Pages

Search This Blog

Sunday, October 31, 2010

নগরীর গ্রন্থাগার

নগরীর গ্রন্থাগার

জ্ঞানপিপাসুদের সঠিক স্থান

কটি জাতির উন্নতি নির্ভর করে শিক্ষার ওপর। শুধু পুঁথিগত শিক্ষাই নয়, পাশাপাশি প্রয়োজন আরো নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা। সেই জ্ঞান অর্জনের জন্য গ্রন্থাগারের ভূমিকা অপরিসীম। নগরীতে সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে সাধারণ গ্রন্থাগার আছে সাড়ে ৩শর ওপরে। নগরীর উলেস্নখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থাগার নিয়ে আমাদের এবারের মূল ফিচার। লিখেছেন খালেদ আহমেদ

সুফিয়া কামাল জাতীয় গ্রন্থাগার

রাজধানীর সবচেয়ে জনপ্রিয় গ্রন্থাগার হলো সুফিয়া কামাল জাতীয় গ্রন্থাগার। ১৯৫৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি এ গ্রন্থাগারটি স্থাপিত হয়। সবার জন্য উন্মুক্ত এ গ্রন্থাগারে বইয়ের সংখ্যা ১ লাখ ৮০ হাজার। এখানে অধিকসংখ্যক পাঠকের সমাবেশ ঘটে। এই গ্রন্থাগারে প্রতিদিন প্রায় ২৫টি জাতীয় দৈনিক পড়া যায়। সেইসাথে নিয়মিত ২৫টি বিদেশি ম্যাগাজিনও থাকে। এই গ্রন্থাগারের আসন সংখ্যা ৪শ। প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার পাঠকের সমাগম ঘটে। শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। ১০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, শাহবাগে এই গ্রন্থাগারের অবস্থান। ফোন : ৮৬২৬০০১।

বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থাগার

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৭২ সালের ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। ৫ লাখের ওপর সংগ্রহ আছে এ গ্রন্থাগারে। আসন সংখ্যা ১৫০ হলেও প্রতিদিন ৫ শতাধিক পাঠকের আগমণ ঘটে। এছাড়া সংবাদপত্র, ম্যাপ এবং মাইক্রোফিল্মের আছে বড় একটা সংগ্রহ। যে কেউ এখানে এসে পড়াশোনা করতে পারেন। তবে কোনো বই বাসায় নেওয়া বা ফটোকপি করা যায় না। তবে ক্যামেরার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় অংশের ছবি তুলে নেওয়া যায়। শুক্রবার ও শনিবার এবং অন্যান্য ছুটির দিন ছাড়া সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পড়া যায়। গ্রন্থাগারটি ৩২ বিচারপতি এস এম মোর্শেদ সরণি, আগারগাঁওয়ে অবস্থিত। ফোন : ৯১২৯৯৯২, ৯১১২৭৩৩।

জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৮৭ সালের ২৬ মার্চ এ গ্রন্থাগারটি স্থাপিত হয়। এর সংগ্রহশালায় আছে প্রায় ১৫ হাজার বই। কেউ বাসায় নিতে চাইলে, বার্ষিক ১০০ টাকা চাঁদা দিয়ে সদস্য হতে হয়। এরপর ফেরতযোগ্য ১শ থেকে ৪শ টাকা পর্যন্ত নগদ জমা দিয়ে, সর্বোচ্চ চারটি বই ২০ দিনের জন্য বাসায় নেওয়া যায়। যেকোনো পাঠক খাতায় নাম লিপিবদ্ধ করে পাঠাগারটিতে পড়তে পারেন। শুক্র, শনিবার এবং সরকারি ছুটির দিন বাদে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এটি ৫/সি বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গুলিস্তানে অবস্থিত। ফোন : ৯৫৫৫৭৪৩।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের তিন তলায় ১৯৭৫ সালে এ গ্রন্থাগারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। অনেকেই ইসলাম ধর্মের নানা হাদিস এবং ইতিহাস জানার জন্য বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিয়েও সুরাহা পান না। এ সব বিষয়ে ইতিহাস, প্রবন্ধ, হাদিস, কোরআনসহ নানা বিষয়ে বিশাল সংগ্রহ রয়েছে এখানে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এ গ্রন্থাগারে প্রায় ৭৫ হাজার বইয়ের সংগ্রহ রয়েছে। আসন সংখ্যা ২ শ হলেও_প্রতিদিন প্রায় ৫ শতাধিক পাঠকের সমাগম ঘটে। সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে এশার নামাজের আগ পর্যন্ত এ লাইব্রেরি খোলা থাকে। ফোন : ৯৫৫৬৭২২।

রাজা রামমোহন লাইব্রেরি

পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলিতে ব্রাহ্মসমাজ ভবনের পাশেই একটি ভবনের দোতলায় এ পাঠাগারটির অবস্থান। এর পরিচালনাও করেন ঢাকার ব্রাহ্মসমাজ। তবে এখন আর মানুষের পদচারণায় মুখর হয় না কক্ষটি। ঢাকার পুরোনো প্রসিদ্ধ এ গ্রন্থাগারটি সাত বছর ধরে তালাবদ্ধ রয়েছে। জানা গেছে, ব্রাহ্মসমাজের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক অভয় চন্দ্র দাস ১৮৭১ সালের ১৮ জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠা করেন এ পাঠাগারটি। তিনি ব্রাহ্ম মন্দিরের দোতালার একটি কক্ষে অল্প কিছু বইপত্র নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯১০ সালে তৎকালীন আইসিএস ও ভাইসরয় কাউন্সিলের সদস্য কেজি গুপ্ত পাঠাগার ভবন উদ্বোধন করেন। তখন সংগ্রহশালায় বই ছিল ১০ থেকে ১২ হাজার। এ পাঠাগারে পড়তে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে কবি বুদ্ধদেব বসু, জীবনানন্দ দাশ, অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল হাই, সুফি মোতাহার হোসেন, বেগম সুফিয়া কামাল, কবি শামসুর রাহমানের নাম উলেস্নখযোগ্য। তবে ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে লুণ্ঠনের শিকার হয়। স্বাধীনতার পর আবার পাঠাগারটি খোলা হয়। তবে গত সাত বছর ধরে গ্রন্থাগারটি বন্ধ রয়েছে। গ্রন্থাগারটির সংশিস্নষ্টরা জানান, অচিরেই ঢাকার এই ঐতিহ্যবাহী গ্রন্থাগারটি পাঠকদের জন্য খুলে দিতে।

