Pages

Search This Blog

Saturday, December 18, 2010

আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট

আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট

০০ শেখ জাহাঙ্গীর আলম ০০

কর্মক্ষেত্রে নিজেকে আরও যোগ্যতাসম্পন্ন করে গড়ে তুলতে হলে প্রয়োজন পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যান্য যোগ্যতা। এর মধ্যে একটি বিদেশি ভাষা জ্ঞান অর্জন করা। বিদেশি ভাষা শেখানোর জন্য অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে সবচেয়ে বেশি কাজ করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অংশ হিসেবে 'বিদেশি ভাষা বিভাগ' নামে এই ইনস্টিটিউট ১৯৬৪ সালে যাত্রা শুরু করে। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের বিদেশি ভাষা শেখানো। পরবর্তীতে দেখা যায় বিদেশি ভাষা শেখার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা অধিক উৎসাহিত। তাদের বিবেচনায় রেখে ১৯৭৪ সালের ১ জুলাই আধুনিক ভাষা ইনস্টিউটটে পরিণত হয় এই বিভাগ। এই বিভাগে বর্তমানে ১২টি ভাষা শেখানো হয়। এর মধ্যে বাংলা ভাষা শুধু বিদেশিদের শেখানো হয়। আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক মুহম্মদ আব্দুর রহীম বলেন, 'শিক্ষার্থীদের শুধু প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনাই নয়, আরও অন্যান্য বিষয়ে জ্ঞান থাকা দরকার। বাংলা-ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি তৃতীয় কোনো ভাষায় অনুশীলন বা শিক্ষা গ্রহণ করা ও জানা দরকার। এতে তাদের জীবনে কর্মক্ষেত্রে সাফল্য বয়ে আনবে। আর এ কারণে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে ভাষা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দিন দিন চলছে। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই নয়, যে কেউ এখানে ভাষা শিখতে পারেন।

জনবল

আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে মোট শিক্ষক ৫০ জন। এদের মধ্যে ফুল টাইম ২৭ জন। পার্ট টাইম শিক্ষক ১৬ জন, ভিজিটর ৬ জন (বিদেশি) এবং একজন সুপার নিউমারারি এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারী মোট ২৪ জন। কর্মকর্তা ৫ জন ৩য় শ্রেণীর ৪ জন এবং ৪র্থ শ্রেণীর ১৫ জন কার্যরত আছেন, বলে, সিনিয়র সচিব আফিজ আব্দুর রহমান।

পড়ানোর পদ্ধতি

আধুনিক ভাষা ইনস্টিউিট এক বছর মেয়াদী জুনিয়র ও সিনিয়র সার্টিফিকেট কোর্স, ডিপ্লোমা ও চার বছর মেয়াদি উচ্চতর ডিপ্লোমা করার সুযোগ রয়েছে। এখানে শিক্ষার্থীদের খুব যত্ন সহকারে ভাষা শেখানো হয়। তবে শেখানোর পদ্ধতি অন্যান্য বিভাগ থেকে আলাদা। এখানে প্রতিটি ভাষায় ভর্তি শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রুপ তৈরি করা হয়। প্রতিটি গ্রুপে (নূন্যতম) ৩০ জন শিক্ষার্থী থাকে। প্রতি বছর ৩টি শর্ট কোর্স করানো হয়। সংক্ষিপ্ত কোর্স এখানে ৫০-৬০ ঘণ্টা করানো হয়। এখানে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই নন, বরং বাহিরের শিক্ষার্থীরাও যে কোনো ভাষায় সংক্ষিপ্ত কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারেন। তবে ইংরেজি কোর্স শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত। এছাড়াও রয়েছে ইংরেজি সংক্ষিপ্ত কোর্স (৫০-৬০) ঘণ্টা। এতে যে কোনো শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারেন।

সময় ও খরচ

আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে প্রতিটি কোর্সের মেয়াদ এক বছর অথবা নূন্যতম ১২০ ঘণ্টা। তবে এখানে টানা চার বছর না পড়েও উচ্চতর ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করা সম্ভব। ইনস্টিটিউটে প্রতিটি কোর্সের ফি হাজার ৩০০ টাকা। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরের শিক্ষার্থী যারা তাদের রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৩৩ টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে। বিদেশি শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে এখানে ভর্তি হতে পারবেন। এজন্য ভর্তি ও রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ বিদেশি শিক্ষার্থীদের খরচ হবে ১০ হাজার টাকা। এ ছাড়া শিক্ষা উপকরণ বাবদ দিতে হবে আরও দুই হাজার টাকা।

যোগ্যতা

আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য তা নয়, এখানে উচ্চ মাধ্যমিক পাস যে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পড়াশোনার সুযোগ পেতে পারেন।

আবেদনপত্র সংগ্রহ

একজন শিক্ষার্থী একাধিক বিষয়ে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে একই সঙ্গে একাধিক ভাষায় ভর্তি হতে পারবেন না। টিএসসিতে অবস্থিত জনতা ব্যাংকের শাখা থেকে ২৫০ টাকার বিনিময়ে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। আবেদনপত্রের সাথে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার মার্কশিটের সত্যায়িত কপি সংযুক্ত করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য মার্কশিটের প্রয়োজন হবে না। তবে আবেদনপত্রে নিজ নিজ বিভাগের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর প্রয়োজন হবে।

Friday, December 10, 2010

হারিয়ে যাচ্ছে নগরীর সৌন্দর্য!

হারিয়ে যাচ্ছে নগরীর সৌন্দর্য!

আমাদের প্রিয় নগরী ঢাকাকে সুন্দর করে সাজাতে কাজ করে যাচ্ছে সিটি করপোরেশন। তবে অনেকের ধারণা রাজধানী ঢাকার সৌন্দর্য দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী নগরী ঢাকার সৌন্দর্য নিয়ে আমাদের এবারের লিখেছেন খালেদ আহমেদ

ঢাকার ঐতিহ্য চার শ' বছরের। সেই প্রাচীনকাল থেকেই এই নগরীর সৌন্দর্যের একটা আলাদা রূপ আছে। কিন্তু অনেকেই মনে করেন আমাদের প্রিয় নগরী ঢাকার সৌন্দর্য দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ঢাকা সিটি করপোরেশন সড়কের মাঝে গাছ লাগালেও অনেক স্থানেই সঠিক পরিচর্যার অভাবে সেগুলো মরে যাচ্ছে। সেই সাথে বিভিন্ন সড়কের মাঝে বিউটিফিকেশনের কাজে ব্যবহূত রেলিং বা কাঁটাতারের বেড়াগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও আবার চুরি হয়ে গেছে। এছাড়া সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য রাস্তার মাঝে আইল্যান্ডগুলো কাজ সঠিকভাবে করা হয় না বলে অভিয়োগ রয়েছে। কয়েকদিন আগে সম্পন্ন হওয়া মিরপুর থানার সামনে থেকে বিসিক বিল্ডিং পর্যন্ত আইল্যান্ডের কাজের মান অনেক খারাপ। সেখানকার শতকরা ৯০ ভাগ কাজেই সুরকি ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যান্য অনেক স্থানে এসব কাজের জন্য শুধু সুরকি, বালু ও ইট বিছিয়ে কোনো রকমে কাজ হয়। আবার উত্তরার মাসকট পস্নাজার সামনের আইল্যান্ডের কাজের মানও খারাপ বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ডিসিসি'র সংশিস্নষ্ট দপ্তরের একজন প্রকৌশলী জানিয়েছেন, কাজের মান ঠিক আছে। আমরা চেষ্টা করেছি সঠিকভাবে কাজ করতে।

ঢাকা সিটি করপোরেশনের একটি সূত্র জানায়, এতিহ্যবাহী ঢাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধিকল্পে তারা দীর্ঘদিন থেকে কাজ করে যাচ্ছে। নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সড়ক বদ্বীপ নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে জিপিও মোড়, পল্টন মোড়, দোয়েল চত্বর, হাইকোর্টের সামনে ফোয়ারা, কারওয়ান বাজার মোড়ে ফোয়ারা, পান্থ কুঞ্জ, সাতরাস্তা মোড়ে ময়ূর, শেরাটনের সামনে রাজসিক, এয়ারপোর্ট রোডে বিভিন্ন নান্দনিক সড়ক বদ্বীপসহ নির্মাণ করেছে। নগরীতে দিন দিন পার্ক ও খেলার মাঠ সংকুচিত হচ্ছে। সুন্দর নগরায়নে নগরীবাসীর মানসিক বিনোদনের জন্য অনেক বেশি পার্ক ও খেলার মাঠ প্রয়োজন। সেই কথা চিন্তা করেই ডিসিসি নগরীতে ৪২টি পার্ক সম্প্রসারণ করেছে, যেগুলো নগরীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত। এর মধ্যে বনানীতে রয়েছে পাঁচটি পার্ক। এর মধ্যে বনানী লেক পার্ক ছাড়াও ডি, সি, জি ও এফ বস্নকে রয়েছে শিশুপার্ক। বারিধারায় রয়েছে দুইটি পার্ক। গুলশানে রয়েছে চারটি পার্ক। কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে একটি পার্ক। বাহাদুর শাহ পার্ক। সায়েদাবাদ শিশু পার্ক। স্বামীবাগ শিশু পার্ক। গুলিস্তান শিশু পার্ক। সিরাজুদৌলস্না পার্ক। জগন্নাথ শাহ রোড পার্ক। হাজারীবাগ পার্ক। নওয়াবগঞ্জ পার্ক। শ্যামলীতে রয়েছে দুইটি পার্ক। এরমধ্যে একটি শ্যামলী পার্ক ও আরেকটি শ্যামলী শিশু পার্ক। শহীদ শাকিল পার্ক। শিয়া মসজিদ পার্ক। মোহাম্মদপুর ইকবাল রোড পার্ক। কারওয়ান বাজার পার্ক। ফার্মগেট পার্ক। পান্থকুঞ্জ পার্ক। কলাবাগান লেক সার্কাস পার্ক। মাজেদ সরদার পার্ক। মতিঝিল পার্ক। বংশাল পার্ক। পলস্নবী শিশু পার্ক। উদ্ভিদ উদ্যান। নারিন্দা শিশু পার্ক। খিলগাঁও শিশু পার্ক। আউটফল স্টাফ কোয়ার্টার শিশু পার্ক। গুলশান ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু পার্ক, ওসমানী উদ্যান প্রভৃতি। সেই সাথে ধানমণ্ডি লেক উন্নয়ন প্রকল্পটি করপোরেশনের একটি জনপ্রিয় প্রকল্প। নগরীর সাধারণ মানুষের মানসিক প্রশান্তির জন্য ধানমন্ডি লেক উন্নয়ন প্রকল্প করা হয়েছে। ধানমণ্ডি লেকটি ৮৫.৬০ একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে ৩১ একর স্থলভাগ আর বাকিটা জলরাশি। এই পাকটি নগরবাসীর কাছে একটি জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে মনে স্থান করে নিয়েছে। সিটি করপোরেশনের বিউটিফিকেশনের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা জানান, 'বাড়ির সামনে সবাই সুন্দর রাখে। কিন্তু পেছনের দিক সুন্দর রাখে না। তেমনি ডিসিসি'র সামনের দিকটা অর্থাৎ শাহবাগ, দোয়েল চত্বর, উত্তরা রেলগেট পর্যন্ত অনেক সুন্দর করে সাজানো। সেই সাথে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছে সড়ক বদ্বীপ। আর পেছনের দিক বা সায়েদাবাদ, ফ্লাইওভার হয়ে প্রগতি সরণি, মিরপুর গাবতলী এলাকাগুলো সে রকম সুন্দর নয়। এ সব স্থানগুলোতে জাতীয় দিবস এবং আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানের সময় সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়। আগামী ১৬ ডিসেম্বর নগরীজুড়ে সুন্দর করে সাজানো হবে। ১৫ ডিসেম্বররের মধ্যেই কাজ শেষ হবে। সেই সাথে বিভিন্ন সড়কের গাছের টব ও বস্নকগুলো রঙ করা হবে।' ওই কর্মকর্তা আরো জানান, 'বর্তমানে বিভিন্ন সড়কের গাছগুলোতে পানি দেয়া হয় না। কারণ বর্ষার সময় এমনিতেই বৃষ্টির পানি পায় গাছগুলো। গ্রীষ্ম মৌসুমে গাছে পানি দেয়ার জন্য সাতটি গাড়ি ব্যবহার করা হয়। তবে ডিসিসি'র গাছে পানি দেয়ার জন্য পানি পেতেও অসুবিধা হয়। কেননা ধানমন্ডি লেক থেকে পানি নেয়া যায় না। পানির জন্য ওয়াসার কাছে ধন্না দিতে হয়। তাদের কাছে পানি চাইলেও তারা বলে জনগণকে পানি দিতে পারি না, গাছে পানি দেয়ার জন্য পানি কোথা থেকে দিব?' ডিসিসি'র আরেকটি সূত্র জানায়, প্রতি বছর তারা বিউটিফিকেশনের জন্য এক কোটি টাকা ব্যয় করেন এই প্রকল্পে। নগর ভবনসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাজানো ও আলোকসজ্জা করে থাকে জাতীয় ও বিশেষ দিবসগুলোতে। নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক নিজেদের উদ্যোগেও কাজ করে আসছে। এর মধ্যে রয়েছে কৃষি ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ও সিটি ব্যাংক উলেস্নখযোগ্য।


ছবি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর

Wednesday, December 8, 2010

জরুরি ফোন (থানা)

ধানমন্ডি থানা : ৮৬৩১৯৪২ ০০ তেজগাঁও থানা : ৯১১৯৪৬৭, ৯১১৯৪৪৪ ০০ কোতোয়ালী থানা : ৭১১৬২৫৫ ০০ সূত্রাপুর থানা : ৭১১৬২৩৩ ০০ লালবাগ থানা :৭৩১৬৩০০ ০০ কামরাঙ্গীরচর থানা : ৮৬৩১৩২৯ ০০ মতিঝিল থানা :৮৩২৩০০৮ ০০ রমনা থানা : ৯৩৫০৪৬৮ ০০ ডেমরা থানা : ৭৫৪৬২৪৪ ০০ পলস্নবী থানা : ৮০১৫১২২ ০০ মিরপুর থানা : ৯০০১০০০-১ ০০ শ্যামপুর থানা : ৭৪৪০৬৯১ ০০ সবুজবাগ থানা : ৭২১৯৯৮৮, ৭২১৯৩৮৮ ০০ কালিগঞ্জ থানা : ৭২১৯০৯০ ০০ উত্তরা থানা :৮৯১৪৬৬৪, ৮৯১৪১২৬ ০০ বাড্ডা থানা : ৯৮৮২৬৫২ ০০ ক্যান্টনমেন্ট থানা : ৮৮২৯২৬৭, ৮৮২৯১৭৯ ০০ কাফরুল থানা : ৯৮৭১৭৭১ ০০ মোহাম্মদপুর থানা : ৯১১৯৯৪৩, ৯১১৯৯৬০ ০০ হাজারীবাগ থানা : ৯৬৬৯৯০০ ০০ গুলশান থানা : ৯৮৮০২৩৪ ০০ গুলিস্তান পুলিশ বক্স : ৯৫৫৮৩০৪ ০০ গাবতলী পুলিশ বক্স : ৯০০৩৭৯১ ০০ পুরানা পল্টন পুলিশ বক্স : ৮৩২২৫০১ ০০ কমলাপুর রেলস্টেশন পুলিশ বক্স : ৮৩২২৫০১-২৯৬ ০০ ফার্মগেট পুলিশ বক্স : ৯১১৯৯২৫।

Monday, December 6, 2010

বিপণিবিতানের সময়সূচি

বিপণিবিতানের সময়সূচি

ঢাকাকে সাতটি অঞ্চলে ভাগ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দোকান ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট ও বিপণিবিতান এলাকাভিত্তিক আলাদা আলাদা দিনে সপ্তাহে এক দিন পূর্ণদিবস ও আরেক দিন অর্ধদিবস (বেলা ২টা পর্যন্ত) বন্ধ। খোলা থাকবে রাত ৮টা পর্যন্ত।
অঞ্চল-১

