Pages

Search This Blog

Wednesday, December 1, 2010

পুরাতন কাপড়ের হাট

পুরাতন কাপড়ের হাট

রাজধানীতে ফেরিঅলারা বিভিন্ন পাড়া-মহলস্নায় ঢুকে পুরাতন জামা-কামড়, পস্নাস্টিকের দ্রব্য কিংবা সিলভারসহ শাক-সবজি দিয়ে বিনিময় করে। 'পুরনো জামা-কাপড় আছে?' এই ধরনের হাঁক-ডাক দিয়ে বিভিন্ন বাসাবাড়ির গৃহিনীদের কাছ থেকে এসব বিনিময় করে নিয়ে যায়। কোথায় নিয়ে যায়? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেল পুরান ঢাকার বেচারাম দেউরি, বেগম বাজারে পুরাতন জামা-কাপড় বিক্রির মার্কেট রয়েছে। ওখানে নিয়ে ফেরিঅলারা গৃহিনীদের কাছ থেকে আনা জামা-কাপড় সের দরে বিক্রি করে। আবারও প্রশ্ন জাগে, পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা এই কাপড় নিয়ে কী করে? পুরান ঢাকার বেচারাম দেউরির কাপড়ের মার্কেটে গিয়ে এর উত্তর খুঁজে পাওয়ার জন্য গত রোববার পুরাতন কাপড় পাইকারি ব্যবসায়ী আরেফ আলীর সাথে কথা হয়। বয়স ৬৫ বছর। থাকেন বেগম বাজারে ভাড়া বাড়িতে, পরিবার-সন্তানদের নিয়ে। প্রায় ৫ বছর ধরে পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা করছেন। তার দেশের বাড়ি বিক্রমপুরে। আরেফ আলী বলেন, আমরা ফেরিঅলাদের কাছ থেকে পুরান কাপড় সের দরে ক্রয় করে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে থাকি। আমাদের পাইকারি ক্রেতারা সাধারণত ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার গ্রামগঞ্জের। যেমন রংপুর, দিনাজপুর, সিলেট, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, বরিশাল, খুলনা ইত্যাদি অঞ্চল থেকে পাইকারি ক্রেতা আসে। তারা আমাদের কাছ থেকে ক্রয় করে খুচরা বিক্রি করে। এক প্রশ্নের জবাবে আরেফ আলী জানান, আমরা কাপড়ের মধ্যে প্যান্ট, শার্ট, শাড়ি, লুঙ্গি, মশারিসহ যাবতীয় পুরাতন কাপড় বিক্রি করে থাকি। এখানে প্রায় দু'শত দোকানদার রয়েছে। এই ব্যবসার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় এক হাজার লোক জড়িত। সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার মার্কেট বন্ধ থাকে। তিনি বলেন, সিলভার ফেরিঅলাদের কাছ থেকে পিস হিসেবে অথবা ৩-৪ টাকা কেজি দরে হিসেবে পুরাতন কাপড় ক্রয় করা হয়। অন্য আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সরাসরি পরিচিত লোক ছাড়া অপরিচিত কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কাপড় ক্রয় করা হয় না। এখানে চুরির মাল হলে জরিমানা দিতে হবে। আমাদের দোকানদারদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে যে, অপরিচিত কোনো লোকের কাপড় কেনা যাবে না। কিন্তু যে কোনো সিলভার ফেরিঅলার কাছ থেকে কেনা যাবে। এখানে ৮-১২ ফিটের প্রতিটি দোকান ভাড়া ৩ হাজার টাকা। আর অ্যাডভান্স নিচ্ছে এক লাখ টাকা। আরেফ আলী জানান, এখানে স্বাধীনতার পর এই ব্যবসা খুব জমজমাট ছিল। গত কয়েক বছর ধরে ব্যবসার অবস্থা খারাপ যাচ্ছে। আরেফ আলীর সংসারে ৮ জন সদস্য রয়েছে। বড় মেয়ে ও বড় ছেলে বিয়ে দিয়েছেন। ৩ হাজার টাকা বাসা ভাড়া দিয়ে কোনো রকমে বাস করছেন। তার সংসারে মাসিক খরচ ১৪-১৫ হাজার টাকা। এত টাকা পুরাতন কাপড় বিক্রি করে লাভ হয় না। ছেলে এবং মেয়ের জামাই কিছু অর্থ দিয়ে প্রতি মাসে সহায়তা করে থাকেন।
Source: Daily Ittefaq

No comments:

Post a Comment