বার্ক লাইব্রেরি

বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসার্চ ইনস্টিটিউট (বার্ক) লাইব্রেরি। এখানে কৃষিভিত্তিক বই এবং জার্নালের সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজার। আসন সংখ্যা ৫০। যে কেউ ইচ্ছা করলেই এ লাইব্রেরিতে পড়তে পারেন। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি এবং অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। ফার্মগেটের খামারবাড়ি এলাকার ভেতর এ গ্রন্থাগারের অবস্থান।

ফোন : ৯১৩২৪১৫।

নজরুল ইনস্টিটিউট

১৯৮৫ সালের ১২ জুন ধানমন্ডির কবি ভবনে এ গ্রন্থাগারটি স্থাপিত হয়। কাজী নজরুল ইসলামের সবকিছু একত্রে পেতে এ গ্রন্থাগারের তুলনা নেই। তার সাহিত্য, সংগীত, সম্পাদনা ও প্রকাশনা, হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি,পত্রাবলি, বিভিন্ন রেকর্ডের বিশাল সংগ্রহ নিয়ে গড়ে ওঠেছে এটি। এখানে তার সৃষ্টিকর্ম নিয়ে গবেষণাধর্মী বইও রয়েছে। এখানে বইয়ের সংখ্যা ৮ হাজার এবং আসন সংখ্যা ১০। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি এবং অন্যান্য সরকারি ছুটিরদিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে। বাড়ি ৩০০বি, রোড ২৮ (পুরোনো), ধানমণ্ডি আ/এ-তে অবস্থিত। ফোন : ৯১১৪৬০২।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র

'আলোকিত মানুষ চাই' শেস্নাগানকে লালন করে অধ্যাপক আবদুলস্নাহ আবু সায়ীদ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৭৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর। ইতিমধ্যে এ পাঠাগারটি পাঠকের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। এখানে বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। সাধারণ সদস্য হওয়ার জন্য ২শ টাকা এবং বিশেষ সদস্যের জন্য ৪শ টাকা ফেরতযোগ্য জামানত দিতে হয়। মাসিক চাঁদা ১০ টাকা। সদস্যরা একসঙ্গে দুটি বই দুই সপ্তাহের জন্য পড়ার জন্য নিতে পারে। এ কেন্দ্রের রয়েছে বেশ কিছু ভ্রাম্যমান লাইব্রেরি। এ বিষয়টি এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এর সদস্য হতে সাধারণ ১শ এবং বিশেষ ২শ টাকা ফেরতযোগ্য জামানত দিতে হয়। সদস্য না হয়েও শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন যে কেউ বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বই পড়তে পারেন। ১৪ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, বাংলামোটরে এর অবস্থান। ফোন : ৯৬৬০৮১২।

ব্যান্সডক লাইব্রেরি

নানা বিজ্ঞান বিষয়ক বই, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রিকা এবং গবেষণাপত্রের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে ব্যান্সডক লাইব্রেরিতে। এখানে সংগ্রহে আছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ের ২০ হাজার পাঠ্যবই এবং ২৫ হাজার জার্নাল। আসন সংখ্যা শতাধিক। প্রতিদিন দুই থেকে তিনশত পাঠক আসেন এখানে। গবেষকদের জন্য ইন্টারনেট সুবিধাসংবলিত ৪০টি কম্পিউটার রয়েছে এর ল্যাবে। প্রয়োজনীয় অংশ ফটোকপিও করা যায়। শুক্র, শনিবার এবং সরকারি ছুটির দিন ছাড়া সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পেতে পারেন এই লাইব্রেরির সেবা। বিসিএসআইআর ক্যাম্পাস (সায়েন্স ল্যাবরেটরি), মিরপুর রোডে এর অবস্থান।

ফোন : ৯৬৬৪২৫০, ৮৬১০২২৪।

ব্রিটিশ কাউন্সিল

ইংরেজি ভাষায় লিখিত আন্তর্জাতিক মানের একাডেমিক ও নন-একাডেমিক বইপত্র রয়েছে এখানে। সেইসাথে সাইবার ক্যাফে এবং ইংরেজি ভাষা শেখার সুবিধা পাওয়া যাবে। এই লাইব্রেরির বইয়ের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। আসন সংখ্যা ৩শ হলেও প্রতিদিন ৫ শতাধিক পাঠক আসেন এখানে। ৫ ফুলার রোড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এ প্রতিষ্ঠান অবস্থিত। ফোন : ৮৬১৮৯০৫-৭।
Source: Daily Ittefaq

Sunday, October 24, 2010

আহা! ফুটপাত

ফুটপাত কী?
শহরে বসবাসকারী সবাই 'ফুটপাত' শব্দটির সাথে পরিচিত। এই ফুটপাতের পরিকল্পানাটি কিন্তু এসেছে মহাসড়ক নির্মাণের সূত্র ধরেই। একঅর্থে এটা মহাসড়কের মতোই। তবে পার্থক্যটা হচ্ছে_মহাসড়কে ভারি যানবাহন চলাচল করে; আর ফুটপাতে সাধারণ মানুষ যাতায়াত করে। বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে ফুটপাতকে সংজ্ঞায়িত করেছেন_সাধারণ জনগণের অধিকৃত পথ, যেখানে পায়ে হেঁটে, যাতায়াত করা যায়, তাকে ফুটপাত বলে।

আবার, তখনকার দিনে বাহন হিসেবে ঘোড়ার প্রচলন ছিল বলে কেউ কেউ ফুটপাতকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন_যেখানে মানুষ পায়ে হেঁটে, ঘোড়ায় চড়ে অথবা ছোট-যানবাহন নিয়ে চলাচল করে, তাহাই ফুটপাত।

সাধারণত মহাসড়ক প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ফুটপাতের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। হাইওয়ে তৈরি হওয়ার ফলে দূরপালস্নার বিভিন্ন ভারি যানবাহনের কারণে স্থানীয় সাধারণ জনগণের চলাচল বাঁধাগ্রস্ত হওয়ার কারণেই ফুটপাত তৈরির সূত্রপাত হয়। প্রথম দিকে মহাসড়কের সংস্কারের সময় ফুটপাতের ব্যাপারে কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। কিন্তু ১৯৪৭ সালের পর মানুষের যাতায়াত সুবিধার জন্য ফুটপাত নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন পার্ক ও বড় বড় সড়কগুলির সাথে ফুটপাত তৈরি করা হয়। তবে বর্তমানে শহরের ফুটপাতগুলোর চেহারা ফুটপাতের সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছে।

আহা! ফুটপাত

পথচারীদের স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটার উদ্দেশ্যেই ফুটপাত বানানো হয়। অথচ নগরীর ফুটপাত দিয়ে আজকাল পথচারীরা হাঁটতে পারে না বললেই চলে। দেখা যায়_কেউ ফুটপাতে গাড়ি রাখছেন, কেউবা রাখছেন দোকানের মালপত্র, কোথাও আবার ফুটপাতের ওপর রয়েছে ফুট ওভারব্রিজের বিম। সব মিলিয়ে ফুটপাতের সুবিধা পথচারীরা সঠিকভাবে ভোগ করতে পারছেন না। নগরীর ফুটপাত নিয়ে আমাদের এবারের মূল ফিচার। লিখেছেন খালেদ আহমেদ

