেটায় কারও শখ অথবা নেশা। নগরে ছিপ-বড়শির চর্চা কিন্তু নতুন নয়। সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই চলে আসছে মাছ ধরার এই শৌখিনতা। তবে বিখ্যাত আর অখ্যাত ছিপ-বড়শিপ্রিয় সব মানুষ একই প্লাটফরমে এসেছেন ১৯৬৮ সালে। তখন গড়ে ওঠে বাংলাদেশ শৌখিন মৎস্য শিকার সমিতি।
বাংলাদেশ শৌখিন মৎস্য শিকার সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনেওয়াজ ভুঁইয়া জানান, ঢাকায় এখন ছিপ-বড়শি দিয়ে মাছ ধরার প্রধান জায়গা ধানমন্ডি লেক। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে অবশ্য মাছ ধরার প্রধান কেন্দ্র ছিল রমনা লেক। এখন রমনা লেক ছোট হয়ে গেছে। নেই কোনো মাছ। দূষণের কারণে এক দশক ধরে কোনো মাছ টিকতে পারছে না গুলশান, বারিধারা লেকেও। এখনকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ছিল আফিলুদ্দিন সরদারের দিঘি; ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও জাতীয় ঈদগাহে ছিল বড় পুকুর। এসব জলাশয়ে শৌখিন লোকেরা টিকিট কেটে ছিপ-বড়শি ফেলতেন।
বাংলাদেশ শৌখিন মৎস্য শিকার সমিতি এবং গুলশান শৌখিন মৎস্য শিকার সমবায় সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন গুণী সংগীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী। মাছ শিকারের জগতে তাঁর পদচারণার বয়স প্রায় চার দশক। তাই ভান্ডারে জমেছে মাছ শিকারের নানা স্মৃতি। এমনি একটি ঘটনা শোনা যাক গুণী এই সংগীতশিল্পীর বয়ানেই, ‘৭৯ বা ৮০ সালের ঘটনা। তখন অফিস ব্যাগে গুটানো থাকত ছিপ-বড়শি। অফিস থেকে বের হয়ে বিকেলে চলে যেতাম ধানমন্ডি লেকে। এখন লেকের যেখানে রুশ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিকেন্দ্রের অবস্থান, সেই বরাবর লেকের অপর পাড়ে ছিল সংগীতজ্ঞ সুধীন দাশের মাচা। তাঁর মাচায় বসেই আমি মাছ ধরতাম। একদিন বিশাল একটি মাছ ধরা পড়ল আমার বড়শিতে। কিন্তু সুতা টেনে বড়শিতে গাঁথা মাছ টেনে আনা যাচ্ছিল না, লোক ডাকতে হলো। নৌকা দিয়ে দেড় ঘণ্টা পেছনে পেছনে ছুটে বড়শির মাছটি ধরা হলো। ওই মাছ নিয়ে সোজা চলে গেলাম বাংলামোটরে তখনকার কণ্ঠশিল্পী সমিতির কার্যালয়ে। সমিতির ২৮ জন সদস্যকে ভাগ করে দিলাম ৩৫ কেজি ওজনের সেই কাতলা মাছ।’ খাওয়া নয়, মাছ বিলিয়ে দিতেই বেশি আনন্দ পান শৌখিন মৎস্যশিকারিরা। বিষয়টি বোঝা যায়, সৈয়দ আব্দুল হাদীর স্মৃতিচারণায়।