শুক্রবার পূর্ণ এবং শনিবার অর্ধদিবস বন্ধ
বিপণিবিতানগুলো হচ্ছে : বাংলাবাজার বইয়ের মার্কেট, ফরাশগঞ্জ কাঠের আড়ত, শ্যামবাজার কাঁচামালের পাইকারি বাজার, বুড়িগঙ্গা সেতু মার্কেট, আলম সুপার মার্কেট, সামাদ সুপার মার্কেট, রহমানিয়া সুপার মার্কেট, ইদ্রিস সুপার মার্কেট, দয়াগঞ্জ বাজার, ধুপখোলা মাঠ বাজার, দয়াগঞ্জ সিটি করপোরেশন মার্কেট, কাপ্তানবাজার, ঠাটারীবাজার, রাজধানী সুপার মার্কেট, চকবাজার, মৌলভীবাজার, ইমামগঞ্জ মার্কেট, বাবুবাজার, নয়াবাজার, ইসলামপুর কাপড়ের বাজার, পাটুয়াটুলী ইলেকট্রনিঙ্ ও অপটিক্যাল মার্কেট, নয়ামাটি এঙ্সেরিজ মার্কেট, শরিফ ম্যানশন, ছোট ও বড় কাটরা পাইকারি মার্কেট, বেগমবাজার, তাঁতীবাজার, নবাবপুর রোড ও নর্থ সাউথ রোডের দোকানপাট, আজিমপুর সুপার মার্কেট, ফুলবাড়িয়া মার্কেট, গুলিস্তান হকার্স মার্কেট এবং সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেট।
অঞ্চল-২
রবিবার পূর্ণ এবং সোমবার অর্ধদিবস বন্ধ
বিপণিবিতানগুলো হচ্ছে : মোল্লা টাওয়ার, আল-আমিন সুপার মার্কেট, রামপুরা সুপার মার্কেট, মালিবাগ সুপার মার্কেট, তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেট, কমলাপুর স্টেডিয়াম মার্কেট, গোড়ান বাজার, মেরাদিয়া বাজার, আয়েশা মোশাররফ শপিং, দনিয়া তেজারত মার্কেট, আবেদিন টাওয়ার, ঢাকা শপিং সেন্টার এবং মিতালী সুপার মার্কেট।
অঞ্চল-৩
বৃহস্পতিবার পূর্ণ এবং শুক্রবার অর্ধদিবস বন্ধ
বিপণিবিতানগুলো হচ্ছে : সেঞ্চুরি আর্কেড, মৌচাক মার্কেট, আনারকলি মার্কেট, বিশাল সেন্টার, আয়েশা শপিং কমপ্লেঙ্, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি, কনকর্ড টুইন টাওয়ার, ইস্টার্ন প্লাস, পলওয়েল সুপার মার্কেট, সিটি হার্ট, জোনাকি সুপার মার্কেট, গাজী ভবন, স্টেডিয়াম মার্কেট-১ ও ২, গুলিস্তান কমপ্লেঙ্, রমনা ভবন, খদ্দর মার্কেট, পীর ইয়েমেনি মার্কেট, বায়তুল মোকাররম মার্কেট।
অঞ্চল-৪
মঙ্গলবার পূর্ণ এবং বুধবার অর্ধদিবস বন্ধ
বিপণিবিতানগুলো হচ্ছে : হাতিরপুল বাজার, মোতালিব প্লাজা, ইস্টার্ন প্লাজা, বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, গ্রিন সুপার মার্কেট, ফার্মভিউ সুপার মার্কেট, সৌদিয়া সুপার মার্কেট, সেজান পয়েন্ট, লায়ন শপিং সেন্টার, নিউমার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, নিউ সুপার মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, চাঁদনী চক, নূর ম্যানশন, বাকুশাহ মার্কেট, ইসলামিয়া মার্কেট, ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেট, ইস্টার্ন মলি্লকা, গ্লোব শপিং, বদরুদ্দোজা মার্কেট, নূরজাহান মার্কেট, প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টার, গাউসুল আযম মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, রাইফেল স্কয়ার, এআরএ শপিং সেন্টার, অরচার্ড পয়েন্ট, ক্যাপিটাল মার্কেট, ধানমণ্ডি প্লাজা, মমতাজ প্লাজা, মেট্রো শপিং মল, প্লাজা এআর, প্রিন্স প্লাজা, রাপা প্লাজা, অর্কিড প্লাজা, কেয়ারি প্লাজা, আনাম র‌্যাংগস প্লাজা, কারওয়ান বাজার ডিআইটি মার্কেট, কাব্যকস সুপার মার্কেট, কিচেন মার্কেট, আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেট এবং সাকুরা মার্কেট।
অঞ্চল-৫
বৃহস্পতিবার পূর্ণ এবং শুক্রবার অর্ধদিবস বন্ধ
বিপণিবিতানগুলো হচ্ছে : মোহাম্মদপুর টাউন হল মার্কেট, কৃষি মার্কেট, আড়ং, বিআরটিসি মার্কেট, শ্যামলী হল মার্কেট, মুক্তিযোদ্ধা সুপার মার্কেট, মাজার কো-অপারেটিভ মার্কেট, শাহ আলী সুপার মার্কেট, মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেঙ্ এবং মিরপুর স্টেডিয়াম মার্কেট।
অঞ্চল-৬
রবিবার পূর্ণ এবং সোমবার অর্ধদিবস বন্ধ
বিপণিবিতানগুলো হচ্ছে : বিসিএস কম্পিউটার মার্কেট, পল্লবী শপিং মার্কেট, মিরপুর বেনারসি পল্লী, পল্লবী সুপার মার্কেট, পূরবী সুপার মার্কেট, নিউ সোসাইটি মার্কেট, সুইডেন প্লাজা, পর্বতা টাওয়ার, তামান্না কমপ্লেঙ্, ছায়ানীড় সুপার মার্কেট, রজনীগন্ধা মার্কেট, ইব্রাহিমপুর বাজার, ইউএই মৈত্রী কমপ্লেঙ্, রহমান মার্কেট, বনানী সুপার মার্কেট, ডিসিসি মার্কেট গুলশান-১ ও ২, নাভানা টাওয়ার, আলম সুপার মার্কেট এবং কলোনি বাজার মার্কেট।
অঞ্চল-৭
বুধবার পূর্ণদিবস এবং বৃহস্পতিবার অর্ধদিবস বন্ধ
বিপণিবিতানগুলো হচ্ছে : লুৎফন শপিং টাওয়ার, হাকিম টাওয়ার, হল্যান্ড সেন্টার, নূরুন্নবী সুপার মার্কেট, সুবাস্তু নজর ভ্যালি, যমুনা ফিউচার পার্ক, রাজলক্ষ্মী কমপ্লেঙ্, রাজউক সেন্টার, একতা প্লাজা, মান্নান প্লাজা, বন্ধন প্লাজা, কুশল সেন্টার, এবি সুপার মার্কেট, আমীর কমপ্লেঙ্, মাসকাট প্লাজা, এসআর টাওয়ার, পুলিশ কো-অপারেটিভ ও রাজউক কসমো।
নগর ঐতিহ্যঢাকার আদি অধিবাসীর রসবোধবর্ষায় বাড়ির ছাদ চুইয়ে পানি পড়লে ভাড়াটিয়া তা মালিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সেই ঢাকাইয়া বাড়ির মালিক উত্তর দিতেন, 'মাসে তিন টাকা ভাড়ার বাড়ির ছাদ দিয়া পানি পড়ব না তো কি শরবত পড়ব!' এমন বহু রঙ্গ-রসিকতা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে পুরান ঢাকার আদি বাসিন্দাদের প্রাত্যহিক জীবনের নানা অলিগলিতে। স্বপন কুমার দাস
রহস্যময় নগরী ঢাকা। ৪০০ বছরের প্রাচীন এ রাজধানী নগরীকে কেন্দ্র করে যুগে যুগে বহু জনগোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটেছে। সময়ান্তে আবার তাদের বিলুপ্তিও ঘটেছে। কিন্তু তাদের নানা কাজকর্মের জন্য আজও তারা আলোচিত। ঢাকার আদি অধিবাসীও তেমনি একটি গুণের কারণে দেশব্যাপী আলোচিত। আর সে গুণটি হচ্ছে তাঁদের রসবোধ।
যাঁরা বহু বছর ধরে বংশপরম্পরায় পুরান ঢাকায় বসবাস করে আসছেন তাঁদের ঢাকার আদি অধিবাসী বলা হয়। তাঁদের আচার-ব্যবহার ও ভাষারীতিও আর দশটা সাধারণ নাগরিকের চেয়ে আলাদা। তবে তাঁরা অধিকাংশেরই ধর্ম ইসলাম। তাঁরা দুই শ্রেণীতে বিভক্ত। একটা শ্রেণী ছিল তুলনামূলকভাবে শিক্ষিত। অপর শ্রেণীটি শিক্ষায় অনগ্রসর। নানা সংস্কারে আবদ্ধ। তাঁদের বলা হতো কুট্টি। তাঁরা উর্দু ও হিন্দির মিশ্রণে কথা বলতেন। আবার বাংলা ভাষায় ছিল বেশ পটু। রঙ্গরস মিশিয়ে কথা বলা ছিল তাঁদের সহজাত অভ্যাস। এ গুণের কারণেই তাঁরা সব মহলে আলোচিত।
একসময় ঢাকার আদি অধিবাসীর জীবন ছিল বৈচিত্র্যহীন আর একঘেয়েমিতে ভরা। ধর্মীয় ও বৈবাহিক অনুষ্ঠানাদি ছাড়া তাঁদের জীবনে তেমন কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা ছিল না। তাঁরা কেউ ছিল সাধারণ দোকানদার, কেউ রিকশাচালক বা ঘোড়াগাড়ির চালক। অভাব-অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। তবে তাঁদের মন ছিল প্রাণরসে ভরপুর। মজার মজার কাহিনী বলাটা তাঁদের জন্মগত অভ্যাস। এ সহজাত রসবোধের কারণে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে আনন্দের আবহ সৃষ্টি হতো। শত সমস্যায় জর্জরিত জীবনে হাসির ফল্গুধারা বয়ে যেত।
ঢাকার আদি অধিবাসীর এ রঙ্গরসের উদ্দেশ্য ছিল নিজে আনন্দ পাওয়া ও অন্যকে আনন্দ দেওয়া। অনেক সময় যাঁকে নিয়ে রসিকতা করা হতো, তিনিও আনন্দ পেতেন। ঢাকার আদি বাসিন্দাদের এ রসিকতাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। এক ছিল গতানুগতিক রসিকতা, যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। অপরটি হচ্ছে, সংঘটিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক রসিকতা। গতানুগতিক রসিকতার মধ্যে ছিল হোটেলে চায়ের কাপে মাছি পড়ার কথা। হোটেল মালিককে এ বিষয়ে অভিযোগ করলে মালিক উত্তর দিতেন, 'তিন পয়সার চায়ে মাক্ষি পড়ব না তো কি আত্তি (হাতি) পড়ব!' বর্ষাকালে বাড়ির ছাদ দিয়ে পানি পড়লে ভাড়াটিয়া তা মালিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাড়ির মালিক উত্তর দিতেন, 'মাসিক তিন টাকা ভাড়ার বাড়ির ছাদ দিয়া পানি পড়ব না তো কি শরবত পড়ব!' এ রকম বহু রসিকতা আছে, যা ছিল গতানুগতিক রসিকতা।
গতানুগতিক রসিকতার বাইরে ঢাকার আদি অধিবাসীর সবচেয়ে বড় গুণ ছিল তাৎক্ষণিক রসিকতা। যেকোনো ঘটনা বা দুর্ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিকে বাকচাতুর্যের মাধ্যমে প্রকাশ করা ছিল তাঁদের সহজাত গুণ। উত্তর যেন তাঁদের ঠোঁটের কোণে লেগেই থাকত। শুধু ঘটনা ঘটার অপেক্ষা। যেমন_এক বৃদ্ধ মাছ কেনার জন্য মাছের বাজার ঘুরছে। হঠাৎ বৃদ্ধ পিছলে পড়ে গেলে সবাই হো হো করে হেসে ওঠে। তা দেখে বৃদ্ধ উঠে দাঁড়িয়ে মাটিতে সজোরে লাথি মেরে নিজে নিজেই বলতে থাকেন, 'যখন জুয়ান আছিলাম তখন মাটিতে ফালাইতে পারো নাই। অখন বুড়া অইছি, ফালাইবাই তো।' বৃদ্ধের এমন বুদ্ধিদীপ্ত কথা শুনে আবার সবাই হেসে ওঠে। ঢাকার আদি বাসিন্দাদের রসবোধের আরেকটি উদাহরণ_রিকশার চেন বারবার পড়ে যাচ্ছে তাই রিকশারোহী বিরক্ত হচ্ছেন। যাত্রীর এ বিরক্ত দূর করার জন্য রিকশাচালক চেন ওঠানোর সময় নিজে নিজেই বলতে থাকে_'বউ পুরান অইয়া গেলে যেমন মাথা থাইকা ঘুমটা পইড়া যায়, চেইনটাও বউয়ের মতো পুরান হইয়া গেছে, এর লেইগা বারবার পইড়া যাইতাছে। মহাজনেরে কইয়া আইজই চেইনটা বদলাইয়া লমু।'
শোকাচ্ছন্ন পরিবেশ হালকা করার ব্যাপারেও ঢাকার আদি অধিবাসীর জুড়ি নেই। যেমন_এক ব্যক্তি মারা যাওয়ায় তাঁকে কবরস্থানে আম গাছের তলে দাফন করে আসা হয়। মৃতের পরিবারের সবাই এখন শোকে নিমজ্জিত। এ পরিবেশ হালকা করার জন্য মৃতের ছেলের এক বন্ধু বলে ওঠে, 'আবে হালা তোর বাবারে আম গাছের তলায় কবর দিছস ক্যান। রোদে তো কষ্ট পাইব, বটগাছের তলায় কবর দিলে ছায়া বি পাইত। খুশি বি থাকত।' এমন কথায় পরিবেশ নিমিষে হালকা হয়ে যায়।
ঢাকার আদি অধিবাসী কথার মাধুর্য বাড়ানোর জন্য প্রায়ই হালা (শালা) শব্দটি ব্যবহার করে। এমনকি বাবা হালা, মা হালা, পোলা হালাও বলে। যেমন_গৃহশিক্ষক পড়াতে না আশায় এক ছাত্রী তার প্রতিবেশী বান্ধবীকে জানালা দিয়ে বলে, 'সার হালা মনে অইতাছে আইজকা পড়াইতে আইব না। চল লালবাগ কিল্লা দেইখা আহি।'
ঢাকার আদি অধিবাসীর এ রসবোধ সার্থকভাবে ব্যবহার করেছেন প্রয়াত সাহিত্যিক এম আর আখতার মুকুল। তিনি '৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকার আদিবাসীদের বাচনভঙ্গি ও রসবোধের ধারায় চরমপত্র পাঠ করে একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা এবং স্বাধীনতা প্রত্যাশীদের আলোড়িত ও উৎসাহিত করেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত চরমপত্র অনুষ্ঠানটি ছিল তখন সবচেয়ে জনপ্রিয়।
ঢাকার আদি অধিবাসীর এ রসবোধটা অতুলনীয়। বিশ্বের নানা দেশে অঞ্চলবিশেষের আদি অধিবাসীর মধ্যে এ বৈশিষ্ট্য বিরল। সেদিক থেকেও তাঁরা এক গৌরবময় ঐতিহ্যের অধিকারী। তবে সে বৈশিষ্ট্যে আজ ভাটা পড়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাঁরা অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন, শিক্ষা-দীক্ষায়ও এগিয়েছেন। কিন্তু গর্বের সেই রসবোধটা আজ লাখো মানুষের ভিড়ে হারিয়ে গেছে।

বৃষ্টির পানি সংগ্রহে হবে ওয়াটার প্রিজারভেশন সেন্টার

বৃষ্টির পানি সংগ্রহে হবে ওয়াটার প্রিজারভেশন সেন্টার
আমি ২০০৪ সাল থেকে এ প্রকল্পের পরিকল্পনার কাজ শুরু করি। দীর্ঘদিনের সে পরিকল্পনা এখন বাস্তবায়নের পথে। রাজধানীবাসীর দুর্ভোগ কমানো; যেমন জলাবদ্ধতা নিরসন, যানজট নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশদূষণ বন্ধের পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন স্থান হিসেবে হাতিরঝিলকে তুলে ধরাই এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য। নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করতে হয়েছে এ কথা ঠিক, তার পরও এর বেশির ভাগ কাজ এখন শেষ। এর সঙ্গে যুক্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরলস প্রচেষ্টায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।
এখানে কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, সেনাবাহিনীর প্রকৌশল কোর, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা ওয়াসা। আমাদের এ প্রকল্পের আওতায় বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে আশপাশের এলাকা থেকে বৃষ্টির পানি সংগ্রহের জন্য একটি ওয়াটার প্রিজারভেশন সেন্টার স্থাপন করা হবে। এটি সংশ্লিষ্ট এলাকার জলাবদ্ধতা রোধে বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি। এতে শহরের পরিবেশদূষণও বন্ধ হবে।
আমরা চেষ্টা করছি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার, তবে অতিরিক্ত কিছু সময়ও লাগতে পারে। এ প্রকল্পের কিছু অংশ নিয়ে কয়েকটি মামলা ছিল। তার বেশির ভাগই ইতিমধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে। যে কয়টি আছে তা মাস কয়েকের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকার পরও আমাদের কাজ পুরোদমে চলছে। ঈদের বন্ধে আমরা পুরোদমে কাজ করেছি। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কাজও প্রায় শেষের দিকে। তবে বিজিএমইএ ভবন নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমার ধারণা, বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ নগরবাসীর কথা চিন্তা করে বিকল্প জায়গায় তাদের ভবনটি সরিয়ে নেবে। তবে সরকার এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের জানায়নি। প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে আমাদের নাগরিক জীবনে বেশ বড় একটা পরিবর্তন আসবে।

Wednesday, December 1, 2010

পুরাতন কাপড়ের হাট

পুরাতন কাপড়ের হাট

রাজধানীতে ফেরিঅলারা বিভিন্ন পাড়া-মহলস্নায় ঢুকে পুরাতন জামা-কামড়, পস্নাস্টিকের দ্রব্য কিংবা সিলভারসহ শাক-সবজি দিয়ে বিনিময় করে। 'পুরনো জামা-কাপড় আছে?' এই ধরনের হাঁক-ডাক দিয়ে বিভিন্ন বাসাবাড়ির গৃহিনীদের কাছ থেকে এসব বিনিময় করে নিয়ে যায়। কোথায় নিয়ে যায়? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেল পুরান ঢাকার বেচারাম দেউরি, বেগম বাজারে পুরাতন জামা-কাপড় বিক্রির মার্কেট রয়েছে। ওখানে নিয়ে ফেরিঅলারা গৃহিনীদের কাছ থেকে আনা জামা-কাপড় সের দরে বিক্রি করে। আবারও প্রশ্ন জাগে, পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা এই কাপড় নিয়ে কী করে? পুরান ঢাকার বেচারাম দেউরির কাপড়ের মার্কেটে গিয়ে এর উত্তর খুঁজে পাওয়ার জন্য গত রোববার পুরাতন কাপড় পাইকারি ব্যবসায়ী আরেফ আলীর সাথে কথা হয়। বয়স ৬৫ বছর। থাকেন বেগম বাজারে ভাড়া বাড়িতে, পরিবার-সন্তানদের নিয়ে। প্রায় ৫ বছর ধরে পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা করছেন। তার দেশের বাড়ি বিক্রমপুরে। আরেফ আলী বলেন, আমরা ফেরিঅলাদের কাছ থেকে পুরান কাপড় সের দরে ক্রয় করে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে থাকি। আমাদের পাইকারি ক্রেতারা সাধারণত ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার গ্রামগঞ্জের। যেমন রংপুর, দিনাজপুর, সিলেট, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, বরিশাল, খুলনা ইত্যাদি অঞ্চল থেকে পাইকারি ক্রেতা আসে। তারা আমাদের কাছ থেকে ক্রয় করে খুচরা বিক্রি করে। এক প্রশ্নের জবাবে আরেফ আলী জানান, আমরা কাপড়ের মধ্যে প্যান্ট, শার্ট, শাড়ি, লুঙ্গি, মশারিসহ যাবতীয় পুরাতন কাপড় বিক্রি করে থাকি। এখানে প্রায় দু'শত দোকানদার রয়েছে। এই ব্যবসার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় এক হাজার লোক জড়িত। সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার মার্কেট বন্ধ থাকে। তিনি বলেন, সিলভার ফেরিঅলাদের কাছ থেকে পিস হিসেবে অথবা ৩-৪ টাকা কেজি দরে হিসেবে পুরাতন কাপড় ক্রয় করা হয়। অন্য আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সরাসরি পরিচিত লোক ছাড়া অপরিচিত কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কাপড় ক্রয় করা হয় না। এখানে চুরির মাল হলে জরিমানা দিতে হবে। আমাদের দোকানদারদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে যে, অপরিচিত কোনো লোকের কাপড় কেনা যাবে না। কিন্তু যে কোনো সিলভার ফেরিঅলার কাছ থেকে কেনা যাবে। এখানে ৮-১২ ফিটের প্রতিটি দোকান ভাড়া ৩ হাজার টাকা। আর অ্যাডভান্স নিচ্ছে এক লাখ টাকা। আরেফ আলী জানান, এখানে স্বাধীনতার পর এই ব্যবসা খুব জমজমাট ছিল। গত কয়েক বছর ধরে ব্যবসার অবস্থা খারাপ যাচ্ছে। আরেফ আলীর সংসারে ৮ জন সদস্য রয়েছে। বড় মেয়ে ও বড় ছেলে বিয়ে দিয়েছেন। ৩ হাজার টাকা বাসা ভাড়া দিয়ে কোনো রকমে বাস করছেন। তার সংসারে মাসিক খরচ ১৪-১৫ হাজার টাকা। এত টাকা পুরাতন কাপড় বিক্রি করে লাভ হয় না। ছেলে এবং মেয়ের জামাই কিছু অর্থ দিয়ে প্রতি মাসে সহায়তা করে থাকেন।
Source: Daily Ittefaq