আমাদের সবার প্রিয় ঢাকা নগরীর ফুটপাতগুলোতে পথচারীরা বর্তমানে স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটাচলা করতে পারে না। তাই তারা বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রধান সড়ক দিয়ে হাঁটাচলা করছে। এতে একদিকে যানজট বাড়ছে, তেমনি সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটছে। নগরীর শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, শ্যামলী, মিরপুর, প্রেসক্লাব, পল্টন, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, খিলগাঁও, রামপুরা, বাড্ডা, মৌচাকসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতগুলো অনেকটাই দখল হয়ে গেছে। এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতের নানা ব্যবহার। যেমন_ফুটপাতের ওপর গাড়ি রাখা হচ্ছে, মোটরসাইকেল চলাচল করছে ফুটপাত দিয়ে, ফুটপাতের ওপর বসেছে দোকানপাট, অনেকে আবার দোকানের জিনিসপত্র রাখছেন ফুটপাতের ওপর, ফুটপাতের ওপর পত্রিকার স্টল ও টিকিট বাসের কাউন্টার, কিংবা ফুট ওভারব্রিজের বিম।

শহরে বসবাসকারী সবাই 'ফুটপাত' শব্দটির সাথে পরিচিত। এই ফুটপাতের পরিকল্পানাটি কিন্তু এসেছে মহাসড়ক নির্মাণের সূত্র ধরেই। পথচারীদের স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটার উদ্দেশ্যেই ফুটপাত বানানো হয়। পথচারীদের জন্য ফুটপাত বানানো হলেও নগরীর ফুটপাতগুলো ব্যবহার হচ্ছে অন্য কাজে। অনেকেই ফুটপাত দখল করে নিজেদের কাজে ব্যবহার করলেও তাদের সরানো হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে পুলিশ প্রশাসন ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অভিযান চালালে কিছুদিন ফুটপাতগুলো ফাঁকা থাকে। তবে কয়েকদিন পর পুনরায় দখল হয়ে যায় বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ীদের কাছে। ফুটপাত দখলের কারণে পথচারীদের দুর্ভোগের কথা কেউ মাথায় রাখেন না।



ফুটপাতে গাড়ি পার্কিং

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক সচেতন নাগরিক নিজের গাড়িটি ফুটপাতের ওপর পার্ক করে রেখেছেন। বিশেষ করে, নগরীর বিভিন্ন মার্কেটের সামনেই ফুটপাতের ওপর গাড়ি পার্কিংয়ের দৃশ্য চোখে পড়ে। নগরীর মতিঝিল, অভিসার সিনেমা হলের সামনে, পুরানা পল্টন, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট এলাকা, মহাখালি, ধানমণ্ডি, গুলশান ও কাকরাইল এলাকায় ফুটপাতে গাড়ি পাকিংয়ের চিত্র বেশি চোখে পড়ে। ফুটপাতের ওপর গাড়ি রাখার জন্য তাদের এতটুকু অনুশোচনা হয় না যে, তারা আইন মানছেন না। ফুটপাতে পার্কিংয়ের কারণে যানজটসহ পথচারীদের চলাচলের অসুবিধার কথা তাদের মনেই থাকে না।



ফুটপাতে মোটরসাইকেল

নগরীর মোটরসাইকেল চালকদের একটা কথা কখনোই মনে থাকে না যে, ফুটপাত দিয়ে তারা চলাচল করতে পারেন না। ফুটপাত হলো পথচারীদের চলাচলের নিরাপদ জায়গা। অথচ নগরে বের হলেই প্রতিটি সড়কে দেখা যায়, যানজট এড়াতে মোটরসাইকেল চালক ফুটপাতে উঠে পড়ছেন। পথচারী থাকায় তীব্র হর্ন বাজাচ্ছেন। এতে পথচারীদের সমস্যা হয় বলে ফুটপাত ছেড়ে তারা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামেন। কয়েকজন মোটরসাইকেল চালকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এটা কোনো অপরাধ নয়। স্বাভাবিক বিষয় হিসেবেই তারা দেখেন ফুটপাত দিয়ে তাদের যাতায়াত।



ফুটপাতে ওভারব্রিজের বিম

যানবাহনের ভিড় এড়িয়ে পথচারীদের রাস্তা পারাপারের জন্য ফুট ওভারব্রিজ বানানো হয়েছে। কিন্তু এই ওভারব্রিজগুলোও পথচারীদের চলার পথে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। কারণ, রাজধানীর বেশিরভাগ ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ি এসে মিলেছে রাস্তার পাশের ফুটপাতে। ফলে, ফুট ওভারব্রিজের নিচের ফুটপাতগুলো পথচারীরা ব্যবহার করতে পারছে না। ঢাকা সিটি করপোরেশনের একটি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে মোট ৪৯টি ফুটওভারব্রিজ রয়েছে। ফুট ওভারব্রিজগুলোর বেশিরভাগের সিঁড়ি তৈরি করা হয়েছে রাস্তার পাশের ফুটপাতে। ফলে ফুটপাতে হাঁটার জায়গা কমে গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, অনেক ফুটপাতে ফুটওভারব্রিজের সিঁড়িগুলোকে ঘিরে হকাররা ফুটপাতের বাকি অংশটুকু দখল করেছে। আবার কোনো কোনো ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ির নিচে ভ্রাম্যমান মানুষ মলমূত্র ত্যাগ করায় পুরো ফুটপাতই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। নিউমার্কেটের দুই নম্বর গেটের ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ি ফুটপাতের বেশিরভাগ অংশ দখল করেছে। এ সুযোগে বাকিটুকু দখল করে নিয়েছে হকাররা। কল্যাণপুর ফুট ওভারব্রিজের দুই পাশের সিঁড়িও ফুটপাতে নামানো হয়েছে। উত্তর পাশের সিঁড়ির নিচে হকাররা বসেছে। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর ফুট ওভারব্রিজের ফায়ার সার্ভিস প্রান্তের সিঁড়ি পুরো ফুটপাত দখল করে ফেলেছে। মিরপুর ১ নম্বর মোড়ের ওভারব্রিজের মুক্তি পস্নাজার পাশের ফুটপাতের বেশিরভাগ অংশজুড়ে আছে সিঁড়ি। ফুটপাতের বাকিটুকু দখল করেছে ফল ব্যবসায়ীরা। বাংলামোটর ওভারব্রিজের পূর্ব পাশের সিঁড়ির সংযোগ দেয়া হয়েছে নিউ ইস্কাটন রোডের পূর্ব পাশের ফুটপাতে। ফলে, ফুটপাতের পুরোটাই দখল হয়ে গেছে। পথচারীরা তাই ফুটপাতে না চলে রাস্তা দিয়ে হাঁটে। এই ফুটওভারব্রিজের পশ্চিম পাশের সিঁড়িও ফুটপাতে থাকায় সেখানেও পথচারীরা হাঁটতে পারে না। কারওয়ান বাজারের পশ্চিম তেজতুরী বাজার ফুটওভারব্রিজের সিঁড়িও তৈরি করা হয়েছে দুই পাশের ফুটপাতে। প্রশস্ত সিঁড়িগুলো পুরো ফুটপাতই দখল করে ফেলেছে। ফলে সিঁড়ির নিচের অংশের ফুটপাত দিয়ে লোকজন হাঁটতে পারে না। সায়েন্স ল্যাবরেটরি ফুটওভারব্রিজের পূর্ব প্রান্তের ফুটপাতে হাঁটার একটু জায়গাও বাকি নেই। ফুটপাতে ফুট ওভারব্রিজ তৈরির বিষয়ে নগরবিদদের ভাষ্য, জনবহুল ক্রসিংগুলোয় পথচারীদের রাস্তা পারাপারের জন্য ফুট ওভারব্রিজ দরকার। তবে তা কখনোই ফুটপাতে করা উচিত নয়। পৃথিবীর কোথাও এরকম ফুটপাতের ওপর ওভারব্রিজ বানানোর নজির নেই। এক্ষেত্রে ফুটপাতের পাশের জায়গা অধিগ্রহণ করে সেখানে ফুট ওভারব্রিজ বানানো যেতে পারে। আর জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দিয়ে সরকার যে কারো জমি অধিগ্রহণ করতে পারে। ডিসিসি'র সংশিস্নষ্ট কর্মকর্তা জানান, ফুটপাতে হাঁটার জায়গা নিশ্চিত করা পথচারীদের অধিকার। কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে তা পালন করার উপায় নেই। মূলত দুই পাশের জায়গার অভাবেই ফুটপাতে ওভারব্রিজের সিঁড়ি নামানো হচ্ছে।