নগরে মাছ ধরার জায়গা কমলেও বাড়ছে মৎস্যশিকারির সংখ্যা। প্রায় আট হাজার শৌখিন শিকারি চষে বেড়ান ধানমন্ডি লেক ছাড়াও ঢাকা চিড়িয়াখানা, জাতীয় সংসদ ভবন লেক, বংশাল পুকুর, নবাববাড়ির গোলতালাবসহ নগরের ছোট-বড় জলাশয়ে। আবার অবসর পেলেই ছিপ-বড়শি নিয়ে অনেকে মাছ ধরতে ছুটে যান ঢাকার কাছে সাভার, ধামরাই, মৌচাক, ফতুল্লা, ভুলতা ও মাওয়ায়। আবার বছরে একবার-দুবার ঢাকা থেকে দূরে যেতেও ছাড়েন না তাঁরা।
সাগর আর নদী ছাড়া সব জায়গায়ই টিকিট কেটে ছিপ-বড়শি ফেলতে হয় মৎস্যশিকারিদের। টিকিট ছাড়া মাছ ধরতে শৌখিন লোকেরা ঢাকার আশপাশে যেসব নদীতে যান, তার মধ্যে আছে বংশী নদীর হেমায়েতপুর, ইটাখোলা, জয়মণ্ডপ ও লঙ্কারচর এলাকা এবং বুড়িগঙ্গা নদীর ফতুল্লার কাউটাইল এলাকা। কেউ কেউ নৌকায় চড়ে ছিপ-বড়শি ফেলেন মেঘনা নদীর বাবুরহাট ও বারুদী এলাকায়। দুর্গম পথ, দূরত্ব কিংবা বিরূপ আবহাওয়া কোনো কিছুই দমিয়ে রাখতে পারে না শৌখিন ব্যক্তিদের। নিতান্তই রোমাঞ্চ মেটাতেই তাঁদের ছুটে চলা। তাই দিনমান বৃষ্টিমুখর গত ৮ অক্টোবরে ঘরে না থেকে ধানমন্ডি লেকে ছিলেন মান্ডার বাসিন্দা এম কে জামান। ওই দিন তাঁর বড়শিতে ধরা দিয়েছে তিনটি বিগ হেড কার্প আর একটি কাতলা। তার পরদিন শনিবারে পেয়েছেন আরেকটি বিগ হেড কার্প। তিন দশকের ঝানু শিকারি জামান জানান, আগে শুধু রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ মাছ পাওয়া যেত। এখন যুক্ত হয়েছে হাইব্রিড মাছ। এর মধ্যে আছে বিগ হেড কার্প, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, চাষের পাঙ্গাশ ইত্যাদি।
ধানমন্ডির লেক বলুন, আর চিড়িয়াখানার লেক বলুন, এসব লেকে ছিপ ফেলে যাঁরা দিনভর বসে থাকেন, তাঁদের আধার কিন্তু একটা না একটা সময় গিলে খায় মাছ। তখনি সুতায় পড়ে টান, টোন বা ফাতনা পানিতে ডোবে আর ভাসে। টের পেয়েই ছিপের গোড়ার হুইল দ্রুতলয়ে গোড়াতে থাকেন শিকারি। কিন্তু মাছ আর মেলে না সবার ভাগ্যে। চালাক মাছ কৌশলে আধার গিলে আগেই লাপাত্তা। শূন্য বড়শিতে আবার আধার দিয়ে দূর জলাশয়ে ছুড়ে মারেন শিকারি। আবার মাছের জন্য প্রতীক্ষা তাঁর। এমনও দিন যায়, একটা মাছও জোটে না শিকারির বড়শিতে। এক শনিবারের সন্ধে নামতে শূন্য হাতেই ঢাকা চিড়িয়াখানার লেক থেকে ফিরে যাচ্ছিলেন মিরপুরের সাইদ আহমেদ। শৌখিন এই মৎস্যশিকারি বলেন, ‘মাছ পাওয়া বড় বিষয় নয়। ছুটির দিনে ছিপ ফেলে বসে থাকলে মনটা ফ্রেশ হয়। আবার ধৈর্যশক্তি বাড়ে। ছিপ-বড়শির খেলা বলতে পারেন আমার শখ বা নেশা।’