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বইয়ের হাট

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বইয়ের হাট

০ লিমন আহমেদ ০

বই মানুষের পরম বন্ধু। নিঃসঙ্গ মানুষ তার নিঃসঙ্গতা কাটাতে হাত বাড়ায় বইয়ের দিকে। বইও আপনজনের মতোই সঙ্গ দেয়। বইপড়া মাবজীবনের বিরাট গুণ। বই পড়া নিয়ে আছে মহামনীষীদের অনেক বিখ্যাত বাণী। তার মধ্যে বহুল পরিচিত আর অন্যতম বাণীটি হচ্ছে 'বই কিনে কেউ দেওলিয়া হয় না, শুধু জ্ঞানার্জনের জন্যই নয়, একাডেমিক শিক্ষার জন্যও আমাদের অনেক বই পড়তে হয়। সংগ্রহ করতে হয় নানা বই। বই বাজার হিসেবে রাজধানীতে বিভিন্ন মার্কেটে অনেক বাজারই বিখ্যাত। তবে নিজেদের কর্মব্যস্ততার জন্য একটি বই কিনতে অনেক দিন সময় করতে পারে না অনেকেই। দেখা যায় শুক্রবার দিন কাজ তেমন না থাকলেও ঐদিন কাছের বই বাজারটি বন থাকে। তাছাড়া একসাথে বিভিন্ন ধরনের বই পাওয়াটাও কঠিন হয় প্রায় সময়। এসব সমস্যা বিবেচনা করেই এলিফ্যান্ট রোডের কাঁটাবনের কনকর্ড এম্পোরিয়াম শপিং কমপেস্নক্সে গড়ে উঠেছে বইয়ের হাট। গত ৩০ এপ্রিল থেকে এই হাটের পথচলা শুরু। হাটটির বিশেষত্ব হলো যাবতীয় বিষয়ের বইয়ের সমাহার নিয়ে প্রতি শুক্রবার এই বইয়ের হাট। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, চিকিৎসাশাস্ত্র, একাডেমিক বিষয়সমূহসহ প্রায় সব বিষয়ের বই পাওয়া যাবে এখানে। আছে নবীন-প্রবীণ, উঠতি-বিখ্যাত আর জনপ্রিয় সব লেখকের বই। প্রিয়জনকে নিয়ে ছুটির দিনে চলে যেতে পারেন আপনার বইয়ের নতুন ঠিকানা প্রতি শুক্রবারের বইয়ের হাটে। বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে এই বইয়ের বাজার। ইতিমধ্যেই ক্রেতা আর বইপ্রেমীদের নজর কেড়েছে বিশেষ এই বইয়ের হাট। আপনিও চলে যেতে পারেন। সুন্দর পরিবেশের পাশাপাশি বিক্রেতাদের ব্যবহারই আপনাকে মগ্ধ করবে। কনকর্ড এম্পোরিয়াম শপিং কমপেস্নক্সের কিছু বইয়ের দোকান মালিকদের আয়োজনে শুক্রবারের বইয়ের হাট। দোকানগুলো যথাক্রমে মধ্যমা, সংহতি, নান্দনিক, অগ্রদূত, মুক্তচিন্তা, সমগ্র প্রকাশনা, বইপত্র, বিভাস, বদ্ব্বীপ, বৈঠকখানা, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ, যেহেতু বর্ষা, ওসডার পাবলিকেশন্স, সংঘ প্রকাশন, বর্ষাদুপুর, গদ্যপদ্য, কিশোরমেলা প্রকাশনী, তক্ষশিলা, ঋতি্বক, বলাকা, পাঠসূত্র, গতি প্রকাশন, যুক্ত, শ্রাবণ প্রকাশনী, পড়ুয়া ও ছবির দোকান। রাজধানী ঢাকা নগরীর ২৫৩-২৫৪ এলিফ্যান্ট রোডের (কাঁটাবন) কনকর্ড এম্পোরিয়াম শপিং কমপেস্নক্সেই গড়ে ওঠা এই বইয়ের হাট নগরবাসী বইপ্রেমীদের সাথে বইয়ের সম্পর্ক বাড়াবে বলেই আশা করা যায়। বইয়ের সানি্নধ্য মানুষকে সুন্দর করে, শুদ্ধ করে, মার্জিত করে। উত্তম মানুষের জীবন গড়তে আমাদের সকলের বেশি বেশি বই পড়া দরকার। তেমনি যারা শিক্ষার্থী, তাদেরও প্রয়োজনীয় বইটি দরকার হাতের নাগালে উপযুক্ত মূল্যে। সবকিছুর সহজ ব্যবস্থায় নিয়োজিত প্রতি শুত্রবারের বইয়ের হাট।

জাদুঘর, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ও বিনোদনকেন্দ্রের সময়সূচি ও ফোন নম্বর

জাদুঘর, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ও বিনোদনকেন্দ্রের সময়সূচি ও ফোন নম্বর

ডাকসু

প্রতিষ্ঠাকাল : ১৯৯১ প্রকৃতি, অবস্থান : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ডাকসু ভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। লক্ষ্য, উদ্দেশ্য : বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা সম্পর্কে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে অবহিত করা।

সময়সূচি : সপ্তাহের প্রতিদিন খোলা যোগাযোগের ঠিকানা : ডাকসু সংগ্রহশালা, ডাকসু ভবন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

আহসান মঞ্জিল জাদুঘর প্রতিষ্ঠাকাল : ১৯৯২ প্রকৃতি, অবস্থান : আহসানুলস্নাহ রোড, নওয়াব বাড়ি, ঢাকা।
লক্ষ্য, উদ্দেশ্য : ঢাকার নবাবদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও তাদের অবদান দেশ ও জাতির সামনে তুলে ধরা। গ্যালারি : ৩১টি কক্ষে ২৩টি প্রদর্শনী সময় সূচি : শনি-বুধবার, সকাল ৯টা-বিকাল ৫টা (অক্টোবর-মার্চ)। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত (এপ্রিল-স্বেম্বের)।
সাপ্তাহিক বন্ধ : বৃহস্পতিবার ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন সমূহ।
প্রবেশ মূল্য : দুই টাকা।
যোগাযোগ ঠিকানা : পরিচালক, আহসান মঞ্জিল জাদুঘর, নওয়াব বাড়ি, ঢাকা-১০০০, ফোন : ৭৩৯১১২২, ৭৩৯৩৮৬৬।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর
প্রতিষ্ঠাকাল : ১৯৯৪ প্রকৃতি, অবস্থান : বেসরকারি, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা।
লক্ষ্য, উদ্দেশ্য : স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন দিক ও বাঙালি জাতির ইতিহাস বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। গ্যালারি : নীচ তলায় দু'টি কক্ষ যেখানে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য সংগ্রামী জীবনের সচিত্র প্রদর্শনী, দ্বিতীয় তলায় তিনটি কক্ষে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহূত জিনিসপত্র ও পারিবারিক জীবনের সচিত্র প্রদর্শন।
সময়সূচি : বৃহস্পতিবার থেকে মঙ্গলবার-সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা।
সাপ্তাহিক বন্ধ : বুধবার প্রবেশ মূল্য : দুই টাকা যোগাযোগ ঠিকানা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু ভবন, বাড়ি ১০, সড়ক-১২, (পুরাতন ৩২), ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা-১২০৯, ফোন : ৮১১০০৪৬।

প্রয়োজনীয়তা

বিদু্যৎ বিভ্রাট এখন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গি। প্রতিনিয়ত বিদু্যতের অঘটন-ঘটন যেনো ঘটা করেই আমাদের জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলছে। শেষ ভরসা আইপএস দিয়েও শেষ রক্ষা হচ্ছে না। কারণ আইপিএস চার্জ হতে যতটুকু সময় নিরবিচ্ছিন্ন বিদু্যৎ সরবরাহ প্রয়োজন তার সিকি ফোটাও মেলে না। কিন্তু বিদু্যৎচ্ছিন্ন হয়ে যাবার আগেই যদি টের পাওয়া যায় ঠিক কখন কখন বিদু্যৎ বন সরবরাহ বন থাকবে তাহলে অন্তত কিছু কাজ গুছিয়ে রাখা সম্ভব হবে। এখানে দেয়া হলো এমন কিছু প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর:
হেড অফিস: ডেসকো বাড়ি ৩, সড়ক ২৪, বস্নক কে, বনানী মডেল টাউন, বনানী, ঢাকা ১২১৩। ফোন: ৮৮৫৯৬৪২, ৮৮৬০৩৪১।

হিএ, (এম এন্ড ডি অপারেশন) ফোন: ৮৮৫৫২৪৪, ৯৮৯৫১১৭

কল্যাণপুর ডিভিশন ফোন: ৯০১৪৮৪৬, ৯০০৭৭০৯

কাফরুল ডিডিশন ফোন: ৮০২১৩৪৪

পলস্নবী ডিভিশন ফোন: ৮০৫২০১৬, ৯০০২০২৬

গুলশান ডিভিশন ফোন: ৮৮৫৯৪৯৩, অভিযোগ:৯৮৯৫০৪৫

বারিধারা ডিভিশন ফোন: ৮৮৫৫২৪৪, অভিযোগ: ৯৮৯৫১১৭

উত্তরা ডিভিশন ফোন: ৮৯৫৯১৪৫, অভিযোগ: ৮৯১৯৫৭৪

দক্ষিণখান ডিভিশন ফোন: ৮৯১১২৮৯

অভিযোগ: ৮৯১২৩৯৮

টঙ্গী (পূর্ব) ডিভিশন ফোন: ৮৯০০১৬৩,

অভিযোগ: ৯৮০১২৪৪

টঙ্গী (পশ্চিম) ডিভিশন ফোন: ৯৮০২৭১০,

অভিযোগ: ৯৮০১০৮০

বলধা গার্ডেন

বলধা গার্ডেন

যান্ত্রিক নগরীতে একটুকরো সবুজ ছায়া

মেহেদী হাসান

১৯১৩ সালে নোবেল বিজয়ের পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল বলধা গার্ডেনে। বলধার ক্যামেলিয়ার রূপে মুগ্ধ হয়েই রবীন্দ্র অমর্ত সেনকেও সংবর্ধনা দেয়া হয় এখানে। রবীন্দনাথের মতো বলধার রূপে মুগ্ধ হন অমর্ত সেনও। তিনি অবশ্য প্রেমে পড়েন এখানকার ক্যাকটাস গ্যালারির। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রখ্যাত ব্যক্তি আসেন এই গার্ডেনে। তাঁরাও বিমোহিত হয়েছেন এর অপার সৌন্দর্যে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখানে বেড়াতে এসে অনেকেই অসচেতনভাবে নষ্ট করছে অনেক দুর্লভ গাছ। ফলে বাগানের সৌন্দর্যহানি হচ্ছে। বর্তমানে বাগানের সর্বত্র দেখা যায় অযত্নের ছোঁয়া। দর্শনার্থীদের ফেলে-দেয়া চিপসের প্যাকেট, চকোলেটের খোসা, সিগারেটের ফিল্টার বাগানের যেখানে-সেখানে পড়ে রয়েছে আর ভাসছে শঙ্খনদ পুকুরের পানিতে, যা এর সৌন্দর্য ও পরিবেশকে মস্নান করছে। একই সঙ্গে অনেক দুর্লভ গাছও হারিয়ে যাচ্ছে বাগান থেকে। এ ছাড়া চারপাশ ঘিরে উঁচু দালানকোঠা ওঠায় বাগানের গাছপালা সূর্যের আলোর অভাবে বিপন্নের পথে। উঁচু ভবন আর পাকা রাস্তার কারণে নিচু হয়ে গেছে বাগানের মাটির স্তর। কারখানার বর্জ্য, দর্শনার্থীদের ফেলে-যাওয়া পলিথিন, বর্জ্য ছাড়াও সিবিলি অংশে অত্যধিক লোকসমাগম ও শঙ্খনদ পুকুরে প্লাস্টিক বর্জ্য, প্লাস্টিক ক্যান প্রভৃতি পরিবেশপরিপন্থী দূষণে জর্জরিত হয়ে পড়েছে ঐতিহাসিক এ বলধা গার্ডেন।

বলধা গার্ডেনে 'সাইকি' ও 'সিবিলি' নামে দুটি অংশ রয়েছে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির দুর্লভ বৃক্ষ, বিরুৎ আর গুল্ম নিয়ে সাজানো হয়েছে সাইকি ও সিবিলি অংশ। সাইকি আর সিবিলি শব্দ দুটি গ্রিক ভাষা থেকে নেয়া। সিবিলি অর্থ 'প্রকৃতি', যেখানে সবুজের রূপ আর মহিমা থাকে। সাইকি মানে 'আত্মা'। সব মিলিয়ে দাঁড়ায় 'প্রকৃতির আত্মা'। বলধা গার্ডেন যেন রাজধানী ঢাকার বুকে প্রকৃতির আত্মারই প্রতিচ্ছবি। জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ১৯৪৩ সালের ১৩ আগস্ট তাঁর মুতু্যর আগেই পূর্ণতা পায় বলধা গার্ডেন।

১৯০৯ সালে ৩৬ শতাংশ অর্থাৎ ৩.৩৮ একর জমির ওপর সাইকি অংশের কাজ শুরু হয়। ১৯৩৬ সালের মধ্যে এটি সম্পন্ন হয়। ১৯৩৮ সালে শুরু হয় বাগানের উত্তর অংশ সিবিলির কাজ। ১৯৪৩ সালে সেটিও শেষ হয়। আবার বাগানের কলেবর বৃদ্ধির জন্য ঢাকার বিখ্যাত ব্যবসায়ী লাল মোহনের কথাও জানা যায়, যিনি 'শঙ্খনিধি' নামে পরিচিত ছিলেন। জমিদারের কাছ থেকে 'শঙ্খনাদ' পুকুর ও সূর্যঘড়িসহ একটি অংশটি কিনে নেন। ওই অংশের খেজুর ও কাঠবাদামগাছটি এখনো বেঁচে আছে।

বলধার গার্ডেনে রয়েছে প্রায় ২৫,০০০ উদ্ভিদ। এতে উদ্ভিদ প্রজাতির সংখ্যা ৬৭২টি। বিভিন্ন অর্কিড, ক্যাকটাস, জলজ উদ্ভিদসহ বলধা গার্ডেনে যে গাছপালা আছে, তা শুধু এ দেশের জন্যই বিরল সম্পদ নয়, বরং বিশ্বের সব উদ্ভিদ বিশারদ ও গবেষকদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর প্রায় অর্ধশতাধিক দেশের মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য বৃক্ষের সন্ধান মেলে এখানে।

আগে এখানে যে গোলাপের বাগান ছিল তাতে প্রায় ২০০ প্রজাতির গোলাপ ছিল, যার অধিকাংশই এখন বিলুপ্ত। তবে পরিচর্যাকারীদের বরাত দিয়ে জানা যায় বর্তমানে এখানে আরো গাছ লাগানো হচ্ছে। বর্তমানে বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে নতুন প্রজাতির কিছু উদ্ভিদ সংযোজন করা হয়েছে। বার্ডস অব প্যারাডাইস (অর্কিড জাতীয়), এলাচিফুল, সেঞ্চুরি প্ল্যান্ট, কদম, চালতা, আফ্রিকান টিউলিপ, সোনালু, কৃষ্ণচূড়া, ভূর্জপত্র ইত্যাদি গাছ তো আছেই এমনকি প্রাচীনকালে লেখার কাজে ব্যবহূত হতো এমন গাছও এখানে রয়েছে। আরো আছে আকর্ষণীয় আমাজান লিলি। বলধা গার্ডেনের অভ্যন্তরের পুকুরটি সাধারণত জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাজান লিলির বাহারে প্রস্ফুটিত থাকে। বছরের বাকি ছয় মাস আমাজান লিলি না থাকলেও পুকুরের বাঁধানো ঘাঁটে বসে পাখিদের কল-কাকলিতে মন উদাস হয়ে যাবে যে কারো। একসময়কার আকর্ষণ সূর্যঘড়িটি বর্তমানে নষ্ট, তবে তা সংরক্ষিত আছে। বাগানের পূর্বদিকেই রয়েছে জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর সমাধি, প্রকৃতির নিপুণ শিল্পকে প্রত্যক্ষ করতে যিনি গড়ে তুলেছিলেন বলধা গার্ডেন।

বলধা গার্ডেনের সাইকি অংশটি সংরক্ষিত। পুরনো মুচকুন্দচাঁপা, ডেউয়া, নাগলিঙ্গম, কনকচাঁপা, স্বর্ণচাঁপা, তেঁতুল ইত্যাদি গাছে ঝুলে থাকতে দেখা যায় অসংখ্য বাদুড়। আগত দর্শনার্থীদের জন্য এরা বাড়তি উপভোগের বিষয় হয়ে উঠেছে। বলধার সাইকি অংশে ৭০ বছর বয়সি শারদ মলি্লকা গাছটিতে এখনো সুগন্ধি সাদা পাপড়ির ফুল ফঁটতে দেখা যায়। জাপান থেকে আনা হয়েছিল ক্যামেলিয়াকে। তার বাহারি রূপ বলধাকে দিয়েছে বাড়তি আকর্ষণ। বিভিন্ন রঙের ক্যামেলিয়া ফুটতে দেখা যায় বাগানে। সাদা, গোলাপি ও লাল রঙের ফুল সাধারণত ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ফুটে থাকে। লতাজবা, ক্যানাংগা, কনকসুধা, কণ্টকলতা, পেপিরাস, কর্ডিয়া, পারুল, পোর্টল্যান্ডিয়া, ওলিয়া তো আছেই। লতাজবারা আবার বেয়ে ওঠে অন্য গাছে, শিমগাছের মতো দোল খায় বাতাসে। চিরসবুজ দৃষ্টিনন্দন স্রাব-জাতীয় উদ্ভিদ অঞ্জন। নীল রঙের ছোট ফুল ফোটে অঞ্জনে। প্রায় ৬০ বছর বয়সি দুটি গাছ রয়েছে সিবলি অংশে। আমাদের দেশে লাল ফুলের অশোকগাছ দেখা যায়। তবে বলধায় স্থান করে আছে রাজ অশোক। কমলা রঙের ফুলে রাজ অশোকের গাছ ছেয়ে যায়। আবার স্বর্ণ অশোকও সোনালি ফুলে ভরে ওঠে। এ ছাড়া জাকুনিয়া, ধুপ, আক্রোকারপাস, রুপেলিজা, হিং, বার্মা শিমুল, ব্রুনসফেলিয়া, নাগলিঙ্গম ইত্যাদি গাছও রয়েছে এখানে। বাগানের অর্কিড হাউসে প্রায় ২০০ জাতের অর্কিড সংরক্ষণ করা আছে। বলধা গার্ডেনকে বৃক্ষ, জলাশয়, অর্কিড হাউস ও অন্যান্য উদ্ভিদ কর্ণার মিলে এক অপূর্ব উদ্যান বলা চলে। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর কর্মের সহযোগিতায় ছিলেন আরেক প্রকৃতি প্রেমিক অমৃত আচার্য। বলধা গ্রামের জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী এসেছিলেন ঢাকার ওয়ারীতে। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একটি কালচারাল হাউস। ধীরে ধীরে এটি ঘিরেই গড়ে ওঠে একটি উদ্যান। বলধার জমিদার উদ্যানটা গড়েছিলেন বলেই ওটা বলধা গার্ডেন নামে পরিচিতি পায়। ঢাকা মহানগরীতে বলধা গার্ডেন ছাড়া তেমন কোনো সার্থক উদ্যান এর আগে দেখা যায়নি। ১৯০৯ সালে এটি গার্ডেন হিসেবে তৈরি হয়। বহু প্রজাতির উদ্ভিদের সমাহার গার্ডেনটির প্রধান বৈশিষ্ট্য।

গাজীপুরের বলধা এস্টেটের মূল জমিদার ছিলেন খগেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী। তার কোনো সন্তান-সন্ততি ছিল না। তাই তাঁর সম্পত্তি বন্ধুর ছেলে নরেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরীকে দিয়ে যান। জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ১৮৮০ সালে গাছার জমিদার মহিন চন্দ্রের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বয়স যখন ১৪ বছর, তখন নিঃসন্তান বলধার জমিদার তাঁকে দত্তক হিসেবে গ্রহণ করেন। পরে নরেন্দ্র নারায়ণই হন বলধার জমিদার।