ফুটপাতে খাবারের দোকান

নগরীর বিভিন্ন স্থানেই ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে খাবারের দোকান। এগুলোর কোনোটা ভ্রাম্যমান, আবার কোনোটা স্থায়ী। রাজধানীর প্রেসক্লাব, পল্টন, কারওয়ান বাজার, গুলিস্তান, মিরপুর, মগবাজার, মালিবাগসহ সবখানেই এরকম দোকানপাট দেখা যায়। কোথাও চায়ের দোকান, কোথাও ফলের দোকান রয়েছে। আবার কোথাও বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন হকাররা। এসব দোকান ও হকারদের জন্য পথচারীরা ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে পারে না।



ফুটপাতে থাকে মালপত্র

রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকাতেই ফুটপাত সংলগ্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মালপত্র তারা ফুটপাতেই রাখেন। এর মধ্যে কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মিরপুর, বাড্ডা, গুলিস্তান, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা, খিলগাঁও, গোড়ান, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া, হাজিপাড়া, মোহাম্মপুর, শ্যামলী, হাজারীবাগ এলাকায় ফুটপাতের ওপর দোকানের মালপত্র রাখতে বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া অন্যান্য এলাকাতেও রয়েছে এই সমস্যা। এ বিষয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, দোকানের সামনে খালি জায়গা নেই। তাই তারা মাঝেমধ্যে ফুটপাতের ওপর কিছু মালপত্র রাখেন। তাদের কাছে এটা দোষের কিছু নয়। তাদের মালপত্র রাখার কারণে পথচারীদের হাঁটতে অসুবিধা হয়-তা জেনেও তারা সেই কাজটি করে চলেছেন দিনের পর দিন।



ফুটপাতে টিকিট কাউন্টার

নগরীর অনেক স্থানেই ফুটপাত দখল করে টিকিট বাসের কাউন্টার গড়ে উঠেছে। শুধু ফুটপাত নয় অনেক স্থানে রাস্তা দখল করে রীতিমত চলে তাদের সার্ভিস ব্যবসা। রাজধানীর প্রেসক্লাব, পুরানা পল্টন, মতিঝিল, কাকরাইল, মালিবাগ, মগবাজার, বাংলা মোটর, শাহবাগ, ফার্মগেট, শ্যামলী, মিরপুর, গাবতলী, সায়েদাবাগ, বনানীসহ আরো অনেক এলাকাতেই রয়েছে টিকিট বাস সার্ভিসের কাউন্টার। এ সব কাউন্টারের জন্য পথচারীরা ফুটপাত দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটাচলা করতে পারে না। কয়েকটি বাস সার্ভিসের টিকিট কাউন্টার ম্যানেজারের সাথে কথা বললে তারা জানান, নাগরিকদের সুবিধার জন্যই তাদের এই সার্ভিস। কাউন্টার করার জায়গা না থাকলে কোথাও যাবে তারা।

Land Consultant

জেনে নিন : কমিউনিটি সেন্টার

জেনে নিন : কমিউনিটি সেন্টার

বিয়েসহ অনুষ্ঠান পরিকল্পনার প্রধান অংশ হলো কমিউনিটি সেন্টার নির্বাচন করা। কমিউনিটি সেন্টার নির্বাচন করতে প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে সুযোগ-সুবিধার কথাটা। বাসা থেকে কাছাকাছি স্থানে কমিউনিটি সেন্টার নির্বাচন করাই বুদ্ধিমানের কাজ। আর খরচের ব্যাপার তো থাকছেই। কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করার সময় ভালোভাবে খোঁজখবর নিতে হবে। সাধারণত কমিউনিটি সেন্টারগুলো হল ভাড়ার সঙ্গে ডেকোরেশন, লাইটিং, বেয়ারা ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। বাবুর্চি আর আপ্যায়নের বিষয়টি ইচ্ছে করলে নিজেরা করতে পারেন আবার কমিউনিটি সেন্টারের ওপরও দায়িত্ব দিতে পারেন। আর একটি বিষয়, আগত অতিথির সংখ্যার ওপরও সেন্টারের ভাড়া নির্ভর করবে। তাছাড়া অতিথি যত বেশি হবে, আপনাকে তত বেশি ভ্যাট দিতে হবে। কেননা, প্রতিটি অতিথির খাবারের খরচের ওপর আপনাকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। সাধারণত কমিউনিটি সেন্টারগুলো দুই শিফটে ভাড়া দিয়ে থাকে; দিনে এবং রাতে। আপনার প্রয়োজনমতো কতর্ৃপক্ষকে জানাতে হবে। প্রাথমিক খোঁজখবর আপনি ফোনের মাধ্যমেই নিতে পারবেন। তবে বুকিং দেওয়ার সময় আপনাকে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে কিছু অগ্রিম টাকাও আপনাকে দিতে হবে। আপনার চাহিদামতো কমিউনিটি সেন্টার কতর্ৃপক্ষ সব সুযোগ-সুবিধা দিতে প্রস্তুত। এমনই কিছু কমিউনিটি সেন্টারের ঠিকানা দেওয়া হলো_