ছিপ-বড়শি নিয়ে জলাশয়ে শৌখিনদের কাণ্ডকীর্তি পৃথিবীজুড়ে একটি ক্রীড়া-বিনোদন হিসেবেই স্বীকৃত। তাই এ দেশের সরকার এটাকে খেলা হিসেবেই স্বীকৃতি দেবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ শৌখিন মৎস্য শিকার সমিতির সদস্যরা। তবে এর উল্টোটাই এখন করছে ঢাকা নগরের প্রশাসন। একটা সময় ধানমন্ডি লেকের মাছ চাষ ও ধরার বিষয়টি পরিচালনা করত বাংলাদেশ শৌখিন মৎস্য শিকার সমিতি। লেকের পাড়ে ছিল তাদের স্থায়ী কার্যালয়। লেক সংস্কারের নামে ১৯৯৮ সালে ডিসিসি ভেঙে ফেলে সেই কার্যালয়। তখন লেক থেকে শিকারিদের মাচাগুলোও উপড়ে ফেলা হয়। তবুও একটি তাঁবু গেড়ে কাজ করে যাচ্ছিল সমিতি। কিন্তু সম্প্রতি সেই তাঁবুও উপড়ে ফেলা হয়েছে। এদিকে গুলশান লেক দূষণমুক্ত না হওয়ায় সেখানকার গুলশান শৌখিন মৎস্য শিকার সমবায় সমিতির কার্যক্রমও থেমে গেছে। তাই অনেকটা দাবি জানিয়ে সৈয়দ আব্দুল হাদী বললেন, ‘নগরের অন্যান্য বিনোদনের জায়গার মতো মৎস্য শিকারের জায়গাও কমে আসছে। এ অবস্থায় লেকগুলো দূষণমুক্ত করে সেগুলো মৎস্যশিকারিদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। আমরা সরকারকে নিয়মিত রাজস্ব দেব। ঢাকার মৎস্য শিকার চর্চার ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব আমাদের একার নয়, সরকারেরও কিছু দায়িত্ব আছে।’
জলাশয়ে ছিপ-বড়শি ফেলাতেই শৌখিন মৎস্যশিকারিদের যত আনন্দ। টোপ আর মাছের এই খেলা মেটায় কারও শখ অথবা নেশা। নগরে ছিপ-বড়শির চর্চা কিন্তু নতুন নয়। সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই চলে আসছে মাছ ধরার এই শৌখিনতা। তবে বিখ্যাত আর অখ্যাত ছিপ-বড়শিপ্রিয় সব মানুষ একই প্লাটফরমে এসেছেন ১৯৬৮ সালে। তখন গড়ে ওঠে বাংলাদেশ শৌখিন মৎস্য শিকার সমিতি।
বাংলাদেশ শৌখিন মৎস্য শিকার সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনেওয়াজ ভুঁইয়া জানান, ঢাকায় এখন ছিপ-বড়শি দিয়ে মাছ ধরার প্রধান জায়গা ধানমন্ডি লেক। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে অবশ্য মাছ ধরার প্রধান কেন্দ্র ছিল রমনা লেক। এখন রমনা লেক ছোট হয়ে গেছে। নেই কোনো মাছ। দূষণের কারণে এক দশক ধরে কোনো মাছ টিকতে পারছে না গুলশান, বারিধারা লেকেও। এখনকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ছিল আফিলুদ্দিন সরদারের দিঘি; ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও জাতীয় ঈদগাহে ছিল বড় পুকুর। এসব জলাশয়ে শৌখিন লোকেরা টিকিট কেটে ছিপ-বড়শি ফেলতেন।