বলধা গ্রাম এখন গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়াল বারিয়া ইউনিয়নের দড়ি বলধা মৌজায়। বলাধার জমিদার গ্রামের বাইরে দার্জিলিং, কলকাতা, লক্ষ্মৌ, পুরী ও ঢাকার ওয়ারীতে বাড়ি তৈরি করেন। তিনি ঢাকার ওয়ারীর বাড়িটির নাম দিয়েছিলেন কালচারাল হাউস; পরে সেটি পরিচিতি পায় বলধা হাউস নামে। কালচারাল হাউসের সাথে বলধা লাইব্রেরিও গড়ে তোলা হয়েছিল।

১৯২৫ সালে নারায়ণ চৌধুরী বলধা গার্ডেনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলধা জাদুঘর। সেটি ছিল তার পারিবারিক জাদুঘর। নরেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী ছিলেন সংগীতরশিক, প্রকৃতি প্রেমিক ও দুর্লভ বস্তুর সংগ্রাহক। তিনি যেখানেই যেতেন, সেখান থেকেই কোনো-না-কোনো দুর্লভ বস্তু সংগ্রহ করতেন। তাই তাঁর ওই জাদুঘরটি ছিল মুদ্রা, ভাস্কর্যসহ প্রায় ৪০০০ নির্দশনের সংরক্ষণাগার। বর্তমানে তাঁর সেসব সংগ্রহ ঢাকার জাতীয় জাদুঘরে শোভা পাচ্ছে। এ ছাড়া ১৯৪০ সালে জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরীর একমাত্র ছেলে নৃপেন্দ্র নারায়ণ রায় চৌধুরী আততায়ীর হাতে নিহত হলে জমিদার গভীরভাবে শোকাহত হন। ছেলে হারানোর শোকে ১৯৪৩ সালের ১৩ আগস্ট তিনিও পরলোকগত হন। বাবা ও ছেলের স্মৃতিস্তম্ভ বলধা গার্ডেনের সিবলি অংশে সংগৃহীত রয়েছে।

১৯৪৩ সালে নরেন্দ্র নারায়ণের মৃতু্যর পরপর মস্নান হতে থাকে বলধার অপরূপ সৌন্দর্য। তবে ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পরও বাগানের অবয়ব প্রায় অবিকৃতই ছিল। বাগানটি সংরক্ষণ করার জন্য ১৯৫১ সালে কোর্ট অব ওয়ার্ডস এবং ১৯৬২ সালে বনবিভাগের অধীনে ন্যাস্ত করা হয়।

এই যান্ত্রিক ঢাকা নগরীতে একটুকরো সবুজ ছায়াঘন প্রশান্ত পরিবেশ জাগিয়ে রাখতে বলধা গার্ডেনকে বাঁচিয়ে রাখা অতীব প্রয়োজন। মাটি ভরাট, সুষ্ঠু বর্জ্যব্যবস্থাপনা, নতুন অবকাঠামো তৈরি, নতুন নতুন চারা রোপণ, সযত্ন রক্ষণা-বেক্ষণ আর গণসচেতনতাই এ ঐতিহাসিক নিদর্শনটিকে স্বমহিমায় বাঁচিয়ে রাখতে পারে।

নগর সভ্যতায় বিতাড়িত ফুল কচুরিপানা

নগর সভ্যতায় বিতাড়িত ফুল কচুরিপানা

রণদীপম বসু

সাত-আট বছর বয়সি স্কুলপড়-য়া শিশুকে এক জিজ্ঞেস করলাম, বাবু, গোলাপ চেন? অনায়াসে উত্তর দিল, 'হঁ্যা'। কী রকম দেখতে? 'লাল'! কচুরিপানার ফুল দেখেছ? এবার তার চোখে অচেনা আভা। কাদা-পানির উত্তরাধিকারী বাঙালি সন্তান কচুরিপানার ফুল চেনে না। এ শিশুর দোষ কি! সে জানবে কোত্থেকে! অফিসের সহকর্মী থেকে শুরু করে পরিচিত-অপরিচিত অনেকের কাছেই জানতে চাইলাম, এখন ঢাকা নগরীর কোথায় গেলে কচুরিপানার ফুল দেখা যাবে? তারা নির্দ্বিধায় বলে দিলেন, যেকোনো মজা পুকুর বা ডোবায় গেলেই তো দেখা যায় ! সেটা কোথায়, কাছাকাছি একটা লোকেশান বলেন ? সুনির্দিষ্ট প্রশ্নে এবার সবারই আমতা-আমতা ভাব। তাই তো !

হালকা বেগনি চ্যাপ্টা পাপড়ির চিরপরিচিত ফুলের উজ্জ্বল বেগনি আভাই তো হেমন্তের আগমনী সুর। এই ফুল চেনে না এমন বাঙালি কি আছে ! গ্রাম-বাংলা-শহর-নগরের এঁদো-ডোবায় জলজ উদ্ভিদ হিসেবে বিরক্তিকরভাবে এতো বেশি জন্মায় বলেই হয়তো চিরপরিচিত এ ফুলটির সৌন্দর্য ও গঠন বৈশিষ্ট্য আমরা অনেকেই গভীরভাবে খেয়াল করি না। কচুরিপানা ফুল হিসেবে আমরা যেটিকে দেখি, তা স্বাভাবিকভাবে ছয় পাপড়ি বিশিষ্ট পাঁচ-ছয়টি ফুল নিয়ে একটি গুচ্ছ ফুল। এবং ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যাবে যে গুচ্ছের প্রতিটা ফুলের ছ'টির মধ্যে একটিমাত্র পাপড়ির বুকে নীলচে আল্পনার মাঝখানে একটি চৌকোনা হলদে টিপ। প্রকৃতির বিচিত্র খেয়ালের অসাধারণ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এ ফুলটি আজ অনেককিছুর মতোই এই নগরী থেকে বিতাড়িত প্রায়।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্যামেরাটা কাঁধে নিয়ে কচুরিপানা ফুলের খোঁজে বেরিয়ে গেলাম। ঢাকা নগরীর আগ্রাসী ক্ষুধায় পুকুর ডোবা জলাশয় উধাও। শেষপর্যন্ত সম্ভাব্য স্পট হিসেবে বোটানিক্যাল গার্ডেনই বেছে নিলাম। বিশাল এলাকা তন্নতন্ন খুঁজে পরিত্যক্ত ডোবায় কচুরিপানা পেলেও এদের ফুলহীন বন্ধ্যা অস্তিত্ব জানিয়ে দিলো এ নগর সত্যিই প্রকৃতির স্বভাববিমুখ। অবশেষে গার্ডেনের শেষ প্রান্তে বিমান বাহিনীর সংরক্ষিত এলাকার পাশ ঘেঁষে নির্জন পথ মাড়িয়ে আমিন বাজারগামী বেড়িবাধে উঠলাম ফেরার উদ্দেশ্যে। বিষণ্ন মনে রিক্সা বা টেম্পো কিছু একটা খুঁজতে খুঁজতে আনমনে হাঁটছি। হঠাৎ চমকে উঠলাম-ইউরেকা! ওই তো! ঝটকায় ক্যামেরাটা তুলেই ক্লিক ক্লিক। কিন্তুঃ। আবহই বলে দিচ্ছে আর কয়েকটা দিন পর এই শেষ চিহ্নটাও থাকবে না আরেকটা ক্লিক-বন্দী হবার অপেক্ষায়। নগরীর পাইথন-ক্ষুধা এই ছোট্ট ডোবা গিলে আরো বহুদূরগামী এখনঃ।

Monday, November 1, 2010

জরুরি ফোন নম্বর (তিতাস গ্যাস, ডেসকো, ডিপিডিসি ও ওয়াসা)

জরুরি ফোন নম্বর (তিতাস গ্যাস, ডেসকো, ডিপিডিসি ও ওয়াসা) 

ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কম্পানি (ডেসকো)
লোডশেডিং সংক্রান্ত অভিযোগ : ৮০২৩১৫৮, ৮০১১৭১৮, ৯০০২০২৬।
অভিযোগ কেন্দ্রের নম্বর
পল্লবী : ৯০০১০৫১; কাফরুল : ৯০০১১১৯; কল্যাণপুর-আগারগাঁও : ৯১৪৪৭১৪; গুলশান : ৯৮৯৫০৪৫; বারিধারা : ৯৮৯৫১১৭; উত্তরা : ৮৯১৪২৬৫; দক্ষিণখান : ৮৯১২৩৯৮; টঙ্গী পূর্ব : ৯৮০১২৪৪, ৯৮১৫৯০৪; টঙ্গী পশ্চিম : ৯৮০১০৮০।
ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানি (ডিপিডিসি)
গ্রাহকসেবা দপ্তর উত্তর এলাকা
সাতমসজিদ : ৯১১৯৮৯০; ধানমণ্ডি : ৯১৪৩২১০; শ্যামলী : ৯১৪৬০৪৩; জিগাতলা : ৯১৪৪১৩৮; পরীবাগ : ৮৬১৩৮২৭, ৮৬২১৭৯০; আজিমপুর : ৯৬৭৪৪৮২; লালবাগ : ৯৬৬১৯৭৯; কামরাঙ্গীরচর : ৯৬৭৭৬১১; তেজগাঁও : ৯৮৯১৮৮৭, ৯৮৬১৬৩৮; মগবাজার : ৯১১৯৬৫৮; শেরেবাংলা নগর : ৮১৫১২৪৭; কাকরাইল : ৯৩৩৫১৭৮; সেগুনবাগিচা : ৭১৭০২২৫; রাজারবাগ : ৯৩৫৩৭৭৭; খিলগাঁও : ৭২১২২৪৪; বাসাবো : ৭২১৮৪৯২।
দক্ষিণ এলাকা
কমলাপুর : ৯৩৫২২৫৬-৭; মানিকনগর : ৭৫৪৮৮৫৫; মুগদাপাড়া : ৭২৯০৮৮০; কাজলা : ৭৫৪৪৩৪৩; নারিন্দা : ৭১৬৪৯৮৮; বাংলাবাজার : ৯৫৬২৩৫০; স্বামীবাগ : ৭১৭৭০৫৫; বংশাল : ৭১৬৫৯২২; পোস্তগোলা : ৭৪১১৬২১; জুরাইন : ৭৪১১৯২৮; শ্যামপুর : ৭৫১১৪৫৫; ফতুল্লা : ৭৬৭০২৩৩; ডেমরা : ৭৬৯৪২০৯।
তিতাস গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ
কম্পানি লিমিটেড
জরুরি গ্যাস নিয়ন্ত্রণ : ৯৫৬৩৬৬৭-৮, প্রধান কার্যালয়, রেডিও রুম; ৮১১৯৩৭৯; উপমহাব্যবস্থাপক (বিতরণ) : ৯৫৬৩৬৭১, ০১১৯৯৮১৯১৭৪
ব্যবস্থাপক (জরুরি গ্যাস নিয়ন্ত্রণ) : ০১১৯৯৮০৯৩৩৯।
জোন-১ : টিকাটুলী
রাজস্ব : ৭১২৪০৭৪ (আবাসিক), ৭১২৪২২৯ (শিল্প/বাণিজ্য), বিক্রয় : ৭১২৪১৭৪ (আবাসিক, দ্রুত সেবা কার্যক্রম), ৭১২৪৬২৫ (শিল্প/বাণিজ্য)।
জোন-২ : মতিঝিল
রাজস্ব : ৯৫৬১২৬১ (আবাসিক), ৯৫৫৪৭৯২ (শিল্প/বাণিজ্য); বিক্রয় : ৯৫৬১২৯৩ (আবাসিক), ৭১৬০২৭৬ (শিল্প/বাণিজ্য); দ্রুত সেবা কার্যক্রম : ৯৫৫৬৮০৮।
জোন-৩ : লালমাটিয়া
রাজস্ব : ৯১১৭২১৫ (আবাসিক), ৯১৩২৪৯৮ (শিল্প/বাণিজ্য); বিক্রয় : ৯১১৩৯০৩ (আবাসিক, দ্রুত সেবা কার্যক্রম), ৯১৩২৩২৪ (শিল্প/বাণিজ্য)।
জোন-৪ : মধ্য বাড্ডা
রাজস্ব : ৮৮২১০৩৮ (আবাসিক), ৯৮৯৯১৭৭ (শিল্প/বাণিজ্য); বিক্রয় : ৮৮২৪৯৯৩ (আবাসিক, দ্রুত সেবা কার্যক্রম), ৯৮৮৮৯৪৭ (শিল্প/বাণিজ্য)।
জোন-৫ : মিরপুর
রাজস্ব : ৮০১৪১৩৩ (আবাসিক), ৯০১০৭৫১ (শিল্প/বাণিজ্য); বিক্রয় : ৮০১৪১৩২
(আবাসিক), ৯০০৭০০৪ (শিল্প/বাণিজ্য);
৮০২৩৪০১ (দ্রুত সেবা কার্যক্রম)।
জোন-৬ : মতিঝিল
রাজস্ব : ৯৫৬৩৬৬৯ (আবাসিক), ৭১৬৯৫২৪ (শিল্প/বাণিজ্য); বিক্রয় : ৭১৬৯৩৯৬ (আবাসিক), ৯৩৪৯৬৬৫ (শিল্প/বাণিজ্য); দ্রুত সেবা কার্যক্রম : ৯৫৫৬৮০৮।
জোন-৭ : জিনজিরা
রাজস্ব : ৭৭৭১৬৮৭ (আবাসিক, দ্রুত সেবা কার্যক্রম)।
ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন
কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা)
প্রধান কার্যালয়
কন্ট্রোল রুম, ওয়াসা ভবন : ৮১১০৫৯৬।
সিস্টেম অপারেশন অ্যান্ড কন্ট্রোল বিভাগ : ৯৩৫৮১৯২ (অভিযোগ জানাতে ২৪ ঘণ্টা ফোন করা যাবে)।
জোন-১ : নবাবপুর রোডের পূর্ব দিক, উত্তরে বাসাবো থেকে দক্ষিণে গেণ্ডারিয়া, পূর্বে যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, মানিকনগর।
ঠিকানা : ফকিরাপুল স্টিল ট্যাংক কম্পাউন্ড, ফোন : ৯৩৫৬৯৫৭, ৯৩৫৮৩৯৭।
জোন-২ : নবাবপুর রোডের পশ্চিম দিক, হাজারীবাগ, নবাবগঞ্জ, উত্তরে নীলক্ষেত, আজিমপুর থেকে দক্ষিণে বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত।
ঠিকানা : ওয়াটার ওয়ার্কস কম্পাউন্ড, চাঁদনীঘাট, ফোন : ৭৩১৮২৯৫, ৭৩১২৫৮৯।
জোন-৩ : দক্ষিণে নীলক্ষেত, পূর্বে কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, উত্তরে আগারগাঁও রোড, শ্যামলী, পশ্চিমে বেড়িবাঁধ।
ঠিকানা : লালমাটিয়া স্টিল ট্যাংক কম্পাউন্ড, ৮১২০২০৫, ৮১২০১৯২।
জোন-৪ : দক্ষিণে আগারগাঁও, পূর্বে রোকেয়া সরণি ও পল্লবী প্রধান সড়ক, পশ্চিমে গাবতলী, উত্তরে বেড়িবাঁধ ও পল্লবী।
ঠিকানা : মিরপুর বাঙলা কলেজ, ফোন : ৯০০৩৮৪২, ৯০০০৫১৯।
জোন-৫ : দক্ষিণে কারওয়ান বাজার, তেজগাঁও, পূর্বে গুলশান, উত্তরে বনানী, পশ্চিমে কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ ও বিমানবন্দর সড়ক।
ঠিকানা : মহাখালী টিবি হাসপাতাল গেট, ফোন : ৯৮৯৯৩৩৮, ৯৮৯৯৩৪০।
জোন-৬ : পূর্বে নন্দীপাড়া, দক্ষিণে স্টেডিয়াম, পশ্চিমে পরীবাগ, উত্তরে বাংলামোটর-মগবাজার-রামপুরা-বনশ্রী।
ঠিকানা : ফকিরাপুল স্টিল ট্যাংক কম্পাউন্ড, ফোন : ৮৩৫০২৪৫, ৯৩৫৮৬১৫।
জোন-৭ : ডিএনডি এলাকা,
ঠিকানা : ফকিরাপুল স্টিল ট্যাংক কম্পাউন্ড, ফোন : ৯৩৫৬৯৫৭, ৯৩৩২২৮৫।
জোন-৮ : পশ্চিমে বারিধারা, দক্ষিণে রামপুরা ব্রিজ, পূর্বে বাড্ডা, উত্তরে জোয়ার সাহারা, কুড়িল ও কুড়াতলী।
ঠিকানা : নতুনবাজার, বাড্ডা, ফোন : ৮৮৩৪২৩৯, ৮৮৩৩৭১৯।
জোন-৯ : উত্তরখান, দক্ষিণখান, নিকুঞ্জ, খিলক্ষেত ও উত্তরা মডেল টাউন।
ঠিকানা : মহাখালী টিবি গেট, ফোন : ৯৮৯৯৩৩৮, ৯৮৯৯৩৪০, ০১৮১৫৫৯৮২২৮, ০১৮১৯২০৮৯০২।
জোন-১০ : পশ্চিমে রোকেয়া সরণি ও পল্লবী প্রধান সড়ক, দক্ষিণে বিজয় সরণি, পূর্বে কচুক্ষেত, সেনানিবাস, উত্তরে মিরপুর সিরামিক।
ঠিকানা : মিরপুর বাঙলা কলেজ, ফোন : ৯০০৫৯৪৮, ৯০০৫৯৩৮।

Sunday, October 31, 2010

নগরীর গ্রন্থাগার

নগরীর গ্রন্থাগার

জ্ঞানপিপাসুদের সঠিক স্থান

কটি জাতির উন্নতি নির্ভর করে শিক্ষার ওপর। শুধু পুঁথিগত শিক্ষাই নয়, পাশাপাশি প্রয়োজন আরো নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা। সেই জ্ঞান অর্জনের জন্য গ্রন্থাগারের ভূমিকা অপরিসীম। নগরীতে সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে সাধারণ গ্রন্থাগার আছে সাড়ে ৩শর ওপরে। নগরীর উলেস্নখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থাগার নিয়ে আমাদের এবারের মূল ফিচার। লিখেছেন খালেদ আহমেদ

সুফিয়া কামাল জাতীয় গ্রন্থাগার

রাজধানীর সবচেয়ে জনপ্রিয় গ্রন্থাগার হলো সুফিয়া কামাল জাতীয় গ্রন্থাগার। ১৯৫৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি এ গ্রন্থাগারটি স্থাপিত হয়। সবার জন্য উন্মুক্ত এ গ্রন্থাগারে বইয়ের সংখ্যা ১ লাখ ৮০ হাজার। এখানে অধিকসংখ্যক পাঠকের সমাবেশ ঘটে। এই গ্রন্থাগারে প্রতিদিন প্রায় ২৫টি জাতীয় দৈনিক পড়া যায়। সেইসাথে নিয়মিত ২৫টি বিদেশি ম্যাগাজিনও থাকে। এই গ্রন্থাগারের আসন সংখ্যা ৪শ। প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার পাঠকের সমাগম ঘটে। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। ১০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, শাহবাগে এই গ্রন্থাগারের অবস্থান। ফোন : ৮৬২৬০০১।

বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থাগার

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৭২ সালের ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। ৫ লাখের ওপর সংগ্রহ আছে এ গ্রন্থাগারে। আসন সংখ্যা ১৫০ হলেও প্রতিদিন ৫ শতাধিক পাঠকের আগমণ ঘটে। এছাড়া সংবাদপত্র, ম্যাপ এবং মাইক্রোফিল্মের আছে বড় একটা সংগ্রহ। যে কেউ এখানে এসে পড়াশোনা করতে পারেন। তবে কোনো বই বাসায় নেওয়া বা ফটোকপি করা যায় না। তবে ক্যামেরার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় অংশের ছবি তুলে নেওয়া যায়। শুক্রবার ও শনিবার এবং অন্যান্য ছুটির দিন ছাড়া সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পড়া যায়। গ্রন্থাগারটি ৩২ বিচারপতি এস এম মোর্শেদ সরণি, আগারগাঁওয়ে অবস্থিত। ফোন : ৯১২৯৯৯২, ৯১১২৭৩৩।

জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৮৭ সালের ২৬ মার্চ এ গ্রন্থাগারটি স্থাপিত হয়। এর সংগ্রহশালায় আছে প্রায় ১৫ হাজার বই। কেউ বাসায় নিতে চাইলে, বার্ষিক ১০০ টাকা চাঁদা দিয়ে সদস্য হতে হয়। এরপর ফেরতযোগ্য ১শ থেকে ৪শ টাকা পর্যন্ত নগদ জমা দিয়ে, সর্বোচ্চ চারটি বই ২০ দিনের জন্য বাসায় নেওয়া যায়। যেকোনো পাঠক খাতায় নাম লিপিবদ্ধ করে পাঠাগারটিতে পড়তে পারেন। শুক্র, শনিবার এবং সরকারি ছুটির দিন বাদে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এটি ৫/সি বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গুলিস্তানে অবস্থিত। ফোন : ৯৫৫৫৭৪৩।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের তিন তলায় ১৯৭৫ সালে এ গ্রন্থাগারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। অনেকেই ইসলাম ধর্মের নানা হাদিস এবং ইতিহাস জানার জন্য বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিয়েও সুরাহা পান না। এ সব বিষয়ে ইতিহাস, প্রবন্ধ, হাদিস, কোরআনসহ নানা বিষয়ে বিশাল সংগ্রহ রয়েছে এখানে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এ গ্রন্থাগারে প্রায় ৭৫ হাজার বইয়ের সংগ্রহ রয়েছে। আসন সংখ্যা ২ শ হলেও_প্রতিদিন প্রায় ৫ শতাধিক পাঠকের সমাগম ঘটে। সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে এশার নামাজের আগ পর্যন্ত এ লাইব্রেরি খোলা থাকে। ফোন : ৯৫৫৬৭২২।

রাজা রামমোহন লাইব্রেরি

পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলিতে ব্রাহ্মসমাজ ভবনের পাশেই একটি ভবনের দোতলায় এ পাঠাগারটির অবস্থান। এর পরিচালনাও করেন ঢাকার ব্রাহ্মসমাজ। তবে এখন আর মানুষের পদচারণায় মুখর হয় না কক্ষটি। ঢাকার পুরোনো প্রসিদ্ধ এ গ্রন্থাগারটি সাত বছর ধরে তালাবদ্ধ রয়েছে। জানা গেছে, ব্রাহ্মসমাজের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক অভয় চন্দ্র দাস ১৮৭১ সালের ১৮ জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠা করেন এ পাঠাগারটি। তিনি ব্রাহ্ম মন্দিরের দোতালার একটি কক্ষে অল্প কিছু বইপত্র নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯১০ সালে তৎকালীন আইসিএস ও ভাইসরয় কাউন্সিলের সদস্য কেজি গুপ্ত পাঠাগার ভবন উদ্বোধন করেন। তখন সংগ্রহশালায় বই ছিল ১০ থেকে ১২ হাজার। এ পাঠাগারে পড়তে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে কবি বুদ্ধদেব বসু, জীবনানন্দ দাশ, অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল হাই, সুফি মোতাহার হোসেন, বেগম সুফিয়া কামাল, কবি শামসুর রাহমানের নাম উলেস্নখযোগ্য। তবে ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে লুণ্ঠনের শিকার হয়। স্বাধীনতার পর আবার পাঠাগারটি খোলা হয়। তবে গত সাত বছর ধরে গ্রন্থাগারটি বন্ধ রয়েছে। গ্রন্থাগারটির সংশিস্নষ্টরা জানান, অচিরেই ঢাকার এই ঐতিহ্যবাহী গ্রন্থাগারটি পাঠকদের জন্য খুলে দিতে।

বার্ক লাইব্রেরি

বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসার্চ ইনস্টিটিউট (বার্ক) লাইব্রেরি। এখানে কৃষিভিত্তিক বই এবং জার্নালের সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজার। আসন সংখ্যা ৫০। যে কেউ ইচ্ছা করলেই এ লাইব্রেরিতে পড়তে পারেন। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি এবং অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। ফার্মগেটের খামারবাড়ি এলাকার ভেতর এ গ্রন্থাগারের অবস্থান।

ফোন : ৯১৩২৪১৫।

নজরুল ইনস্টিটিউট

১৯৮৫ সালের ১২ জুন ধানমন্ডির কবি ভবনে এ গ্রন্থাগারটি স্থাপিত হয়। কাজী নজরুল ইসলামের সবকিছু একত্রে পেতে এ গ্রন্থাগারের তুলনা নেই। তার সাহিত্য, সংগীত, সম্পাদনা ও প্রকাশনা, হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি,পত্রাবলি, বিভিন্ন রেকর্ডের বিশাল সংগ্রহ নিয়ে গড়ে ওঠেছে এটি। এখানে তার সৃষ্টিকর্ম নিয়ে গবেষণাধর্মী বইও রয়েছে। এখানে বইয়ের সংখ্যা ৮ হাজার এবং আসন সংখ্যা ১০। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি এবং অন্যান্য সরকারি ছুটিরদিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে। বাড়ি ৩০০বি, রোড ২৮ (পুরোনো), ধানমণ্ডি আ/এ-তে অবস্থিত। ফোন : ৯১১৪৬০২।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র

'আলোকিত মানুষ চাই' শেস্নাগানকে লালন করে অধ্যাপক আবদুলস্নাহ আবু সায়ীদ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৭৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর। ইতিমধ্যে এ পাঠাগারটি পাঠকের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। এখানে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। সাধারণ সদস্য হওয়ার জন্য ২শ টাকা এবং বিশেষ সদস্যের জন্য ৪শ টাকা ফেরতযোগ্য জামানত দিতে হয়। মাসিক চাঁদা ১০ টাকা। সদস্যরা একসঙ্গে দুটি বই দুই সপ্তাহের জন্য পড়ার জন্য নিতে পারে। এ কেন্দ্রের রয়েছে বেশ কিছু ভ্রাম্যমান লাইব্রেরি। এ বিষয়টি এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এর সদস্য হতে সাধারণ ১শ এবং বিশেষ ২শ টাকা ফেরতযোগ্য জামানত দিতে হয়। সদস্য না হয়েও শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন যে কেউ বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বই পড়তে পারেন। ১৪ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, বাংলামোটরে এর অবস্থান। ফোন : ৯৬৬০৮১২।

ব্যান্সডক লাইব্রেরি

নানা বিজ্ঞান বিষয়ক বই, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রিকা এবং গবেষণাপত্রের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে ব্যান্সডক লাইব্রেরিতে। এখানে সংগ্রহে আছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ের ২০ হাজার পাঠ্যবই এবং ২৫ হাজার জার্নাল। আসন সংখ্যা শতাধিক। প্রতিদিন দুই থেকে তিনশত পাঠক আসেন এখানে। গবেষকদের জন্য ইন্টারনেট সুবিধাসংবলিত ৪০টি কম্পিউটার রয়েছে এর ল্যাবে। প্রয়োজনীয় অংশ ফটোকপিও করা যায়। শুক্র, শনিবার এবং সরকারি ছুটির দিন ছাড়া সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পেতে পারেন এই লাইব্রেরির সেবা। বিসিএসআইআর ক্যাম্পাস (সায়েন্স ল্যাবরেটরি), মিরপুর রোডে এর অবস্থান।

ফোন : ৯৬৬৪২৫০, ৮৬১০২২৪।

ব্রিটিশ কাউন্সিল

ইংরেজি ভাষায় লিখিত আন্তর্জাতিক মানের একাডেমিক ও নন-একাডেমিক বইপত্র রয়েছে এখানে। সেইসাথে সাইবার ক্যাফে এবং ইংরেজি ভাষা শেখার সুবিধা পাওয়া যাবে। এই লাইব্রেরির বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। আসন সংখ্যা ৩শ হলেও প্রতিদিন ৫ শতাধিক পাঠক আসেন এখানে। ৫ ফুলার রোড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এ প্রতিষ্ঠান অবস্থিত। ফোন : ৮৬১৮৯০৫-৭।
Source: Daily Ittefaq

Sunday, October 24, 2010

আহা! ফুটপাত

ফুটপাত কী?
শহরে বসবাসকারী সবাই 'ফুটপাত' শব্দটির সাথে পরিচিত। এই ফুটপাতের পরিকল্পানাটি কিন্তু এসেছে মহাসড়ক নির্মাণের সূত্র ধরেই। একঅর্থে এটা মহাসড়কের মতোই। তবে পার্থক্যটা হচ্ছে_মহাসড়কে ভারি যানবাহন চলাচল করে; আর ফুটপাতে সাধারণ মানুষ যাতায়াত করে। বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে ফুটপাতকে সংজ্ঞায়িত করেছেন_সাধারণ জনগণের অধিকৃত পথ, যেখানে পায়ে হেঁটে, যাতায়াত করা যায়, তাকে ফুটপাত বলে।

আবার, তখনকার দিনে বাহন হিসেবে ঘোড়ার প্রচলন ছিল বলে কেউ কেউ ফুটপাতকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন_যেখানে মানুষ পায়ে হেঁটে, ঘোড়ায় চড়ে অথবা ছোট-যানবাহন নিয়ে চলাচল করে, তাহাই ফুটপাত।

সাধারণত মহাসড়ক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ফুটপাতের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। হাইওয়ে তৈরি হওয়ার ফলে দূরপালস্নার বিভিন্ন ভারি যানবাহনের কারণে স্থানীয় সাধারণ জনগণের চলাচল বাঁধাগ্রস্ত হওয়ার কারণেই ফুটপাত তৈরির সূত্রপাত হয়। প্রথম দিকে মহাসড়কের সংস্কারের সময় ফুটপাতের ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। কিন্তু ১৯৪৭ সালের পর মানুষের যাতায়াত সুবিধার জন্য ফুটপাত নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন পার্ক ও বড় বড় সড়কগুলির সাথে ফুটপাত তৈরি করা হয়। তবে বর্তমানে শহরের ফুটপাতগুলোর চেহারা ফুটপাতের সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছে।

আহা! ফুটপাত

পথচারীদের স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটার উদ্দেশ্যেই ফুটপাত বানানো হয়। অথচ নগরীর ফুটপাত দিয়ে আজকাল পথচারীরা হাঁটতে পারে না বললেই চলে। দেখা যায়_কেউ ফুটপাতে গাড়ি রাখছেন, কেউবা রাখছেন দোকানের মালপত্র, কোথাও আবার ফুটপাতের ওপর রয়েছে ফুট ওভারব্রিজের বিম। সব মিলিয়ে ফুটপাতের সুবিধা পথচারীরা সঠিকভাবে ভোগ করতে পারছেন না। নগরীর ফুটপাত নিয়ে আমাদের এবারের মূল ফিচার। লিখেছেন খালেদ আহমেদ

আমাদের সবার প্রিয় ঢাকা নগরীর ফুটপাতগুলোতে পথচারীরা বর্তমানে স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটাচলা করতে পারে না। তাই তারা বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রধান সড়ক দিয়ে হাঁটাচলা করছে। এতে একদিকে যানজট বাড়ছে, তেমনি সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটছে। নগরীর শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, শ্যামলী, মিরপুর, প্রেসক্লাব, পল্টন, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, খিলগাঁও, রামপুরা, বাড্ডা, মৌচাকসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতগুলো অনেকটাই দখল হয়ে গেছে। এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতের নানা ব্যবহার। যেমন_ফুটপাতের ওপর গাড়ি রাখা হচ্ছে, মোটরসাইকেল চলাচল করছে ফুটপাত দিয়ে, ফুটপাতের ওপর বসেছে দোকানপাট, অনেকে আবার দোকানের জিনিসপত্র রাখছেন ফুটপাতের ওপর, ফুটপাতের ওপর পত্রিকার স্টল ও টিকিট বাসের কাউন্টার, কিংবা ফুট ওভারব্রিজের বিম।

শহরে বসবাসকারী সবাই 'ফুটপাত' শব্দটির সাথে পরিচিত। এই ফুটপাতের পরিকল্পানাটি কিন্তু এসেছে মহাসড়ক নির্মাণের সূত্র ধরেই। পথচারীদের স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটার উদ্দেশ্যেই ফুটপাত বানানো হয়। পথচারীদের জন্য ফুটপাত বানানো হলেও নগরীর ফুটপাতগুলো ব্যবহার হচ্ছে অন্য কাজে। অনেকেই ফুটপাত দখল করে নিজেদের কাজে ব্যবহার করলেও তাদের সরানো হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে পুলিশ প্রশাসন ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অভিযান চালালে কিছুদিন ফুটপাতগুলো ফাঁকা থাকে। তবে কয়েকদিন পর পুনরায় দখল হয়ে যায় বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ীদের কাছে। ফুটপাত দখলের কারণে পথচারীদের দুর্ভোগের কথা কেউ মাথায় রাখেন না।



ফুটপাতে গাড়ি পার্কিং

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক সচেতন নাগরিক নিজের গাড়িটি ফুটপাতের ওপর পার্ক করে রেখেছেন। বিশেষ করে, নগরীর বিভিন্ন মার্কেটের সামনেই ফুটপাতের ওপর গাড়ি পার্কিংয়ের দৃশ্য চোখে পড়ে। নগরীর মতিঝিল, অভিসার সিনেমা হলের সামনে, পুরানা পল্টন, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট এলাকা, মহাখালি, ধানমণ্ডি, গুলশান ও কাকরাইল এলাকায় ফুটপাতে গাড়ি পাকিংয়ের চিত্র বেশি চোখে পড়ে। ফুটপাতের ওপর গাড়ি রাখার জন্য তাদের এতটুকু অনুশোচনা হয় না যে, তারা আইন মানছেন না। ফুটপাতে পার্কিংয়ের কারণে যানজটসহ পথচারীদের চলাচলের অসুবিধার কথা তাদের মনেই থাকে না।



ফুটপাতে মোটরসাইকেল

নগরীর মোটরসাইকেল চালকদের একটা কথা কখনোই মনে থাকে না যে, ফুটপাত দিয়ে তারা চলাচল করতে পারেন না। ফুটপাত হলো পথচারীদের চলাচলের নিরাপদ জায়গা। অথচ নগরে বের হলেই প্রতিটি সড়কে দেখা যায়, যানজট এড়াতে মোটরসাইকেল চালক ফুটপাতে উঠে পড়ছেন। পথচারী থাকায় তীব্র হর্ন বাজাচ্ছেন। এতে পথচারীদের সমস্যা হয় বলে ফুটপাত ছেড়ে তারা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামেন। কয়েকজন মোটরসাইকেল চালকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এটা কোনো অপরাধ নয়। স্বাভাবিক বিষয় হিসেবেই তারা দেখেন ফুটপাত দিয়ে তাদের যাতায়াত।



ফুটপাতে ওভারব্রিজের বিম

যানবাহনের ভিড় এড়িয়ে পথচারীদের রাস্তা পারাপারের জন্য ফুট ওভারব্রিজ বানানো হয়েছে। কিন্তু এই ওভারব্রিজগুলোও পথচারীদের চলার পথে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। কারণ, রাজধানীর বেশিরভাগ ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ি এসে মিলেছে রাস্তার পাশের ফুটপাতে। ফলে, ফুট ওভারব্রিজের নিচের ফুটপাতগুলো পথচারীরা ব্যবহার করতে পারছে না। ঢাকা সিটি করপোরেশনের একটি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে মোট ৪৯টি ফুটওভারব্রিজ রয়েছে। ফুট ওভারব্রিজগুলোর বেশিরভাগের সিঁড়ি তৈরি করা হয়েছে রাস্তার পাশের ফুটপাতে। ফলে ফুটপাতে হাঁটার জায়গা কমে গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, অনেক ফুটপাতে ফুটওভারব্রিজের সিঁড়িগুলোকে ঘিরে হকাররা ফুটপাতের বাকি অংশটুকু দখল করেছে। আবার কোনো কোনো ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ির নিচে ভ্রাম্যমান মানুষ মলমূত্র ত্যাগ করায় পুরো ফুটপাতই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। নিউমার্কেটের দুই নম্বর গেটের ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ি ফুটপাতের বেশিরভাগ অংশ দখল করেছে। এ সুযোগে বাকিটুকু দখল করে নিয়েছে হকাররা। কল্যাণপুর ফুট ওভারব্রিজের দুই পাশের সিঁড়িও ফুটপাতে নামানো হয়েছে। উত্তর পাশের সিঁড়ির নিচে হকাররা বসেছে। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর ফুট ওভারব্রিজের ফায়ার সার্ভিস প্রান্তের সিঁড়ি পুরো ফুটপাত দখল করে ফেলেছে। মিরপুর ১ নম্বর মোড়ের ওভারব্রিজের মুক্তি পস্নাজার পাশের ফুটপাতের বেশিরভাগ অংশজুড়ে আছে সিঁড়ি। ফুটপাতের বাকিটুকু দখল করেছে ফল ব্যবসায়ীরা। বাংলামোটর ওভারব্রিজের পূর্ব পাশের সিঁড়ির সংযোগ দেয়া হয়েছে নিউ ইস্কাটন রোডের পূর্ব পাশের ফুটপাতে। ফলে, ফুটপাতের পুরোটাই দখল হয়ে গেছে। পথচারীরা তাই ফুটপাতে না চলে রাস্তা দিয়ে হাঁটে। এই ফুটওভারব্রিজের পশ্চিম পাশের সিঁড়িও ফুটপাতে থাকায় সেখানেও পথচারীরা হাঁটতে পারে না। কারওয়ান বাজারের পশ্চিম তেজতুরী বাজার ফুটওভারব্রিজের সিঁড়িও তৈরি করা হয়েছে দুই পাশের ফুটপাতে। প্রশস্ত সিঁড়িগুলো পুরো ফুটপাতই দখল করে ফেলেছে। ফলে সিঁড়ির নিচের অংশের ফুটপাত দিয়ে লোকজন হাঁটতে পারে না। সায়েন্স ল্যাবরেটরি ফুটওভারব্রিজের পূর্ব প্রান্তের ফুটপাতে হাঁটার একটু জায়গাও বাকি নেই। ফুটপাতে ফুট ওভারব্রিজ তৈরির বিষয়ে নগরবিদদের ভাষ্য, জনবহুল ক্রসিংগুলোয় পথচারীদের রাস্তা পারাপারের জন্য ফুট ওভারব্রিজ দরকার। তবে তা কখনোই ফুটপাতে করা উচিত নয়। পৃথিবীর কোথাও এরকম ফুটপাতের ওপর ওভারব্রিজ বানানোর নজির নেই। এক্ষেত্রে ফুটপাতের পাশের জায়গা অধিগ্রহণ করে সেখানে ফুট ওভারব্রিজ বানানো যেতে পারে। আর জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দিয়ে সরকার যে কারো জমি অধিগ্রহণ করতে পারে। ডিসিসি'র সংশিস্নষ্ট কর্মকর্তা জানান, ফুটপাতে হাঁটার জায়গা নিশ্চিত করা পথচারীদের অধিকার। কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে তা পালন করার উপায় নেই। মূলত দুই পাশের জায়গার অভাবেই ফুটপাতে ওভারব্রিজের সিঁড়ি নামানো হচ্ছে।