প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ৫২/১, রোড ৩/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা।

চৌধুরী কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ৭/১৩, রোড ৫/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা।

সুগন্ধা কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ৭/১৩, রোড ৫/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা।

হোয়াইট প্যালেস কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ১৩, রোড ১০, ধানমন্ডি।

উলস্নাস কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ২২, রোড ১০/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা।

ট্রাস্ট মিলনায়তন

৫৪৫, পুরাতন বিমানবন্দর সড়ক, ঢাকা সেনানিবাস, ঢাকা।

সিটি গ্রান্ড হল

বসুন্ধরা সিটি, পান্থপথ, ঢাকা।

বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার

বস্নক- জি, উম্মে কুলসুম রোড, বসুন্ধরা আ/এ, বারিধারা, ঢাকা।

হোয়াইট হাউস

১৫৫, শান্তিনগর, ঢাকা

সেনাকুঞ্জ

ঢাকা সেনানিবাস, ঢাকা।

বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র

শের-ই-বাংলানগর, ঢাকা।

দরবার হল

বিডিআর, জিগাতলা, ধানমন্ডি।

আনন্দ উলস্নাস কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ৭, রোড ১৩, ধানমন্ডি, ঢাকা।

সোহাগ কমিউনিটি সেন্টার

৯১, নিউ ইস্কাটন রোড, ঢাকা।

লেডিস ক্লাব

২৬, ইস্কাটন রোড, ঢাকা।

অ্যাবাকাশ কনভেনশন সেন্টার

৭১-৭২ ইস্কাটন গার্ডেন, ঢাকা।

অঙ্গন কমিউনিটি সেন্টার

৮/৯ আওরঙ্গজেব রোড,

মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

পার্টি প্যালেস কমিউনিটি সেন্টার

২৩/৫ শ্যামলী, মিরপুর রোড, ঢাকা।

নিউ প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টার

২/৯, স্যার সৈয়দ রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

লিলি গার্ডেন কমিউনিটি সেন্টার

২৯/৪ কে এম দাস লেন

হাটখোলা রোড, টিকাটুলি, ঢাকা।

পার্টি সেন্টার

বাড়ি ১, রোড ১৩, ধানমন্ডি, ঢাকা।

প্রবাল কমিউনিটি সেন্টার

৬১২ কাজীপাড়া, বেগম রোকেয়া সরণি, মিরপুর, ঢাকা।

আপ্যায়ন কমিউনিটি সেন্টার

সেকশন ৬/সি, রোড ১২/২, মিরপুর, ঢাকা।

রূপসা কমিউনিটি সেন্টার

২২৮ গ্রিন রোড, ঢাকা।

সাগর কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ৭৭, রোড ৮/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা।

শাপলা কমিউনিটি সেন্টার

বাড়ি ৪০, রোড ৯/এ, ধানমন্ডি।

সাদি মহল পার্টি সেন্টার

বাড়ি ২, রোড ১১, প্রগতি সরণি, মেরুল বাড্ডা, ঢাকা।

অফিসার্স ক্লাব

১৬ বেইলি রোড, ঢাকা।

আনন্দ ভবন কমিউনিটি সেন্টার

৫৫, পুরানা পল্টন, কাকরাইল, ঢাকা।

মালঞ্চ কমিউনিটি সেন্টার

৪৩/৩, উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।

Tuesday, October 19, 2010

বকেয়া বিলের বোঝা কমাতে আসছে বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার

বকেয়া বিলের বোঝা কমাতে আসছে বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটার

বকেয়া বিদ্যুত্ বিলের বোঝা কমাতে খুব শিগগিরই দেশের বড় শহরগুলোতে প্রি-পেইড মিটার চালু করা হচ্ছে। যথাসময়ে বিল পরিশোধ না করায় প্রতি বছর বকেয়া থেকে যাচ্ছে হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডের বকেয়া বিদ্যুত্ বিলের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল অবলুপ্ত ডেসার কাছে বকেয়া রয়েছে ২ হাজার ৮০৪ কোটি টাকা
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঠিক সময়ে বিল পরিশোধ না করায় প্রায় প্রতি বছরই একটা বড় অঙ্কের টাকা বকেয়া পড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে একশ্রেণীর গ্রাহকের মধ্যে যথাসময়ে বিদ্যুত্ বিল না দেয়ার প্রবণতা রয়েছে। এসব কারণে দিন দিন বকেয়ার বোঝা বেড়েই চলেছে। ফলে বকেয়া বিলের বোঝা কমাতে সরকার প্রথমে বড় শহরগুলোতে প্রি-পেইড মিটার চালু করতে যাচ্ছে, যা পরবর্তী সময়ে দেশের সব স্থানে চালু করা হবে। সূত্র জানায়,পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন ৭০টি পল্লী বিদ্যুত্ সমিতির হিসাবে দেখা যায়, চলতি বছরের মে ২০১০ পর্যন্ত বকেয়া বিলের পরিমাণ ছিল ৫৬০ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩২টি মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি সংস্থার কাছে বকেয়া ২১ কোটি টাকা। ১৯টি মন্ত্রণালয়ের অধীন আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কাছে ৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এছাড়া বেসরকারি গ্রাহকের কাছে বকেয়া ৫৩০ কোটি ৮ লাখ টাকা। একই সময়ে ডিপিডিসির বকেয়া বিদ্যুত্ বিল ৫৪০ কোটি ৮ লাখ টাকা, ডেসকো এলাকায় ৩৯৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি খাতে বকেয়া রয়েছে ১৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা সরকারি খাতে ২৭ কোটি টাকা এবং বেসরকারি খাতে ১১৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। সূত্র জানায়, সরকারের নেয়া উদ্যোগ অনুযায়ী বিদ্যুত্ বিল আদায়ে প্রি-প্রেইড মিটার চালু করা হলে বকেয়ার ঝামেলা থেকে রেহায় পাওয়া যাবে। এমনকি প্রি-পেইড মিটারের বদৌলতে বিদ্যুত্ বিভাগ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা অগ্রিম পাবে।