বাংলাদেশ শৌখিন মৎস্য শিকার সমিতি এবং গুলশান শৌখিন মৎস্য শিকার সমবায় সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন গুণী সংগীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী। মাছ শিকারের জগতে তাঁর পদচারণার বয়স প্রায় চার দশক। তাই ভান্ডারে জমেছে মাছ শিকারের নানা স্মৃতি। এমনি একটি ঘটনা শোনা যাক গুণী এই সংগীতশিল্পীর বয়ানেই, ‘৭৯ বা ৮০ সালের ঘটনা। তখন অফিস ব্যাগে গুটানো থাকত ছিপ-বড়শি। অফিস থেকে বের হয়ে বিকেলে চলে যেতাম ধানমন্ডি লেকে। এখন লেকের যেখানে রুশ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিকেন্দ্রের অবস্থান, সেই বরাবর লেকের অপর পাড়ে ছিল সংগীতজ্ঞ সুধীন দাশের মাচা। তাঁর মাচায় বসেই আমি মাছ ধরতাম। একদিন বিশাল একটি মাছ ধরা পড়ল আমার বড়শিতে। কিন্তু সুতা টেনে বড়শিতে গাঁথা মাছ টেনে আনা যাচ্ছিল না, লোক ডাকতে হলো। নৌকা দিয়ে দেড় ঘণ্টা পেছনে পেছনে ছুটে বড়শির মাছটি ধরা হলো। ওই মাছ নিয়ে সোজা চলে গেলাম বাংলামোটরে তখনকার কণ্ঠশিল্পী সমিতির কার্যালয়ে। সমিতির ২৮ জন সদস্যকে ভাগ করে দিলাম ৩৫ কেজি ওজনের সেই কাতলা মাছ।’ খাওয়া নয়, মাছ বিলিয়ে দিতেই বেশি আনন্দ পান শৌখিন মৎস্যশিকারিরা। বিষয়টি বোঝা যায়, সৈয়দ আব্দুল হাদীর স্মৃতিচারণায়।
নগরে মাছ ধরার জায়গা কমলেও বাড়ছে মৎস্যশিকারির সংখ্যা। প্রায় আট হাজার শৌখিন শিকারি চষে বেড়ান ধানমন্ডি লেক ছাড়াও ঢাকা চিড়িয়াখানা, জাতীয় সংসদ ভবন লেক, বংশাল পুকুর, নবাববাড়ির গোলতালাবসহ নগরের ছোট-বড় জলাশয়ে। আবার অবসর পেলেই ছিপ-বড়শি নিয়ে অনেকে মাছ ধরতে ছুটে যান ঢাকার কাছে সাভার, ধামরাই, মৌচাক, ফতুল্লা, ভুলতা ও মাওয়ায়। আবার বছরে একবার-দুবার ঢাকা থেকে দূরে যেতেও ছাড়েন না তাঁরা।
সাগর আর নদী ছাড়া সব জায়গায়ই টিকিট কেটে ছিপ-বড়শি ফেলতে হয় মৎস্যশিকারিদের। টিকিট ছাড়া মাছ ধরতে শৌখিন লোকেরা ঢাকার আশপাশে যেসব নদীতে যান, তার মধ্যে আছে বংশী নদীর হেমায়েতপুর, ইটাখোলা, জয়মণ্ডপ ও লঙ্কারচর এলাকা এবং বুড়িগঙ্গা নদীর ফতুল্লার কাউটাইল এলাকা। কেউ কেউ নৌকায় চড়ে ছিপ-বড়শি ফেলেন মেঘনা নদীর বাবুরহাট ও বারুদী এলাকায়। দুর্গম পথ, দূরত্ব কিংবা বিরূপ আবহাওয়া কোনো কিছুই দমিয়ে রাখতে পারে না শৌখিন ব্যক্তিদের। নিতান্তই রোমাঞ্চ মেটাতেই তাঁদের ছুটে চলা। তাই দিনমান বৃষ্টিমুখর গত ৮ অক্টোবরে ঘরে না থেকে ধানমন্ডি লেকে ছিলেন মান্ডার বাসিন্দা এম কে জামান। ওই দিন তাঁর বড়শিতে ধরা দিয়েছে তিনটি বিগ হেড কার্প আর একটি কাতলা। তার পরদিন শনিবারে পেয়েছেন আরেকটি বিগ হেড কার্প। তিন দশকের ঝানু শিকারি জামান জানান, আগে শুধু রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ মাছ পাওয়া যেত। এখন যুক্ত হয়েছে হাইব্রিড মাছ। এর মধ্যে আছে বিগ হেড কার্প, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, চাষের পাঙ্গাশ ইত্যাদি।