ফুটপাতে খাবারের দোকান

নগরীর বিভিন্ন স্থানেই ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে খাবারের দোকান। এগুলোর কোনোটা ভ্রাম্যমান, আবার কোনোটা স্থায়ী। রাজধানীর প্রেসক্লাব, পল্টন, কারওয়ান বাজার, গুলিস্তান, মিরপুর, মগবাজার, মালিবাগসহ সবখানেই এরকম দোকানপাট দেখা যায়। কোথাও চায়ের দোকান, কোথাও ফলের দোকান রয়েছে। আবার কোথাও বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন হকাররা। এসব দোকান ও হকারদের জন্য পথচারীরা ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে পারে না।



ফুটপাতে থাকে মালপত্র

রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকাতেই ফুটপাত সংলগ্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মালপত্র তারা ফুটপাতেই রাখেন। এর মধ্যে কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মিরপুর, বাড্ডা, গুলিস্তান, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা, খিলগাঁও, গোড়ান, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া, হাজিপাড়া, মোহাম্মপুর, শ্যামলী, হাজারীবাগ এলাকায় ফুটপাতের ওপর দোকানের মালপত্র রাখতে বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া অন্যান্য এলাকাতেও রয়েছে এই সমস্যা। এ বিষয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, দোকানের সামনে খালি জায়গা নেই। তাই তারা মাঝেমধ্যে ফুটপাতের ওপর কিছু মালপত্র রাখেন। তাদের কাছে এটা দোষের কিছু নয়। তাদের মালপত্র রাখার কারণে পথচারীদের হাঁটতে অসুবিধা হয়-তা জেনেও তারা সেই কাজটি করে চলেছেন দিনের পর দিন।



ফুটপাতে টিকিট কাউন্টার

নগরীর অনেক স্থানেই ফুটপাত দখল করে টিকিট বাসের কাউন্টার গড়ে উঠেছে। শুধু ফুটপাত নয় অনেক স্থানে রাস্তা দখল করে রীতিমত চলে তাদের সার্ভিস ব্যবসা। রাজধানীর প্রেসক্লাব, পুরানা পল্টন, মতিঝিল, কাকরাইল, মালিবাগ, মগবাজার, বাংলা মোটর, শাহবাগ, ফার্মগেট, শ্যামলী, মিরপুর, গাবতলী, সায়েদাবাগ, বনানীসহ আরো অনেক এলাকাতেই রয়েছে টিকিট বাস সার্ভিসের কাউন্টার। এ সব কাউন্টারের জন্য পথচারীরা ফুটপাত দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটাচলা করতে পারে না। কয়েকটি বাস সার্ভিসের টিকিট কাউন্টার ম্যানেজারের সাথে কথা বললে তারা জানান, নাগরিকদের সুবিধার জন্যই তাদের এই সার্ভিস। কাউন্টার করার জায়গা না থাকলে কোথাও যাবে তারা।

Land Consultant

জেনে নিন : কমিউনিটি সেন্টার

জেনে নিন : কমিউনিটি সেন্টার

বিয়েসহ অনুষ্ঠান পরিকল্পনার প্রধান অংশ হলো কমিউনিটি সেন্টার নির্বাচন করা। কমিউনিটি সেন্টার নির্বাচন করতে প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে সুযোগ-সুবিধার কথাটা। বাসা থেকে কাছাকাছি স্থানে কমিউনিটি সেন্টার নির্বাচন করাই বুদ্ধিমানের কাজ। আর খরচের ব্যাপার তো থাকছেই। কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করার সময় ভালোভাবে খোঁজখবর নিতে হবে। সাধারণত কমিউনিটি সেন্টারগুলো হল ভাড়ার সঙ্গে ডেকোরেশন, লাইটিং, বেয়ারা ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। বাবুর্চি আর আপ্যায়নের বিষয়টি ইচ্ছে করলে নিজেরা করতে পারেন আবার কমিউনিটি সেন্টারের ওপরও দায়িত্ব দিতে পারেন। আর একটি বিষয়, আগত অতিথির সংখ্যার ওপরও সেন্টারের ভাড়া নির্ভর করবে। তাছাড়া অতিথি যত বেশি হবে, আপনাকে তত বেশি ভ্যাট দিতে হবে। কেননা, প্রতিটি অতিথির খাবারের খরচের ওপর আপনাকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। সাধারণত কমিউনিটি সেন্টারগুলো দুই শিফটে ভাড়া দিয়ে থাকে; দিনে এবং রাতে। আপনার প্রয়োজনমতো কতর্ৃপক্ষকে জানাতে হবে। প্রাথমিক খোঁজখবর আপনি ফোনের মাধ্যমেই নিতে পারবেন। তবে বুকিং দেওয়ার সময় আপনাকে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে কিছু অগ্রিম টাকাও আপনাকে দিতে হবে। আপনার চাহিদামতো কমিউনিটি সেন্টার কতর্ৃপক্ষ সব সুযোগ-সুবিধা দিতে প্রস্তুত। এমনই কিছু কমিউনিটি সেন্টারের ঠিকানা দেওয়া হলো_

প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ৫২/১, রোড ৩/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা।

চৌধুরী কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ৭/১৩, রোড ৫/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা।

সুগন্ধা কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ৭/১৩, রোড ৫/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা।

হোয়াইট প্যালেস কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ১৩, রোড ১০, ধানমন্ডি।

উলস্নাস কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ২২, রোড ১০/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা।

ট্রাস্ট মিলনায়তন

৫৪৫, পুরাতন বিমানবন্দর সড়ক, ঢাকা সেনানিবাস, ঢাকা।

সিটি গ্রান্ড হল

বসুন্ধরা সিটি, পান্থপথ, ঢাকা।

বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার

বস্নক- জি, উম্মে কুলসুম রোড, বসুন্ধরা আ/এ, বারিধারা, ঢাকা।

হোয়াইট হাউস

১৫৫, শান্তিনগর, ঢাকা

সেনাকুঞ্জ

ঢাকা সেনানিবাস, ঢাকা।

বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র

শের-ই-বাংলানগর, ঢাকা।

দরবার হল

বিডিআর, জিগাতলা, ধানমন্ডি।

আনন্দ উলস্নাস কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ৭, রোড ১৩, ধানমন্ডি, ঢাকা।

সোহাগ কমিউনিটি সেন্টার

৯১, নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা।

লেডিস ক্লাব

২৬, ইস্কাটন রোড, ঢাকা।

অ্যাবাকাশ কনভেনশন সেন্টার

৭১-৭২ ইস্কাটন গার্ডেন, ঢাকা।

অঙ্গন কমিউনিটি সেন্টার

৮/৯ আওরঙ্গজেব রোড,

মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

পার্টি প্যালেস কমিউনিটি সেন্টার

২৩/৫ শ্যামলী, মিরপুর রোড, ঢাকা।

নিউ প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টার

২/৯, স্যার সৈয়দ রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

লিলি গার্ডেন কমিউনিটি সেন্টার

২৯/৪ কে এম দাস লেন

হাটখোলা রোড, টিকাটুলি, ঢাকা।

পার্টি সেন্টার

বাড়ি ১, রোড ১৩, ধানমন্ডি, ঢাকা।

প্রবাল কমিউনিটি সেন্টার

৬১২ কাজীপাড়া, বেগম রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা।

আপ্যায়ন কমিউনিটি সেন্টার

সেকশন ৬/সি, রোড ১২/২, মিরপুর, ঢাকা।

রূপসা কমিউনিটি সেন্টার

২২৮ গ্রিন রোড, ঢাকা।

সাগর কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ৭৭, রোড ৮/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা।

শাপলা কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ৪০, রোড ৯/এ, ধানমন্ডি।

সাদি মহল পার্টি সেন্টার

বাড়ি ২, রোড ১১, প্রগতি সরণি, মেরুল বাড্ডা, ঢাকা।

অফিসার্স ক্লাব

১৬ বেইলি রোড, ঢাকা।

আনন্দ ভবন কমিউনিটি সেন্টার

৫৫, পুরানা পল্টন, কাকরাইল, ঢাকা।

মালঞ্চ কমিউনিটি সেন্টার

৪৩/৩, উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।

Tuesday, October 19, 2010

বকেয়া বিলের বোঝা কমাতে আসছে বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার

বকেয়া বিলের বোঝা কমাতে আসছে বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার

বকেয়া বিদ্যুত্ বিলের বোঝা কমাতে খুব শিগগিরই দেশের বড় শহরগুলোতে প্রি-পেইড মিটার চালু করা হচ্ছে। যথাসময়ে বিল পরিশোধ না করায় প্রতি বছর বকেয়া থেকে যাচ্ছে হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডের বকেয়া বিদ্যুত্ বিলের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল অবলুপ্ত ডেসার কাছে বকেয়া রয়েছে ২ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঠিক সময়ে বিল পরিশোধ না করায় প্রায় প্রতি বছরই একটা বড় অঙ্কের টাকা বকেয়া পড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে একশ্রেণীর গ্রাহকের মধ্যে যথাসময়ে বিদ্যুত্ বিল না দেয়ার প্রবণতা রয়েছে। এসব কারণে দিন দিন বকেয়ার বোঝা বেড়েই চলেছে। ফলে বকেয়া বিলের বোঝা কমাতে সরকার প্রথমে বড় শহরগুলোতে প্রি-পেইড মিটার চালু করতে যাচ্ছে, যা পরবর্তী সময়ে দেশের সব স্থানে চালু করা হবে। সূত্র জানায়,পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন ৭০টি পল্লী বিদ্যুত্ সমিতির হিসাবে দেখা যায়, চলতি বছরের মে ২০১০ পর্যন্ত বকেয়া বিলের পরিমাণ ছিল ৫৬০ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩২টি মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি সংস্থার কাছে বকেয়া ২১ কোটি টাকা। ১৯টি মন্ত্রণালয়ের অধীন আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কাছে ৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এছাড়া বেসরকারি গ্রাহকের কাছে বকেয়া ৫৩০ কোটি ৮ লাখ টাকা। একই সময়ে ডিপিডিসির বকেয়া বিদ্যুত্ বিল ৫৪০ কোটি ৮ লাখ টাকা, ডেসকো এলাকায় ৩৯৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি খাতে বকেয়া রয়েছে ১৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা সরকারি খাতে ২৭ কোটি টাকা এবং বেসরকারি খাতে ১১৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সূত্র জানায়, সরকারের নেয়া উদ্যোগ অনুযায়ী বিদ্যুত্ বিল আদায়ে প্রি-প্রেইড মিটার চালু করা হলে বকেয়ার ঝামেলা থেকে রেহায় পাওয়া যাবে। এমনকি প্রি-পেইড মিটারের বদৌলতে বিদ্যুত্ বিভাগ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা অগ্রিম পাবে।

Sunday, October 17, 2010

নাগরিক ওয়েবসাইট কতটা নাগরিকবান্ধব

নাগরিক ওয়েবসাইট কতটা নাগরিকবান্ধব

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে মহাজোট সরকার। কিন্তু নগরের সেবা সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইটের হাল কি আধুনিক হয়েছে? ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি), রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)—নগরের এই সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইটে নাগরিক জীবনের নানা জিজ্ঞাসার সমাধান সহজেই মেলার কথা। আবার নগরবাসীর সহায়তায় সেবা সংস্থার সাজানোগোছানো ওয়েবসাইটগুলোর সবগুলোতেই রয়েছে ‘ফিডব্যাক অপশন’। নগরবাসী হয়তো বিস্তারিত নাম-ঠিকানা দিয়ে ঘরগুলো পূরণ করেন। কিন্তু এসব কি কর্তৃপক্ষের হাতে যায়? অনলাইনে পাঠানো নগরবাসীর সমস্যাগুলোর সমাধান কি বাস্তবে হয়? সেবা সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইট নাগরিকবান্ধব কি না, সেসব খোঁজ এনেছেন আলী আসিফ ও আজহার হোসেন।

নাগরিক ওয়েবসাইট কতটা নাগরিকবান্ধব

ডিসিসি
www.dhakacity.org
জন্মসনদ থেকে শুরু করে শেষ ঠিকানার ব্যবস্থা—এই নগরে নাগরিক সেবা দেওয়ার মূল ভূমিকাই পালন করে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি)। নগরবাসীর প্রয়োজনের দিকটা বুঝেই হয়তো পরিমার্জিত ও পরিপাটি আদলে ডিসিসি তাদের ওয়েবসাইটটি সাজিয়েছে। কিন্তু শুরুতেই হোঁচট খেতে হয় বাংলায় কোনো সংস্করণ না থাকায়। পুরো ওয়েবসাইটে বাংলার চিহ্নমাত্র নেই। সাধারণ নাগরিকেরা এখান থেকে তথ্য পাবেন কীভাবে?
প্রতিটি এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নাম-ঠিকানা, মোবাইল ফোন নম্বর—সব কিছুই জানা যাবে এখানে একটা ঢুঁ মারলে। কিন্তু এই জানাটুকুই সার। ফোনে এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে ওয়েবসাইটের নম্বর থেকে খোঁজ করলে দেখবেন বেশির ভাগ কমিশনারের নম্বর বন্ধ অথবা বদলে গেছে।
এ ছাড়া নগরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের রসদ কিংবা চলমান বিভিন্ন কর্মসূচির তালিকাটাও দেখা যাচ্ছে ওয়েবসাইটে। কিন্তু সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
ব্যবসা করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স কিংবা অযান্ত্রিক যান নিবন্ধনের নিয়মটাও খুব সহজেই পড়ে নেওয়া যায় ওয়েবসাইটটি থেকে। শুধু তাই নয়, সিটি করপোরেশনের ১৫টি বিভাগের কাজের ধরন, কোন কাজের জন্য কোন বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে—সবকিছুরই বিশদ বিবরণ রয়েছে এই ওয়েবসাইটটিতে।
ডিসিসির ওয়েবসাইটে নাগরিক সুযোগসুবিধার সবটুকুই থাকার কথা। কর্তৃপক্ষ সেভাবেই সাজিয়েছে সাইটটিকে। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে কমিউনিটি সেন্টার, গণগ্রন্থাগার কিংবা গণশৌচাগারের তালিকাটাও দর্শনার্থীকে জানাতে ভোলেনি ডিসিসি। কিন্তু এই জানানোতেও ডিসিসি দেখিয়েছে বেখেয়ালি মনোভাব।
 বাস সার্ভিস মেনুতে প্রসিকিউর অব ইনকামের বর্ণনায় ইংরেজি হরফে বাংলা লেখা হয়েছে।
 ‘অ্যাবাউট আস’ শিরোনামের মেনুতে ওয়ার্ড কমিশনারদের তালিকা ও যোগাযোগের নম্বর থাকলেও সেখানকার ওয়ার্ড প্রোফাইল অংশে ওয়ার্ডের কোনো প্রোফাইল নেই।
 আরবান হেলথ কেয়ার প্রজেক্টের সেবাকেন্দ্রগুলো নগরবাসীকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। অথচ প্রজেক্টের বর্ণনা থাকলেও আরবান হেলথ কেয়ার সেন্টারের ঠিকানা সাইটে উল্লেখ নেই।
 ডিসিসির ওয়েবসাইটের ফটো গ্যালারি খোলার পর সেবাগ্রহীতার নিজেকে বুঝে নিতে হবে, ছবিতে কী বোঝানো হচ্ছে। কারণ, কোনো ছবিরই ক্যাপশন নেই।
 ডিসিসির প্রোফাইল মেনুতে একনজরে উল্লেখ রয়েছে গণশৌচাগার ১৮টি। অথচ বাস্তবে রয়েছে ৪৮টি। যা ওয়েবসাইটের এস্টেট বিভাগে উল্লেখ রয়েছে। আবার প্রোফাইলে কমিউনিটি সেন্টারের সংখ্যা উল্লেখ রয়েছে ২৭টি। কিন্তু সমাজকল্যাণ বিভাগের কমিউনিটি সেন্টারের তালিকায় উল্লেখ রয়েছে ৪৭টি সেন্টারের।
 সার্চ বক্সটি অকেজো।
 নগর মাতৃসদনের সংখ্যা দুটি। অথচ ঠিকানা ও বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে একটির। অন্যটি সম্পর্কে কোনো তথ্য সাইটটিতে নেই।
 মূল মেনু থেকে প্রজেক্ট বাটন চাপলে ডিসিসির কোনো প্রজেক্টের খোঁজ পাওয়া যায় না। পুরোটাই ফাঁকা দেখায়।
 ডাউনলোড মেনুতে বিল্ডিং পারমিশন ফরমের উল্লেখ থাকলেও এই ফরমটি ডাউনলোড করা যায় না।
 ফ্রিকোয়েন্ট আস্ক কোশ্চেনের লিস্টে শুধু প্রশ্নগুলোই দেওয়া আছে। কোনো উত্তর নেই!
 ওয়েবসাইটির হোম পেইজের নিচে নিউজ বাটন দেখলে মনে হবে এতে বুঝি ডিসিসির আপডেট কোনো তথ্য রয়েছে। অথচ এখানে ক্লিক করলে কিছুই মেলে না।
 ডিসিসির আর্কাইভ অপশনে গেলে কিছু পাওয়া যায় না।

ডিএমপি
www.dmp.gov.bd
নগরবাসীকে নিশ্চিন্তে রাখার দায়িত্ব যাদের ওপর সেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) দুষ্টের দমন বা শিষ্টের লালনে কতটুকু সফল বা ব্যর্থ সে কাহিনি নগরবাসীর অজানা নয়। তবে ডিএমপির ওয়েবসাইটটিতে একবার চোখ বুলালে আপনার মনে হতে পারে, সারা দিন অপরাধীদের ধাওয়া করার ফলেই তাদের ওয়েবসাইটের বোধ হয় এই হাল। মহানগর পুুলিশদের এই ওয়েবসাইটে গিয়ে ডিএমপির ভিশন স্টেটমেন্ট, ডিএমপি অর্গানোগ্রাম, হাই অফিশিয়ালস, সাবেক কমিশনার এবং ডিএমপির অর্ডিন্যান্সের অপশনে ক্লিক করে কোনো কিছুর দেখাই পাওয়া যায় না। তবে নগরবাসীর সুবিধার্থে নগরের ৩৯টি থানার ঠিকানা, ফোন নম্বর কিন্তু রয়েছে ওয়েবসাইটটিতে। এ ছাড়া ডিএমপির অপরাধ দমন, ট্রাফিক, গোয়েন্দা, ক্রাইম ও অপারেশন বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ পাওয়া যাবে ওয়েবসাইটটিতে একবার ভালো করে চোখ বুলালে।
 ‘ফাইন্ড ইয়োর লোকাল পুলিশ’ অপশনে গিয়ে কেবল ১৮টি থানার এলাকাই খুঁজে পাওয়া যায়।
 ডিএমপির ওয়েবেসাইটে বর্ণিত কৃতিত্বের তালিকায় ২০০৫, ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮, ২০১০ এই পাঁচ বছরের কৃতিত্বের কথা থাকলেও ২০০৯ সালেরটা কোনো এক অজ্ঞাত কারণে বোধ হয় সেখানে ঠাঁই পায়নি।
 ডিএমপির অপরাধ পরিসংখ্যানে সর্বশেষ ২০১০ সালের মে মাসের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মে মাসের পর চার মাস পার হলেও ডিএমপির ওয়েবসাইটে তার কোনো অগ্রগতি নেই।
 ডিএমপি ওয়েববাইটে সাম্প্রতিক অপরাধপ্রবণতার যে চার্ট তারা দেখিয়েছে, সেটাতেও সাম্প্রতিক সময় বলতে হয়তো চার মাস আগের মে মাসকেই বোঝানো হয়েছে!
 ওয়েবসাইটটির হেল্প ব্যানারে মিসিং পারসন হিসেবে ডিএমপির নথিভুক্ত হারিয়ে যাওয়া মানুষদের তালিকা দেওয়া রয়েছে। সেখানে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর কারোরই ছবি নেই। হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তি শনাক্তকরণে সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো ছবি। কিন্তু সাইটটিতে সে ব্যবস্থা নেই।
 ডিএমপির ওয়েবসাইটের হোম পেইজের নিচে নোটিশ বোর্ড রয়েছে। এতে নোটিশের কোনো খোঁজ নেই। একটি ড্রপ-ডাউন বক্স দিয়ে অ্যাডভার্টাইজমেন্ট, টেন্ডার ইত্যাদি ক্যাটাগরি দেওয়া রয়েছে।