Sunday, October 17, 2010

নাগরিক ওয়েবসাইট কতটা নাগরিকবান্ধব

নাগরিক ওয়েবসাইট কতটা নাগরিকবান্ধব

‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে মহাজোট সরকার। কিন্তু নগরের সেবা সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইটের হাল কি আধুনিক হয়েছে? ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি), রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)—নগরের এই সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইটে নাগরিক জীবনের নানা জিজ্ঞাসার সমাধান সহজেই মেলার কথা। আবার নগরবাসীর সহায়তায় সেবা সংস্থার সাজানোগোছানো ওয়েবসাইটগুলোর সবগুলোতেই রয়েছে ‘ফিডব্যাক অপশন’। নগরবাসী হয়তো বিস্তারিত নাম-ঠিকানা দিয়ে ঘরগুলো পূরণ করেন। কিন্তু এসব কি কর্তৃপক্ষের হাতে যায়? অনলাইনে পাঠানো নগরবাসীর সমস্যাগুলোর সমাধান কি বাস্তবে হয়? সেবা সংস্থাগুলোর ওয়েবসাইট নাগরিকবান্ধব কি না, সেসব খোঁজ এনেছেন আলী আসিফ ও আজহার হোসেন।

নাগরিক ওয়েবসাইট কতটা নাগরিকবান্ধব

ডিসিসি
www.dhakacity.org
জন্মসনদ থেকে শুরু করে শেষ ঠিকানার ব্যবস্থা—এই নগরে নাগরিক সেবা দেওয়ার মূল ভূমিকাই পালন করে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি)। নগরবাসীর প্রয়োজনের দিকটা বুঝেই হয়তো পরিমার্জিত ও পরিপাটি আদলে ডিসিসি তাদের ওয়েবসাইটটি সাজিয়েছে। কিন্তু শুরুতেই হোঁচট খেতে হয় বাংলায় কোনো সংস্করণ না থাকায়। পুরো ওয়েবসাইটে বাংলার চিহ্নমাত্র নেই। সাধারণ নাগরিকেরা এখান থেকে তথ্য পাবেন কীভাবে?
প্রতিটি এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নাম-ঠিকানা, মোবাইল ফোন নম্বর—সব কিছুই জানা যাবে এখানে একটা ঢুঁ মারলে। কিন্তু এই জানাটুকুই সার। ফোনে এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে ওয়েবসাইটের নম্বর থেকে খোঁজ করলে দেখবেন বেশির ভাগ কমিশনারের নম্বর বন্ধ অথবা বদলে গেছে।
এ ছাড়া নগরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের রসদ কিংবা চলমান বিভিন্ন কর্মসূচির তালিকাটাও দেখা যাচ্ছে ওয়েবসাইটে। কিন্তু সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
ব্যবসা করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স কিংবা অযান্ত্রিক যান নিবন্ধনের নিয়মটাও খুব সহজেই পড়ে নেওয়া যায় ওয়েবসাইটটি থেকে। শুধু তাই নয়, সিটি করপোরেশনের ১৫টি বিভাগের কাজের ধরন, কোন কাজের জন্য কোন বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে—সবকিছুরই বিশদ বিবরণ রয়েছে এই ওয়েবসাইটটিতে।
ডিসিসির ওয়েবসাইটে নাগরিক সুযোগসুবিধার সবটুকুই থাকার কথা। কর্তৃপক্ষ সেভাবেই সাজিয়েছে সাইটটিকে। স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে কমিউনিটি সেন্টার, গণগ্রন্থাগার কিংবা গণশৌচাগারের তালিকাটাও দর্শনার্থীকে জানাতে ভোলেনি ডিসিসি। কিন্তু এই জানানোতেও ডিসিসি দেখিয়েছে বেখেয়ালি মনোভাব।
 বাস সার্ভিস মেনুতে প্রসিকিউর অব ইনকামের বর্ণনায় ইংরেজি হরফে বাংলা লেখা হয়েছে।
 ‘অ্যাবাউট আস’ শিরোনামের মেনুতে ওয়ার্ড কমিশনারদের তালিকা ও যোগাযোগের নম্বর থাকলেও সেখানকার ওয়ার্ড প্রোফাইল অংশে ওয়ার্ডের কোনো প্রোফাইল নেই।
 আরবান হেলথ কেয়ার প্রজেক্টের সেবাকেন্দ্রগুলো নগরবাসীকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। অথচ প্রজেক্টের বর্ণনা থাকলেও আরবান হেলথ কেয়ার সেন্টারের ঠিকানা সাইটে উল্লেখ নেই।
 ডিসিসির ওয়েবসাইটের ফটো গ্যালারি খোলার পর সেবাগ্রহীতার নিজেকে বুঝে নিতে হবে, ছবিতে কী বোঝানো হচ্ছে। কারণ, কোনো ছবিরই ক্যাপশন নেই।
 ডিসিসির প্রোফাইল মেনুতে একনজরে উল্লেখ রয়েছে গণশৌচাগার ১৮টি। অথচ বাস্তবে রয়েছে ৪৮টি। যা ওয়েবসাইটের এস্টেট বিভাগে উল্লেখ রয়েছে। আবার প্রোফাইলে কমিউনিটি সেন্টারের সংখ্যা উল্লেখ রয়েছে ২৭টি। কিন্তু সমাজকল্যাণ বিভাগের কমিউনিটি সেন্টারের তালিকায় উল্লেখ রয়েছে ৪৭টি সেন্টারের।
 সার্চ বক্সটি অকেজো।
 নগর মাতৃসদনের সংখ্যা দুটি। অথচ ঠিকানা ও বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে একটির। অন্যটি সম্পর্কে কোনো তথ্য সাইটটিতে নেই।
 মূল মেনু থেকে প্রজেক্ট বাটন চাপলে ডিসিসির কোনো প্রজেক্টের খোঁজ পাওয়া যায় না। পুরোটাই ফাঁকা দেখায়।
 ডাউনলোড মেনুতে বিল্ডিং পারমিশন ফরমের উল্লেখ থাকলেও এই ফরমটি ডাউনলোড করা যায় না।
 ফ্রিকোয়েন্ট আস্ক কোশ্চেনের লিস্টে শুধু প্রশ্নগুলোই দেওয়া আছে। কোনো উত্তর নেই!
 ওয়েবসাইটির হোম পেইজের নিচে নিউজ বাটন দেখলে মনে হবে এতে বুঝি ডিসিসির আপডেট কোনো তথ্য রয়েছে। অথচ এখানে ক্লিক করলে কিছুই মেলে না।
 ডিসিসির আর্কাইভ অপশনে গেলে কিছু পাওয়া যায় না।