ধানমন্ডির লেক বলুন, আর চিড়িয়াখানার লেক বলুন, এসব লেকে ছিপ ফেলে যাঁরা দিনভর বসে থাকেন, তাঁদের আধার কিন্তু একটা না একটা সময় গিলে খায় মাছ। তখনি সুতায় পড়ে টান, টোন বা ফাতনা পানিতে ডোবে আর ভাসে। টের পেয়েই ছিপের গোড়ার হুইল দ্রুতলয়ে গোড়াতে থাকেন শিকারি। কিন্তু মাছ আর মেলে না সবার ভাগ্যে। চালাক মাছ কৌশলে আধার গিলে আগেই লাপাত্তা। শূন্য বড়শিতে আবার আধার দিয়ে দূর জলাশয়ে ছুড়ে মারেন শিকারি। আবার মাছের জন্য প্রতীক্ষা তাঁর। এমনও দিন যায়, একটা মাছও জোটে না শিকারির বড়শিতে। এক শনিবারের সন্ধে নামতে শূন্য হাতেই ঢাকা চিড়িয়াখানার লেক থেকে ফিরে যাচ্ছিলেন মিরপুরের সাইদ আহমেদ। শৌখিন এই মৎস্যশিকারি বলেন, ‘মাছ পাওয়া বড় বিষয় নয়। ছুটির দিনে ছিপ ফেলে বসে থাকলে মনটা ফ্রেশ হয়। আবার ধৈর্যশক্তি বাড়ে। ছিপ-বড়শির খেলা বলতে পারেন আমার শখ বা নেশা।’
ছিপ-বড়শি নিয়ে জলাশয়ে শৌখিনদের কাণ্ডকীর্তি পৃথিবীজুড়ে একটি ক্রীড়া-বিনোদন হিসেবেই স্বীকৃত। তাই এ দেশের সরকার এটাকে খেলা হিসেবেই স্বীকৃতি দেবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ শৌখিন মৎস্য শিকার সমিতির সদস্যরা। তবে এর উল্টোটাই এখন করছে ঢাকা নগরের প্রশাসন। একটা সময় ধানমন্ডি লেকের মাছ চাষ ও ধরার বিষয়টি পরিচালনা করত বাংলাদেশ শৌখিন মৎস্য শিকার সমিতি। লেকের পাড়ে ছিল তাদের স্থায়ী কার্যালয়। লেক সংস্কারের নামে ১৯৯৮ সালে ডিসিসি ভেঙে ফেলে সেই কার্যালয়। তখন লেক থেকে শিকারিদের মাচাগুলোও উপড়ে ফেলা হয়। তবুও একটি তাঁবু গেড়ে কাজ করে যাচ্ছিল সমিতি। কিন্তু সম্প্রতি সেই তাঁবুও উপড়ে ফেলা হয়েছে। এদিকে গুলশান লেক দূষণমুক্ত না হওয়ায় সেখানকার গুলশান শৌখিন মৎস্য শিকার সমবায় সমিতির কার্যক্রমও থেমে গেছে। তাই অনেকটা দাবি জানিয়ে সৈয়দ আব্দুল হাদী বললেন, ‘নগরের অন্যান্য বিনোদনের জায়গার মতো মৎস্য শিকারের জায়গাও কমে আসছে। এ অবস্থায় লেকগুলো দূষণমুক্ত করে সেগুলো মৎস্যশিকারিদের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। আমরা সরকারকে নিয়মিত রাজস্ব দেব। ঢাকার মৎস্য শিকার চর্চার ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব আমাদের একার নয়, সরকারেরও কিছু দায়িত্ব আছে।’
No comments:
Post a Comment