ডিপিডিসি ও ডেসকো
www.dpdc.org.bd
www.desco.org.bd
লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ নগরবাসীমাত্রই জানে বিদ্যুৎ না থাকার জ্বালা। চাহিদা ও জোগানের সামঞ্জস্য না থাকায় দিনে-কিংবা রাতে প্রায় সময়ই বিদ্যুৎ পায় না নগরবাসী। লোডশেডিংয়ের এই ফাঁকতালে একবার ঢুঁ মেরে দেখতে পারেন নগরের দুই বিদ্যুৎ সরবরাহকারীর ওয়েবসাইটে।
ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) এবং ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) নগরের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের বিলি-বণ্টন করে। সংস্থা দুটির ওয়েবসাইট থেকে লোডশেডিংয়ের সময়সূচি জেনে নেওয়া যায় আগেভাগেই। তবে ডিপিডিসি লোডশেডিংয়ের তালিকা করেছে সময়ের ওপর ভিত্তি করে এলাকার নাম ধরে ধরে। সকাল আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত ঢাকার কোন কোন এলাকায় লোডশেডিং থাকবে তার একটা তালিকা পাওয়া যাবে ডিপিডিসির ওয়েবসাইটে। একইভাবে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সময়ের ওপর ভিত্তি করে স্থানের তালিকা দেখানো হয়েছে এখানে। সেটি জানতে হলে নিজের কম্পিউটারে ডাউনলোড করে তবেই আপনি তথ্যগুলো পাবেন। অপরদিকে ডেসকোর ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট এলাকার নাম লিখে সার্চ দিলে ওই এলাকার দিনের লোডশেডিংয়ের সময়সূচি তো বটেই, সপ্তাহেরটাও মেলে। কিন্তু এই তালিকার সঙ্গে এলাকার লোডশেডিংয়ের তথ্য বেশির ভাগ সময়ই মেলে না। নগরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা এই দুটি সংস্থার মধ্যে ডেসকোর ঝকঝকে ওয়েবসাইটটি তথ্যবহুল। ওয়েবসাইটটির সার্চ বক্স বেশ কার্যকর।
 ডিপিডিসির ওয়েবসাইটে সিএফএল বিতরণের একটি হ্যান্ডবিল জুড়ে দেওয়া হয়েছে। উৎসাহী দর্শনার্থী সেটাকে ডাউনলোড করতে পারেন। কিন্তু ঘোলাটে এই হ্যান্ডবিলের একটি অক্ষরও বোঝা সম্ভব নয়।
 ফরম মেনুতে ডিপিডিসির কর্মচারীদের নানা ফরম দেওয়া আছে। নগরবাসীর সেবা ও সহায়তা সম্পর্কিত কোনো ফরম এখানে নেই।
 ডিপিডিসির সার্চ বক্সটি কাজ করে না।
 ডেসকোর সাইটে থাকা নিউজলেটারটি দুই বছর আগের।
 ওয়েবসাইটে দেওয়া ডেসকোর সিটিজেন চার্টারে প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। ফলে নগরবাসী কোন কাজে কোন বিভাগে সহায়তার জন্য যাবে, সেটা বোঝা মুশকিল। ডিপিডিসির অসম্পূর্ণ চার্টারের শেষে চারটি ফোন নম্বর দিয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
 ডেসকোর অ্যাবাউট আস মেনুতে ‘প্রেস রিলিজ’ শিরোনামের লিংকে ঢুকলে একটি ডাউনলোড অপশন আসে। নগরবাসী ভেবে বসতে পারেন, এখান থেকে ডেসকোর সাম্প্রতিক প্রেস রিলিজ পাবেন। কিন্তু সেটি ডাউনলোড করলে যা মেলে, তাতে নগরবাসীর কোনো উপকারেই আসবে না। প্রেস রিলিজের বদলে বর্তমান চেয়ারম্যানের জীবনবৃত্তান্তটি মেলে লিংকটিতে।
 ডিপিডিসির ওয়েবসাইটে বিদ্যুতের ব্যবহার সম্পর্কিত নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ নেই। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি হ্যান্ডবিলের পিডিএফ ফাইল পাওয়া যায়। এতে ডিপিডিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা রয়েছে।

রাজউক
www.rajukdhaka.gov.bd
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের ওয়েবসাইটে এক চক্কর দিলে মন্দ হয় না। তথ্যসমৃদ্ধ এই ওয়েবসাইটে একবার চোখ বুলালেই জানতে পারবেন ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক প্রকল্প সম্পর্কে। এ ছাড়া নগর বিষয়ে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কেও ছোটখাটো ধারণা পাওয়া যায় রাজউকের ওয়েবসাইটে। ইমারত-নির্মাণ বিধিমালা থেকে শুরু করে পুকুর, নদী ও খোলা জায়গা সংরক্ষণের নীতিমালা সম্পর্কেও বিশদ বিবরণ রয়েছে ওয়েবসাইটটিতে। রাজউক গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কেও জানানো হয়েছে সাইটটিতে। নিজের জমিতে ভবন নির্মাণের আবেদন ফরমও তুলতে পারবেন রাজউকের ওয়েবসাইট থেকে। ওয়েবসাইটের প্লানিং অপশনে ক্লিক করে ল্যান্ড ইউজ ক্লিয়ারেন্স প্রসেসে মাউস রাখলেই পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত ফরম। নগরে বাস করে যদি নগর পরিকল্পনার কয়েকটি অপশন সম্পর্কে জানতে চান, তাহলেও একবার ক্লিক করতে পারেন রাজউকের সাইটে। বিভিন্ন সময়ে করা নগরের মহাপরিকল্পনাগুলো তথ্য, ছবি আর পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টটি পাবেন রাজউকের সাইটটিতে।
ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি ব্যবহার সম্পর্কেও সম্যক ধারণা পাবেন এখান থেকে। তাই আপনি আপনার জমিতে ভবন নির্মাণের আগে দক্ষ লোকদের কাছে ধরনা দেওয়ার আগে একবার রাজউকের ওয়েবসাইটে পলক ফেলতে পারেন।
 রাজউকের নোটিশ মেনু থেকে নোটিশ পড়তে হলে অপেক্ষায় থাকতে হয়। এখানকার সব কটি নোটিশ পিডিএফ ফরমেট আকারে দেওয়া হয়। ফলে যে নোটিশটি দর্শনার্থীর প্রয়োজন সেটি দেখতে বেগ পেতে হয়।
 হোম পেজে শুধু মেনুর বিষয়বস্তুগুলো বাংলায় লেখা হয়েছে। পুরো সাইটটিই ইংরেজিতে লেখা।
 ফ্রিকোয়েন্টলি আস্ক কোশ্চেনে বিভিন্ন বিভাগের প্রশ্ন থাকলেও উত্তর রয়েছে শুধু একটি বিভাগের।
 রাজউক তাদের ওয়েবসাইটে প্রজেক্ট মেনুতে তিন ধরনের প্রকল্পের বর্ণনা দিয়েছে; সমাপ্ত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রকল্প। শিরোনাম বাংলায় লেখা হলে ভেতরের সব বর্ণনা ইংরেজিতে

ঢাকা ওয়াসা
www.dwasa.org.bd
ঢাকা ওয়াসার ওয়েবসাইটে নতুন পানির লাইন বা পয়োবর্জ্যের লাইন নেওয়ার নিয়মাবলি এবং আবেদন ফরম পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আরও রয়েছে সিটিজেন চার্টারের সেবা। কিন্তু ফন্টের সমস্যার কারণে সেটার পাঠ উদ্ধার করা ঢাকাবাসীর পক্ষে সম্ভব নয়। ওয়াসার ওয়েবসাইটটি যে কেবল গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ তা নয়, বরং সংস্থাটির কর্তাদের প্রতিও বেশ উদাসীন। স্বয়ং নিজেদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ইঞ্জিনিয়ার তসকিম এ খানের পরিচিতি প্রদানের বেলায় ওয়াসার এই সাইটটি কেবল এমডির একটি ছবি আর তিনি কত দিন ওয়াসাতে কর্মরত এই তথ্যটুকু দিয়েই খালাস। আর ছবির নিচে অসম্পূর্ণ ব্যক্তিগত তথ্য আর শিক্ষাজীবনের তালিকাটা ফাঁকা দেখে যে কারও মনে খটকা লাগাটাই স্বাভাবিক।
 ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী ওয়াসার অর্গানোগ্রামে এমডির অধীনে চারজন ডিএমডি রয়েছেন। তবুও ওয়েবসাইটে আরপিডি এবং ওঅ্যান্ডএম এই দুই বিভাগের দায়িত্বেই দেখা যাচ্ছে প্রকৌশলী মো. লিয়াকত আলীকে। তবে আশার বিষয় এই যে বাকি তিন কর্তার নাম-পরিচয় অসম্পূর্ণ থাকলেও কেবল লিয়াকত আলীর প্রোফাইলটিই প্রয়োজনীয় তথ্যে সমৃদ্ধ।
 ওয়াসার ওয়েবসাইটের মান্থলি এমআইএস নামের অপশনটিতে এখনো শোভা পাচ্ছে গত বছরের অক্টোবরের সর্বশেষ সংবাদগুলো।
 নিউজলেটার আর অ্যানুয়াল রিপোর্টে ক্লিক করলে একই জিনিস আসে।
 কমপ্লেন বিভাগের হেল্প বক্সটি কাজ করে না।
 ঢাকা ওয়াসার ওয়েবসাইটে বাংলা ভাষা ব্যবহার করা হয়নি।
 এখানে নাগরিকবান্ধব মেনুর বদলে গুচ্ছ আকারে মেনু সাজানো হয়েছে। ফলে মেনুর পরে সাব-মেনুতে যেতে হলে জটিলতায় পড়তে হয়।
 নগরবাসীকে নিজেদের প্রতি মাসের পানির বিলের জন্য ওয়েবসাইটটিতে লগ-ইন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে লগ-ইন করা, পাসওয়ার্ড দেওয়া প্রভৃতি জটিল কাজ করতে হয়। এট আরও সহজ করা দরকার।

Wednesday, September 29, 2010

Breakfast spots in Dhaka

Breakfast spots in Dhaka

For the best kinds of breakfast in town, Dhaka city is full of places to suit your satisfaction. We have assembled a list of places for you to go and make the best out of you early meal.
For continental breakfast the places to go are:

Café Mango
Situated in Dhanmondi road# 5 and Banani (right behind United Hospital), Café Mango offers breakfast such as sausages, cold sandwiches and some coffee. It's light and refreshing yet extremely fulfilling - tastewise! Café Mango is open from 11am onwards.

Cuppa Coffee
Cuppa Coffee has a breakfast set including eggs, sausages, toast and coffee. You could order some fresh orange, mango or papaya juice to set your mood for the morning. Along with that you have different kinds of healthy smoothies and other drinks, whichever suits you best! Cuppa Coffee opens at 11am.

La Vinci restaurant
Hotel La Vinci, in Kawran Bazaar, has an authentic and exclusive restaurant serving mouth-watering and scrumptious Italian cuisine. Food lovers come here for, among others, the tiramisu (an Italian dessert made with marscapone cheese, sponge cake and coffee) and cannelloni (a specialty containing cheese, chicken and pasta). La Vinci opens at 6 am.

Pizza Hut
Pizza hut, situated in Dhanmondi, Gulshan and Bailey road, offers you breakfast such as pasta and more. You can fulfil your appetite for the morning with a small sized cheese pizza to go with some fresh juice. Pizza Hut opens around 11am.

Cofi 11
Cofi 11, in Gulshan, opens at 11am and has amazing waffles for breakfast. Waffles are just one of the examples, you'll get everything there to get you going for the morning. Coffee, juice and any drink that suits your mood to go with your waffles or pie.

Red Shift
Situated in Gulshan 2, Red shift has breakfast delicious enough to keep you there for lunch and dinner. Waffles and sandwiches to go with healthy sausage salad and fresh juice or coffee is a common favourite. Red Shit is open around 11am.

Radisson
Radisson is well known across the globe for its undoubted class. Along with everything else, it offers classy breakfast as well! Anything and everything you desire for a healthy breakfast, you'll get in Radisson. And if you're staying there, there's no question about it. Along with your wonderful stay, you get some wonderful breakfast.

Westin
Much like Radisson, Westin offers a great breakfast of international cuisines. Aware of your health type, you can get exactly what you need.
For some delicious deshi breakfast you might want to try:

Star restaurant
Star restaurant opens at 5:30 am and offers the most amazing breakfast. The special paratha, chicken soup, mixed vegetables and daal will keep you coming back for more. To top it off, they have delicious tea to end your meal with a smile on your face. Star restaurant has branches all over Dhaka.

Ullash
Ullash also serves paratha, naan and anything that goes with them. Chicken, beef, vegetables and much more. Ullash opens around 6 am for joggers around Dhanmondi 11A and 12A. It's right between the two!

Bashori
This is a restaurant specializing in Bangladeshi food. You can order numerous kinds of delicious dishes ranging from the regular rice, biriani, vegetables, fish and meat items. Go for their local fish delicacies ranging from Ruhi, Koi, Hilsa, Kachki, Pabda - fried or curried, you choose! The same is true for poultry, beef and mutton items which include Kima Mattar and Chicken Jhal Fry. The interior is chic with intricate woodcarvings adorning the walls. The surrounding is cosy and relaxing with a selection of good food! It opens at 8.30 am for breakfast and is situated in Kemal Ataturk avenue.

Prince restaurant
Opening at 9.30 am, this deshi eatery has been around for some time now, and the guys over there promise 'princely' service! Some of their local delicacies include steaming birianis, tangy seafood curries, and chicken rezalla, all to go with everyone's favourite - plain boiled rice! Though the ambience is not particularly appealing, Prince has good food to offer, as well as friendly service! It's situated in National Stadium market.

Café Jheel
Situated in the busy business hub of town in Motijheel, this restaurant is extremely popular among office goers. They prepare the usual local items but are a cut above their competition! Café Jheel's chicken jhaal fry is an essential and their warm soft naans go nicely with a cup of warm tea! Café Jheel opens at 9.30 am.

Dhanshiri
Dhansiri specializes in typical tasty Bengali cuisine and they have stuck to their promise of providing hygienically prepared and low priced traditional dishes for the past 14 years. Dhanshiri opens at 11am for breakfast.