ডিএমপি
www.dmp.gov.bd
নগরবাসীকে নিশ্চিন্তে রাখার দায়িত্ব যাদের ওপর সেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) দুষ্টের দমন বা শিষ্টের লালনে কতটুকু সফল বা ব্যর্থ সে কাহিনি নগরবাসীর অজানা নয়। তবে ডিএমপির ওয়েবসাইটটিতে একবার চোখ বুলালে আপনার মনে হতে পারে, সারা দিন অপরাধীদের ধাওয়া করার ফলেই তাদের ওয়েবসাইটের বোধ হয় এই হাল। মহানগর পুুলিশদের এই ওয়েবসাইটে গিয়ে ডিএমপির ভিশন স্টেটমেন্ট, ডিএমপি অর্গানোগ্রাম, হাই অফিশিয়ালস, সাবেক কমিশনার এবং ডিএমপির অর্ডিন্যান্সের অপশনে ক্লিক করে কোনো কিছুর দেখাই পাওয়া যায় না। তবে নগরবাসীর সুবিধার্থে নগরের ৩৯টি থানার ঠিকানা, ফোন নম্বর কিন্তু রয়েছে ওয়েবসাইটটিতে। এ ছাড়া ডিএমপির অপরাধ দমন, ট্রাফিক, গোয়েন্দা, ক্রাইম ও অপারেশন বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ পাওয়া যাবে ওয়েবসাইটটিতে একবার ভালো করে চোখ বুলালে।
 ‘ফাইন্ড ইয়োর লোকাল পুলিশ’ অপশনে গিয়ে কেবল ১৮টি থানার এলাকাই খুঁজে পাওয়া যায়।
 ডিএমপির ওয়েবেসাইটে বর্ণিত কৃতিত্বের তালিকায় ২০০৫, ২০০৬, ২০০৭, ২০০৮, ২০১০ এই পাঁচ বছরের কৃতিত্বের কথা থাকলেও ২০০৯ সালেরটা কোনো এক অজ্ঞাত কারণে বোধ হয় সেখানে ঠাঁই পায়নি।
 ডিএমপির অপরাধ পরিসংখ্যানে সর্বশেষ ২০১০ সালের মে মাসের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মে মাসের পর চার মাস পার হলেও ডিএমপির ওয়েবসাইটে তার কোনো অগ্রগতি নেই।
 ডিএমপি ওয়েববাইটে সাম্প্রতিক অপরাধপ্রবণতার যে চার্ট তারা দেখিয়েছে, সেটাতেও সাম্প্রতিক সময় বলতে হয়তো চার মাস আগের মে মাসকেই বোঝানো হয়েছে!
 ওয়েবসাইটটির হেল্প ব্যানারে মিসিং পারসন হিসেবে ডিএমপির নথিভুক্ত হারিয়ে যাওয়া মানুষদের তালিকা দেওয়া রয়েছে। সেখানে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর কারোরই ছবি নেই। হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তি শনাক্তকরণে সবচেয়ে বড় মাধ্যম হলো ছবি। কিন্তু সাইটটিতে সে ব্যবস্থা নেই।
 ডিএমপির ওয়েবসাইটের হোম পেইজের নিচে নোটিশ বোর্ড রয়েছে। এতে নোটিশের কোনো খোঁজ নেই। একটি ড্রপ-ডাউন বক্স দিয়ে অ্যাডভার্টাইজমেন্ট, টেন্ডার ইত্যাদি ক্যাটাগরি দেওয়া রয়েছে।

ডিপিডিসি ও ডেসকো
www.dpdc.org.bd
www.desco.org.bd
লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ নগরবাসীমাত্রই জানে বিদ্যুৎ না থাকার জ্বালা। চাহিদা ও জোগানের সামঞ্জস্য না থাকায় দিনে-কিংবা রাতে প্রায় সময়ই বিদ্যুৎ পায় না নগরবাসী। লোডশেডিংয়ের এই ফাঁকতালে একবার ঢুঁ মেরে দেখতে পারেন নগরের দুই বিদ্যুৎ সরবরাহকারীর ওয়েবসাইটে।
ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) এবং ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) নগরের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের বিলি-বণ্টন করে। সংস্থা দুটির ওয়েবসাইট থেকে লোডশেডিংয়ের সময়সূচি জেনে নেওয়া যায় আগেভাগেই। তবে ডিপিডিসি লোডশেডিংয়ের তালিকা করেছে সময়ের ওপর ভিত্তি করে এলাকার নাম ধরে ধরে। সকাল আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত ঢাকার কোন কোন এলাকায় লোডশেডিং থাকবে তার একটা তালিকা পাওয়া যাবে ডিপিডিসির ওয়েবসাইটে। একইভাবে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সময়ের ওপর ভিত্তি করে স্থানের তালিকা দেখানো হয়েছে এখানে। সেটি জানতে হলে নিজের কম্পিউটারে ডাউনলোড করে তবেই আপনি তথ্যগুলো পাবেন। অপরদিকে ডেসকোর ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট এলাকার নাম লিখে সার্চ দিলে ওই এলাকার দিনের লোডশেডিংয়ের সময়সূচি তো বটেই, সপ্তাহেরটাও মেলে। কিন্তু এই তালিকার সঙ্গে এলাকার লোডশেডিংয়ের তথ্য বেশির ভাগ সময়ই মেলে না। নগরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা এই দুটি সংস্থার মধ্যে ডেসকোর ঝকঝকে ওয়েবসাইটটি তথ্যবহুল। ওয়েবসাইটটির সার্চ বক্স বেশ কার্যকর।
 ডিপিডিসির ওয়েবসাইটে সিএফএল বিতরণের একটি হ্যান্ডবিল জুড়ে দেওয়া হয়েছে। উৎসাহী দর্শনার্থী সেটাকে ডাউনলোড করতে পারেন। কিন্তু ঘোলাটে এই হ্যান্ডবিলের একটি অক্ষরও বোঝা সম্ভব নয়।
 ফরম মেনুতে ডিপিডিসির কর্মচারীদের নানা ফরম দেওয়া আছে। নগরবাসীর সেবা ও সহায়তা সম্পর্কিত কোনো ফরম এখানে নেই।
 ডিপিডিসির সার্চ বক্সটি কাজ করে না।
 ডেসকোর সাইটে থাকা নিউজলেটারটি দুই বছর আগের।
 ওয়েবসাইটে দেওয়া ডেসকোর সিটিজেন চার্টারে প্রয়োজনীয় তথ্য নেই। ফলে নগরবাসী কোন কাজে কোন বিভাগে সহায়তার জন্য যাবে, সেটা বোঝা মুশকিল। ডিপিডিসির অসম্পূর্ণ চার্টারের শেষে চারটি ফোন নম্বর দিয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
 ডেসকোর অ্যাবাউট আস মেনুতে ‘প্রেস রিলিজ’ শিরোনামের লিংকে ঢুকলে একটি ডাউনলোড অপশন আসে। নগরবাসী ভেবে বসতে পারেন, এখান থেকে ডেসকোর সাম্প্রতিক প্রেস রিলিজ পাবেন। কিন্তু সেটি ডাউনলোড করলে যা মেলে, তাতে নগরবাসীর কোনো উপকারেই আসবে না। প্রেস রিলিজের বদলে বর্তমান চেয়ারম্যানের জীবনবৃত্তান্তটি মেলে লিংকটিতে।
 ডিপিডিসির ওয়েবসাইটে বিদ্যুতের ব্যবহার সম্পর্কিত নাগরিক নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ নেই। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য একটি হ্যান্ডবিলের পিডিএফ ফাইল পাওয়া যায়। এতে ডিপিডিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা রয়েছে।

রাজউক
www.rajukdhaka.gov.bd
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের ওয়েবসাইটে এক চক্কর দিলে মন্দ হয় না। তথ্যসমৃদ্ধ এই ওয়েবসাইটে একবার চোখ বুলালেই জানতে পারবেন ঢাকার বিভিন্ন আবাসিক প্রকল্প সম্পর্কে। এ ছাড়া নগর বিষয়ে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কেও ছোটখাটো ধারণা পাওয়া যায় রাজউকের ওয়েবসাইটে। ইমারত-নির্মাণ বিধিমালা থেকে শুরু করে পুকুর, নদী ও খোলা জায়গা সংরক্ষণের নীতিমালা সম্পর্কেও বিশদ বিবরণ রয়েছে ওয়েবসাইটটিতে। রাজউক গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কেও জানানো হয়েছে সাইটটিতে। নিজের জমিতে ভবন নির্মাণের আবেদন ফরমও তুলতে পারবেন রাজউকের ওয়েবসাইট থেকে। ওয়েবসাইটের প্লানিং অপশনে ক্লিক করে ল্যান্ড ইউজ ক্লিয়ারেন্স প্রসেসে মাউস রাখলেই পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত ফরম। নগরে বাস করে যদি নগর পরিকল্পনার কয়েকটি অপশন সম্পর্কে জানতে চান, তাহলেও একবার ক্লিক করতে পারেন রাজউকের সাইটে। বিভিন্ন সময়ে করা নগরের মহাপরিকল্পনাগুলো তথ্য, ছবি আর পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টটি পাবেন রাজউকের সাইটটিতে।
ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি ব্যবহার সম্পর্কেও সম্যক ধারণা পাবেন এখান থেকে। তাই আপনি আপনার জমিতে ভবন নির্মাণের আগে দক্ষ লোকদের কাছে ধরনা দেওয়ার আগে একবার রাজউকের ওয়েবসাইটে পলক ফেলতে পারেন।
 রাজউকের নোটিশ মেনু থেকে নোটিশ পড়তে হলে অপেক্ষায় থাকতে হয়। এখানকার সব কটি নোটিশ পিডিএফ ফরমেট আকারে দেওয়া হয়। ফলে যে নোটিশটি দর্শনার্থীর প্রয়োজন সেটি দেখতে বেগ পেতে হয়।
 হোম পেজে শুধু মেনুর বিষয়বস্তুগুলো বাংলায় লেখা হয়েছে। পুরো সাইটটিই ইংরেজিতে লেখা।
 ফ্রিকোয়েন্টলি আস্ক কোশ্চেনে বিভিন্ন বিভাগের প্রশ্ন থাকলেও উত্তর রয়েছে শুধু একটি বিভাগের।
 রাজউক তাদের ওয়েবসাইটে প্রজেক্ট মেনুতে তিন ধরনের প্রকল্পের বর্ণনা দিয়েছে; সমাপ্ত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রকল্প। শিরোনাম বাংলায় লেখা হলে ভেতরের সব বর্ণনা ইংরেজিতে

ঢাকা ওয়াসা
www.dwasa.org.bd
ঢাকা ওয়াসার ওয়েবসাইটে নতুন পানির লাইন বা পয়োবর্জ্যের লাইন নেওয়ার নিয়মাবলি এবং আবেদন ফরম পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আরও রয়েছে সিটিজেন চার্টারের সেবা। কিন্তু ফন্টের সমস্যার কারণে সেটার পাঠ উদ্ধার করা ঢাকাবাসীর পক্ষে সম্ভব নয়। ওয়াসার ওয়েবসাইটটি যে কেবল গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ তা নয়, বরং সংস্থাটির কর্তাদের প্রতিও বেশ উদাসীন। স্বয়ং নিজেদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ইঞ্জিনিয়ার তসকিম এ খানের পরিচিতি প্রদানের বেলায় ওয়াসার এই সাইটটি কেবল এমডির একটি ছবি আর তিনি কত দিন ওয়াসাতে কর্মরত এই তথ্যটুকু দিয়েই খালাস। আর ছবির নিচে অসম্পূর্ণ ব্যক্তিগত তথ্য আর শিক্ষাজীবনের তালিকাটা ফাঁকা দেখে যে কারও মনে খটকা লাগাটাই স্বাভাবিক।
 ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী ওয়াসার অর্গানোগ্রামে এমডির অধীনে চারজন ডিএমডি রয়েছেন। তবুও ওয়েবসাইটে আরপিডি এবং ওঅ্যান্ডএম এই দুই বিভাগের দায়িত্বেই দেখা যাচ্ছে প্রকৌশলী মো. লিয়াকত আলীকে। তবে আশার বিষয় এই যে বাকি তিন কর্তার নাম-পরিচয় অসম্পূর্ণ থাকলেও কেবল লিয়াকত আলীর প্রোফাইলটিই প্রয়োজনীয় তথ্যে সমৃদ্ধ।
 ওয়াসার ওয়েবসাইটের মান্থলি এমআইএস নামের অপশনটিতে এখনো শোভা পাচ্ছে গত বছরের অক্টোবরের সর্বশেষ সংবাদগুলো।
 নিউজলেটার আর অ্যানুয়াল রিপোর্টে ক্লিক করলে একই জিনিস আসে।
 কমপ্লেন বিভাগের হেল্প বক্সটি কাজ করে না।
 ঢাকা ওয়াসার ওয়েবসাইটে বাংলা ভাষা ব্যবহার করা হয়নি।
 এখানে নাগরিকবান্ধব মেনুর বদলে গুচ্ছ আকারে মেনু সাজানো হয়েছে। ফলে মেনুর পরে সাব-মেনুতে যেতে হলে জটিলতায় পড়তে হয়।
 নগরবাসীকে নিজেদের প্রতি মাসের পানির বিলের জন্য ওয়েবসাইটটিতে লগ-ইন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে লগ-ইন করা, পাসওয়ার্ড দেওয়া প্রভৃতি জটিল কাজ করতে হয়। এট আরও সহজ করা দরকার।