By Naziba Basher

অতিথি ও পর্যটকদের চোখে ঢাকা

অতিথি ও পর্যটকদের চোখে ঢাকা

সৈ য় দ আ ব দা ল আ হ ম দ
চাঁদ জয় করে পৃথিবীতে ফিরে এসে তিন নভোচারী নীল আর্মস্ট্রং, এডউইন অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স বিশ্ব ভ্রমণে বের হয়েছিলেন। ভ্রমণের অংশ হিসেবে তাঁরা ঢাকায়ও এসেছিলেন। ঊনষাট সালের সেই ঐতিহাসিক দিনটিতে তেজগাঁও পুরনো বিমানবন্দরে ঢাকার কৌতূহলী মানুষকে নীল আর্মস্ট্রং ও তার সঙ্গীরা চন্দ্র বিজয়ের গল্প শুনিয়েছিলেন। আর বলেছিলেন, ‘তোমাদের ছিমছাম নিরিবিলি ঢাকা শহরটি অপূর্ব।’
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কয়েকবারই এসেছেন ঢাকায়। ১৯২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ঢাকায় এলে বুড়িগঙ্গা নদীর বাকল্যান্ড বাঁধ সংলগ্ন করোনেশন পার্কে কবিকে দেয়া হয় জমকালো সংবর্ধনা। ‘তুরাগ’ নামে ঢাকার নবাবের বজরাটি কবির বিশ্রামের জন্য সুসজ্জিত করে রাখা হয়েছিল। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঢাকার মানুষের আতিথেয়তায় অভিভূত হয়েছিলেন কবি। এরপর ঢাকার বলধা গার্ডেন দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ফুল আর প্রকৃতির সান্নিধ্যে বেশ কিছুক্ষণ নীরবে কাটিয়েছিলেন। ধারণা করা হয় ‘ক্যামেলিয়া’ কবিতাটি বলধা গার্ডেনে বসেই লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
কিংবদন্তির মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ঢাকায় এসেছিলেন সত্তরের দশকে। মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীকে দেখতে ঢাকা স্টেডিয়াম উপচে পড়েছিল মানুষ। সেদিন তিনি ঢাকার মানুষকে আনন্দ দেয়ার জন্য মুষ্টিযুদ্ধের একটি প্রদর্শনী ম্যাচও খেলেছিলেন। মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিয়ে তার হাতে ঢাকার চাবি তুলে দেয়া হয়েছিল। আর মোহাম্মদ আলী বলেছিলেন, ‘ঢাকায় এসে আমি মুগ্ধ, এটা আমার প্রিয় শহর।’
দুনিয়ার এমন অনেক বিখ্যাত মানুষ ঢাকায় অতিথি হয়ে এসেছেন। তাদের মধ্যে যেমন আছেন রাষ্ট্রনায়ক, রাজা-রানী, শিল্পী, ক্রীড়াবিদ, অর্থনীতিবিদ ও বিজ্ঞানী; তেমনি আছেন বিশ্বের অনেক পর্যটকও। জাতিসংঘের দুজন মহাসচিব ডক্টর কুর্ট ওয়াল্ডহেইম ও জেভিয়ার পেরেজ দ্য কুয়েলার ঢাকা সফর করেছেন। তৃতীয়বার জাতিসংঘ মহাসচিব হিসেবে এসেছেন কফি আনান। ঢাকায় এসেছেন মহাত্মা গান্ধী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, নেলসন ম্যান্ডেলা, ইয়াসির আরাফাত, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, ফার্স্টলেডি হিলারি ক্লিনটন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। এসেছেন নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী প্রফেসর আবদুস সালাম, মাদার তেরেসা, অমর্ত্য সেন, গ্যুন্টার গ্রাস। এসেছেন হলিউডের নায়িকা অড্রে হেপবার্ন, গানের অতিথি কুন্দন লাল সায়গল, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, রবি শঙ্কর, কানন বালা, মেহেদী হাসান, নূরজাহান, গোলাম আলী এমনি আরও অনেকে।
একসময় বুড়িগঙ্গা তীরের এই বিচিত্র নগরীকে প্রাচ্যের রানী ঢাকা নামে ডাকা হতো। এই নগরীর বয়স চারশ’ বছর হয়ে গেল। পরিবর্তনশীল ভাগ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গড়ে ওঠা এই নগরী আকর্ষণ করেছে ওইসব বিদেশি পর্যটক আর দুনিয়ার বিখ্যাত সব মানুষকে। এই নগরীর মায়াবী আকর্ষণে তারা ছুটে এসেছেন এখানে হাজার হাজার মাইল দুর্গম পথ পেরিয়ে। এদের কেউ এসেছেন মোগল যুগে, কেউ এসেছেন ব্রিটিশ যুগে। আবার কেউবা পাকিস্তান শাসনামলে কিংবা স্বাধীন বাংলাদেশের বর্তমানকালে ঢাকা সফর করেছেন। অনেকে লিখেছেন তাদের অভিজ্ঞতার কথা, এই নগরীর জীবনধারার কথা।
ভ্রমণকারী পর্তুগিজ যাজক সিবাস্টিয়ান ম্যানরিখ ১৬৪০ সালের দিকে ঢাকায় এসেছিলেন। ঢাকা শহরে তাঁর অবস্থানকাল ছিল ২৭ দিন। এই অল্প কয়দিনে তিনি যা দেখেছেন এবং শুনেছেন তা লিখে গেছেন। ওই সময়ের শহরের বর্ণনা দিতে গিয়ে ম্যানরিখ মন্তব্য করেন, ‘এটিই হচ্ছে বাংলার প্রধান শহর আর দেশের সবচেয়ে উচ্চ পদাধিকারী নবাব বা ভাইসরয় বা প্রতিনিধির কার্যস্থল, যাকে সম্রাট নিয়োগ দেন। এই প্রতিনিধিদের দায়িত্ব সম্রাট বেশ কয়েকবারই তার নিজস্ব কোনো সন্তানের ওপরই অর্পণ করেন। এই নগরীটি বিরাট এবং অতি সুন্দর এক সমতল ভূমিতে এবং এখানে ফলবান গঙ্গা (বুড়িগঙ্গা) নদীর পাড়ে অবস্থিত। এর পাড় ঘেঁষেই শহরটি প্রায় দেড়লীগ (প্রায় সোয়া পাঁচ মাইল)-এর বেশি স্থান পর্যন্ত প্রসারিত। এই শহরে ব্যবসা-বাণিজ্য উপলক্ষে বিচিত্র জাতির মানুষ আসেন। নানান ধরনের পণ্যের বিরাট ব্যবসা এখানে হয়। এসব পণ্য বেশিরভাগই এ অঞ্চলের উত্তম ও অতি উর্বর ভূমি থেকেই উত্পাদিত হয়। এই ব্যবসা-বাণিজ্য নগরটির জন্য এত ধন-সম্পত্তি এনেছে যা ভাবলে স্তম্ভিত হতে হয়। বিশেষ করে এখানকার যাত্রীদের (মাড়োয়ারী ব্যবসায়ীদের) বাড়িতে যে পরিমাণ টাকা আছে তা গণনা করা অসম্ভব ভেবে এগুলো ওজন করা হয়। আমাকে বলা হয়েছে, গাঙ্গেয় এই বিশাল বাণিজ্য কেন্দ্র এবং এর উপকণ্ঠে দুই লাখেরও অধিক লোক বাস করে। বিস্মিত হওয়ার আরও কারণ রয়েছে। আর তা হলো প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্রের বিপুল সরবরাহ। এর বিভিন্ন বাজারে এমন কোনো পণ্য নেই, যা মানুষের কামনার বাইরে। এই নগর থেকে সম্রাট এবং অন্যান্য মোগল শাসনকর্তা যে পরিমাণ আর্থিক সুবিধা লাভ করেন তা অবিশ্বাস্য। শুধু এটুকুই বলতে চাই, কেবল পান বা ভারতীয় পাতা থেকেই তারা প্রতিদিন ৪ হাজার রুপি শুল্ক পেয়ে থাকে। ম্যানরিখ আরও উল্লেখ করেন, ‘এই অঞ্চলেই সবচেয়ে সূক্ষ্ম এবং উত্কৃষ্ট মসলিন তৈরি হয়। ৫০ থেকে ৬০ গজ লম্বা আর ৭ থেকে ৮ হাত চওড়া এ কাপড়গুলোতে সোনালি ও রুপালি রঙের রেশমের পাড় আছে। এসব বস্ত্র এত সূক্ষ্ম যে ব্যবসায়ীরা এক হাত লম্বা ফাঁকা বাঁশের ভেতরে এগুলো ঢুকিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিতরণের জন্য নিরাপদে বহন করতে পারত। আর এরূপ দৃঢ়ভাবে স্থাপিত করে এগুলো খোরাসান, পারস্য, তুরস্কসহ দূরদূরান্তের দেশে নিয়ে যায়। ঢাকার বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্কে ম্যানরিখ লিখেছেন, এটা এত ব্যাপক ছিল যে, একশ’রও বেশি পণ্যভর্তি জাহাজ বিদেশে চালান যেত। রফতানি পণ্যের মধ্যে কাপড়, চাল, চিনি, তেল ছিল প্রধান।
১৬৬৩ সালে ইতালীয় পর্যটক ও ঐতিহাসিক নিকোলো মানুচ্চি ঢাকায় আসেন। স্বল্পদিন অবস্থান করেন তিনি। ঢাকাকে তিনি মাঝারি ধরনের শহর হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে আয়তনের তুলনায় তখন লোকসংখ্যা ছিল বেশি। তিনি লিখেছেন, ঢাকার অধিকাংশ বাড়িঘরই খড়ের তৈরি। তবে কিছু কিছু ইটের তৈরি বাড়িঘরও ছিল। সেগুলো বেশিরভাগই বিদেশিদের। বিদেশি বাসিন্দাদের মধ্যে ইংরেজ, ওলন্দাজ এবং পর্তুগীজদের সংখ্যা ছিল বেশি।
ফরাসি ব্যবসায়ী পর্যটক টাভার্নিয়ার ১৬৬৬ সালে প্রাচ্যের রহস্যনগরী ঢাকায় এসেছিলেন। ঢাকায় তাঁর অবস্থান ছিল মাত্র ষোল দিনের। এ স্বল্পকালীন অবস্থানে তিনি দু’বার নবাব শায়েস্তা খানের সঙ্গে দেখা করেন এবং ফ্রান্স থেকে তিনি যেসব অলঙ্কার ও রত্নাদি এনেছিলেন তা বিক্রি করেন। ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার সময় তিনি প্রায় ১১ হাজার টাকা মূল্যের পণ্যসামগ্রী ক্রয় করেন। টাভার্নিয়ার ঢাকাকে অনেক বড় শহর বলে উল্লেখ করেন। দৈর্ঘ্য ছয় মাইলেরও বেশি। শহরের স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা বলতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, এদের অধিকাংশ কাঠমিস্ত্রি, নৌকা তৈরি করা এদের প্রধান কাজ। বাঁশ ও কাদামাটির তৈরি বাড়িঘরে এরা বসবাস করে। টাভার্নিয়ার এ বাড়িগুলোকে মুরগির ঘর বলে মন্তব্য করেন। টাভার্নিয়ার ঢাকাকে একটি বৃহত্ বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে বর্ণনা করে লেখেন, মোগল সাম্রাজ্যের ১২টি বাণিজ্য কেন্দ্রের মধ্যে এটি ছিল অন্যতম।
১৮২৪ সালে কলকাতার বিশপ রেভারেন্ড হেবার ঢাকা শহরে আসেন। এখানে ২২ দিন তিনি অবস্থান করেন। হেবারের ভাষায় : যে নদীর তীরে ঢাকা অবস্থিত তার রূপ অনেক বদলে গেছে। রেনেলের মানচিত্রের সঙ্গে এর কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। ওই সময় এই নদীটি ছিল সরু কিন্তু এখন এমনকি গ্রীষ্মকালেও কলকাতার হুগলি নদীর চেয়ে কোনো অংশে ছোট নয়। ঢাকায় হেবার তত্কালীন কালেক্টর মি. মাস্টারের আতিথ্য গ্রহণ করেছিলেন। তার কাছ থেকে শোনা ঢাকার বর্ণনা থেকে হেবার লিখেছেন, ঢাকা এখন প্রাচীন গৌরবের ধ্বংসাবশেষ মাত্র। এর বাণিজ্য পূর্বাপেক্ষা ষাট ভাগ কমে গেছে। ঢাকার সুরম্য অট্টালিকা, শাহ জাহাঙ্গীর নির্মিত দুর্গ, তার তৈরি মসজিদ, প্রাচীন নবাবদের রাজপ্রাসাদ, ওলন্দাজ, ফরাসি এবং পর্তুগিজদের ফ্যাক্টরি ও চার্চ সবই ধ্বংসপ্রাপ্ত এবং জঙ্গলে ঢেকে গেছে। মোগল যুগের ঢাকা থেকে কোম্পানি আমলের ঢাকার অনেক পার্থক্য তার বর্ণনা থেকে পাওয়া যায়।
১৮৪০ সালে ঢাকায় আসেন বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ার্সের লে. কর্নেল সিজেসি ডেভিডসন। দূর থেকে আবছাভাবে ডেভিডসনের চোখে পড়ল ঢাকা। চারদিকে ঘন কুয়াশা। এর মধ্যে যে জিনিসটি নজরে এলো, তা হলো শহরের বিপরীতে নদীর পশ্চিম দিকে উঁচু ও স্থায়ী এক দোতলা বাড়ি। শহরটি বুড়িগঙ্গার পূর্ব তীরে। লম্বায় হবে প্রায় দুই মাইল। তিন চার মাইল দূর থেকে বা টেলিস্কোপ দিয়ে দেখলেও ভারি সুন্দর দেখায় শহরটি। ঢাকায় পা রেখে ডেভিডসন দেখলেন, এক টাকা খরচ করলে পাওয়া যায় ২৫৬টি কমলা আর দুই টাকা খরচ করলে একটি বেহালা। দিন রাত সারাক্ষণ ঢাকায় শোনা যায় বেহালার সুর। আবার এও দেখলেন, অরণ্য গ্রাস করছে শহর। ডেভিডসন লিখেছেন, শহর ঘিরে আছে যে জঙ্গল তা এড়িয়ে চলবেন, বিশেষ করে সূর্যাস্তের সময়। এ বিষয়ে আমি তাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। ওই সময় জঙ্গল ও শহরের সীমান্ত পেরোবার বা শহরে ঢোকার সময় শরীর হঠাত্ শিউরে ওঠে।
ঊনিশ শতকের তিরিশের দশকে সিভিল সার্জন হিসেবে ঢাকায় এসেছিলেন ডাক্তার জেমস টেইলর। পরের বছর ‘টপোগ্রাফি অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিকস অব ঢাকা’ পুস্তক আকারে বের হয়। টেইলর ঢাকা সম্পর্কে লিখেছেন, ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা যেখানে মিলেছে, তার প্রায় মাইল আটের ওপরে বুড়িগঙ্গার উত্তরে অবস্থিত ঢাকা। নদীটি গভীর ও উপযোগী বড় বড় নৌকা চলাচলের। বর্ষাকালে নদী ভরে যায় এবং বড় বড় মিনার ও অট্টালিকাশোভিত ঢাকা নগরীকে মনে হয় ভেনিসের মতো।
সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন ব্রাদার রবার্ট। প্রথম ঢাকা আসেন ১৯৪৬ সালের জানুয়ারি মাসে, নদীপথে কলকাতা থেকে। সে সময় ব্রিটিশ এবং আমেরিকান সৈন্যরা ঢাকা থেকে চলে যাচ্ছিল। ১৯৬৮ সালে তিনি সেন্ট গ্রেগরিজ হাইস্কুলে যোগ দেন। আমেরিকান নাগরিক ব্রাদার রবার্ট ১৯৭৫ সালে বর্ণনা করেছিলেন তার ঢাকার অভিজ্ঞতা : ‘আমি প্রথম এসে যে ঢাকাকে দেখেছি ঢাকা এখন তার চাইতে অনেক বিস্তৃত, অনেক সফিসটিকেটেড। প্রথম ঢাকায় এসে একটিমাত্র বিশাল রাস্তা দেখেছি, সেটি জনসন রোড। নদী থেকে যুদ্ধের সরঞ্জাম বিমানবন্দরে নেয়ার জন্য একটা পথ সে সময় তৈরি করা হয়েছিল। স্টেশন ছিল ফুলবাড়িয়ায়। রমনা এলাকায় গোটাকয়েক দালানকোঠা ছিল। তেজগাঁও বিমানবন্দর সে সময় যুদ্ধের জন্য তৈরি হয়েছিল। মগবাজার তখন এক গ্রামীণ হাট মাত্র। শুধু আহসান মঞ্জিলই ছিল হ্যান্ডসাম বিল্ডিং। নদীতে লঞ্চ দেখিনি কখনও। স্টিমার যেত গোয়ালন্দ পর্যন্ত। নদীতে চলাচলের একমাত্র উপায় ছিল গয়না নৌকা। ইসলামপুরের কয়টা পথ বাদে আর সব পথ ছিল সরু। ধোলাইখাল ছিল। সব মিলিয়ে সে সময়ের ঢাকা মনে হয়েছে ইন্টারেস্টিং। অনেক ভিড় ছিল না, অনেক যানবাহন ছিল না। সে সময় যদিও ইলেকট্রিসিটি ছিল। তবু খুব কম দোকানে বৈদ্যুতিক আলো ছিল। প্রায় সব দোকানে রাতে জ্বলত কুপিবাতি। রমনা, তেজগাঁও এলাকা সে সময় পুরনো ঢাকা থেকে ছিল বিচ্ছিন্ন। টঙ্গী ছিল ছোট্ট একটা এলাকা। সেকালেও যানবাহন বলতে পথে দেখা যেত শুধুই এক্কাগাড়ি। আমেরিকানরা যাওয়ার সময় বিস্তর যুদ্ধের ট্রাক নিলামে বেচে গিয়েছিল। সেগুলোকে রদবদল করে বাস বানিয়ে নামানো হলো ঢাকার পথে। রিকশা ছিল না একদম। ট্যাক্সি দেখেছি কিনা মনে করতে পারি না। ঢাকা থেকে বাইরে যাওয়ার একমাত্র সড়ক ছিল নারায়ণগঞ্জের দিকে। ট্রেন ও গয়না নৌাকা ছাড়া বাইরে যাওয়ার পথ ছিল না। ওরিয়েন্ট এয়ার বলে একটা বেসরকারি বিমান কোম্পানিই বোধ হয় প্রথম ঢাকায় বিমানের সার্ভিস প্রবর্তন করে। পরে এলো পিআইএ।
সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন ব্রাদার হোবার্ট। যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ হোবার্ট ঢাকাকে দেখেছেন ১৯৪৮ সাল থেকে। ১৯৭৫ সালে ঢাকা সম্পর্কে তার বর্ণনা : সে সময় ভিক্টোরিয়া পার্কের আশপাশই ছিল সবচেয়ে ব্যস্ত এলাকা। কেনাকাটা করতে মানুষ আসত চকবাজারে। এখানকার সাহেব-সুবাদের মতে, তখন কেউ নিউমার্কেটে যেত না। সেকালের সিনেমা হল ব্রিটানিয়ার পাশ দিয়ে নিউমার্কেট যাওয়ার একটা সরু পথ ছিল। তার আশপাশ কেবল জঙ্গলে ভরা। লাল ইটের বাড়িগুলোতে বিলেতি সাহেবরা থাকতেন। গুলিস্তান ছিল না। আজকের জিপিও ছিল পুরনো দালানে। মাছ পাওয়া যেত বিস্তর। আজকাল ঢাকায় সাপ দেখি না। আগে সাপ, বেজি, সজারু এই শহরে দেখা যেত অহরহ। শিম, বেগুন দু’আনা সের থেকে দশ পয়সা বাড়লে, ঢাকার মানুষ মাথায় হাত দিত। দু’আনা দিয়ে তরমুজ কিনে ভাবত হয়তো ঠকেছি। বিয়ের যৌতুক হিসেবে তখনও ট্রানজিস্টর আসেনি। জামাইরা প্রথমে দাবি করত রুমাল। তারপর বিয়ের বাজারে একটি র্যালি সাইকেল। মোঘল সুবাদার ইসলাম খাঁ ১৬০৮ সালে মতান্তরে ১৬১০ সালে ঢাকায় এসেছিলেন। সে থেকেই ঢাকার প্রতিষ্ঠাকাল ধরা হয়। যদিও ঐতিহাসিক অধ্যাপক হাসান দানীর মতে, ঢাকার বয়স এক হাজার বছরেরও বেশি। কলকাতার অনেক আগের শহর এই ঢাকা। ঢাকা এখন স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী। এর আগে এই ঢাকা সুবা-বাংলার রাজধানী এবং দু’বার প্রাদেশিক রাজধানীর মর্যাদা পেয়েছে। স্বাধীন দেশের রাজধানীরূপে বিগত ৩৬ বছরে ঢাকার পরিধি অনেক বেড়েছে। বেড়েছে জনসংখ্যাও। বিশ্বখ্যাত অতিথিরা আসছেন এই নগরীতে। মাত্র কয়েক বছর আগে এই নগরীর আতিথ্য গ্রহণ করেছেন বিশ্বের সেরা ধনী মানুষ বিল গেটস। নব্বইয়ের দশকে ঢাকায় এসেছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন। দিল্লি থেকে এয়ারফোর্স-১-এ করে আসার সময় আকাশ থেকে তিনি বললেন, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ আপনাদের দেশটি ও রাজধানী শহর ঢাকা খুব চমত্কার। এই ঐতিহাসিক নগরীতে আসতে পেরে আমি গর্বিত।’ প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের আগে এসেছিলেন তার পত্নী যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্টলেডি হিলারি ক্লিনটন। তার সম্মানে ২৯ হেয়ার রোডে (রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়) রাষ্ট্রীয় নৈশভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। অনুষ্ঠান শেষ করে গাড়িতে ওঠার আগে সাংবাদিকদের হিলারি ক্লিনটন বললেন, ঢাকার স্মৃতি আমি ভুলব না। আপনারা খুবই সৌভাগ্যবান। আপনাদের একজন নারী প্রধানমন্ত্রী এবং আরেকজন নারী বিরোধীদলীয় নেত্রী। এ ব্যাপারে আমাদের দেশ এখনও রক্ষণশীল। নারীরা এ পর্যায়ে আসতে পারেনি। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। আর বিরোধীদলীয় নেত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা। হিলারি ক্লিনটন তার আত্মস্মৃতি নিয়ে যে বই লিখেছেন সেখানেও আছে ঢাকার কথা। এ নগরীতে পিঁপড়ের সারির মতো এত মানুষের উপস্থিতির কথা তিনি তুলে ধরেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আরেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারও দু’বার ঢাকায় আসেন। একবার তিনি তার পত্নীকে সঙ্গে নিয়ে রিকশায় করে রমনা পার্কের সামনের রাস্তায় বেড়িয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার তিনি মিরপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে পাখির কলরব আর প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন।
কিংবদন্তির গায়ক কুন্দন লাল সায়গল ঢাকায় এসে ডিমলার গাড়ি আর ঘোড়ার গাড়িতে ঘুরে বেড়িয়েছেন। ঢাকার রাস্তায় তিনি গেয়েছেন, ‘আমার বীণায় গান আছে, আর তোমার বীণায় সুর আছে গো সুর আছে।’ কানন বালা ঢাকায় এসে ‘আমি বন ফুল গো’ গানটি গেয়ে ঢাকার মানুষকে অভিভূত করেছিলেন।
আশির দশকে ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ঢাকায় এসে বলেছিলেন, এই ঐতিহাসিক নগরী আমার মনে দাগ কেটেছে। ট্রেনে করে ঢাকা থেকে রানী গিয়েছিলেন গাজীপুরের বৈরাগীরচালা গ্রামে। সেখানে তিনি ঢেঁকিতে ধান ভানা, মুড়ি ভাজা ও মুরগি পালনসহ মানুষের জীবনধারা উপভোগ করে মুগ্ধ হয়েছিলেন। মহাত্মা গান্ধী, নেলসন ম্যান্ডেলা, মাদার তেরেসা ঢাকায় এসে শান্তির বাণী শুনিয়ে গেছেন। চারশ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই ঢাকা নগরী আমাদের গর্বের প্রিয় নগরী।